এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা করার একটি অস্বস্তিকর ভিডিও টুইটারে ভাইরাল হয়েছে এই ভুয়ো দাবি সহ যে, এটি গুজরাটের বোটাড জেলায় ১৯ জুন এক দলিত সরপঞ্চকে কুপিয়ে মারার ঘটনা।
এই লেখার সময় পর্যন্ত অন্তত ৩ হাজার জন ভিডিওটি দেখে ফেলেছে, যাতে একটি নৃশংস খুনের দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে। বুম এই প্রতিবেদনে ভিডিওটি অন্তর্ভুক্ত করেনি, দৃশ্যটি এতই অস্বস্তিকর।
ভিডিও সহ টুইটটির ক্যাপশন লেখা হয়েছে, “গুজরাটে জাতিবাদী অত্যাচার দিন-দিন বেড়েই চলেছে। নরেন্দ্র মোদীর বিজেপির জমানায় গতকালই বোটাড জেলায় এক দলিত সরপঞ্চকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। দ্বিতীয় ঘটনাটি রাজকোটের। কে জানে, কাল আমাদের মতো যারা দলিত নিগ্রহের বিরুদ্ধে কথা বলি, তাদের কপালে কী রয়েছে!”
টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম দেখেছে, একটি লোককে কুপিয়ে মারার ঘটনাটি সুরাটের, যা ঘটে ১৮ জুন এবং পুলিশের চর সন্দেহেই তাকে হত্যা করা হয়। আমরা ‘গুজরাট পুলিশ’, ‘নিহত ব্যক্তি’ এবং ‘ভাইরাল ভিডিও’, এই শব্দবন্ধগুলি সাজিয়ে অনলাইনে খোঁজ লাগালে দৈনিক ভাস্কর সংবাদপত্রের একটি প্রতিবেদনের (Insert Link: ) সন্ধান পাই, যেখানে ওই ভিডিওর একটি স্ক্রিনশট ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে নিহত ব্যক্তিটিকে ইমরান শাহ ওরফে ইমরান গোল্ডেন রজকশাহ (২৭) বলে শনাক্ত করা হয়েছে, ভাইরাল ভিডিওর দাবি মতো আদৌ কোনও দলিত সরপঞ্চ রূপে নয়। প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আততায়ী একটি কাঠের তক্তা জাতীয় কিছু দিয়ে ইমরানকে পিটিয়ে খুন করে।
সুরাট পুলিশ এই হত্যার অভিযোগে বাবু বাটকান্ডো ওরফে বাটকো এবং বিনোদ মোরে নামে পরিচিত দুজনকে গ্রেফতার করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা ঘটনাটি রেকর্ড করে এবং তারপর সেটি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।
যে থানার এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, সুরাটের সেই লিম্বায়ত থানার সঙ্গে বুম যোগাযোগ করে। থানার পুলিশ ইনস্পেক্টর এম ভি মাখভানা স্বীকার করেন, ভাইরাল ভিডিওর ঘটনাটি সুরাটেরই। বুমকে তিনি জানান, “ছবিতে সবুজ টি-শার্ট পরা যে লোকটিকে নিগ্রহ করতে দেখা যাচ্ছে, তার নাম বাবু বাটকান্ডো এবং নিগৃহীত ব্যক্তিটি ইমরান গোল্ডেন। তাকে খুন করা হয়, কারণ সে পুলিশকে খবরাখবর দিত। অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।”
গুজরাটে দলিত খুনের দুটি ঘটনা ভাইরাল হওয়া টুইটে জুড়ে দেওয়া হয়েছে
ভাইরাল হওয়া টুইটে গুজরাটে দলিত হত্যার আলাদা জায়াগার দুটি ঘটনার কথা বলা হয়েছে।
একটি বোটাড জেলায় দলিত সরপঞ্চ মঞ্জি সোলাংকির হত্যা। অন্য ঘটনাটি রাজকোটের এক দলিত যুবক খুনের। তার বাবার হত্যাকারীদের ধাওয়া করার সময় উচ্চ বর্ণের ৮ জন লোকের দ্বারা খুন হয় সে।