মুর্শিদাবাদ হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত উৎপল বেহেরার ভগ্নিপতির একটি ছবি মিথ্য দাবি সহ শেয়ার করে বলা হচ্ছে যে, ছবিটিতে উৎপল বেহেরা আরএসএসের সহকর্মীদের সঙ্গে একসঙ্গে বসে রয়েছেন।
ছবির একদম ডান দিকে অন্যান্যদের সঙ্গে বসে থাকা ব্যক্তিটিকে সোশাল মিডিয়ায় উৎপল বেহেরা বলে প্রচার করা হচ্ছে। ২০১৯ সালের ৮ অক্টোবর মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে সপরিবারে বন্ধুপ্রকাশ পালকে খুন করার দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে উৎপল বেহরাকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, পেশায় রাজমিস্ত্রি বেহেরা বন্ধুপ্রকাশ পাল, তার ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী এবং শিশুপুত্রকে কুপিয়ে খুন করে টাকাপয়সার লেনদেন নিয়ে বিরোধের জেরে। ১৫ অক্টোবর পুলিশ তাকে পাশের এলাকা সাগরদীঘি থেকে গ্রেফতার করে। বেহেরা নাকি বন্ধুপ্রকাশের কাছ থেকে দুটি বিমার পলিসি কিনেছিল, কিন্তু বন্ধুপ্রকাশ তাকে সেই পলিসি বাবদ দেওয়া টাকার রসিদ দিতে চায়নি। তা ছাড়া বেহেরাকে তিনি নাকি নানাভাবে অপমানও করেন। সেই থেকেই বেহেরা প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বন্ধুপ্রকাশকে খুনের ছক কষতে থাকে।
কিন্তু ভাইরাল হওয়া ছবিটি আদৌ উৎপল বেহেরার ছবি নয়। অথচ ছবিটি যে সব পোস্টে ভাইরাল হয়েছে, বাংলায় তার ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে, "আরএসএসের মিটিংয়ে জিয়াগঞ্জের মাস্টারের মূল খুনি উৎপল বেহেরা"
এই ফেসবুক পোস্টটি ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
বুম বহরমপুরের বিজেপি মহিলা মোর্চার সভানেত্রী এবং স্থানীয় বিজেপি নেত্রী অনামিকা ঘোষের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ছবির ব্যক্তিটি উৎপল বেহেরা নয়, তার ভগ্নিপতি পুলক সরকার।
তিনি আরও জানান, বেহেরা ছিল সিপিআইএম-এর পার্টি কর্মী, অতি সম্প্রতি সে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে।
অনামিকা বুমকে বলেন, "এটি পুলক সরকারের ছবি, যে জিয়াগঞ্জের বাঘডহর এলাকার একটি চায়ের দোকানে বসে আছে। পুলক সরকার আমাদের রাজনৈতিক মতদর্শকে সমর্থন করে, কিন্তু সে এখনও দলের অন্দরমহলে সক্রিয় হয়নি"
বুম মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারের সঙ্গেও কথা বলেছে, এবং তিনিও জানান, ভাইরাল হওয়া ছবিটি উৎপল বেহেরার নয়।
তবে ওই খুনের সূত্রে পুলক সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কিনা, সেটা স্পষ্ট নয়।
বন্ধুপ্রকাশকে নৃশংসভাবে সপরিবারে খুন করার বিষয়ে যে সব ভুয়ো তত্ত্ব আওড়ানো হচ্ছে, এটি তার অন্যতম। সোশাল মিডিয়ায় এই খুনের নৃশংস সব বিবরণ ছড়িয়েছে এবং খুনের কারণ হিসাবে রকমারি ব্যাখ্যাও শোনা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ছাত্রহত্যায় প্রধান অভিযুক্তের ছবিটি ভুল ভাবে মুর্শিদাবাদের খুনির ছবি বলে চালানো হয়েছে
আরও পড়ুন: জিয়াগঞ্জে নৃশংস খুনের ঘটনা: আরএসএস-বিজেপির নেতারা কোনও রাজনৈতিক যোগ দেখছেন না
আরও পড়ুন: যেভাবে সোশাল মিডিয়া ও গণমাধ্যম মুর্শিদাবাদের ঘটনাকে রাজনৈতিক রং দিয়েছে
মসজিদ নির্মাণের বিরোধিতা করায় বন্ধুপ্রকাশ খুন হলেন?
ইতিমধ্যে