ফেসবুক ও টুইটারে একটি কবিতা ভাইরাল হয়েছে, যেটিকে সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা ৮ সেপ্টেম্বর প্রয়াত রাম জেঠমালানির রচনা বলে দাবি করেছে।
কবিতাটি হায়দরাবাদ থেকে প্রকাশিত সংবাদ ওয়েবসাইট সিয়াসত ডেইলিতে প্রথম পোস্ট হয়েছিল ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে, যেটি লিখেছিলেন দিল্লির লেখিকা রশ্মি ত্রিবেদী। রশ্মি প্রায় একই সময়ে কবিতাটি ফেসবুকেও পোস্ট করেছিলেন এবং এটি তিনি তাঁর স্বরচিত কবিতা বলেই দাবি করেছিলেন।
কবিতার জন্য মরণোত্তর স্বীকৃতি? না, তা নয়
২০১৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর প্রখ্যাত আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ রাম জেঠমালানি তাঁর ৯৬ তম জন্মদিনের ৬ দিন আগে দিল্লিতে তাঁর বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণেই প্রয়াত হন।
তাঁর মৃত্যুর তিন দিন পরেই ফেসবুক ও টুইটারে এই কবিতাটি আত্মপ্রকাশ করে এই ক্যাপশন দিয়ে—"রাম জেঠমালানির একটি চমত্কার কবিতা, যিনি ৯৫ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন।"
ওই ক্যাপশন দিয়েই ফেসবুক ও টুইটারে খোঁজ চালিয়ে বুম দেখেছে, কবিতাটি ও তার রচনাকার সংক্রান্ত দাবিটি দুটি সোশাল মিডিয়া মঞ্চেই ভাইরাল হয়েছে।
তথ্য যাচাই
"কবিতাটি তাঁর ( রাম জেঠমালানির ) লেখা নয়। তাঁর লিখন শৈলী ও রকম নয়। দাবিটা পুরোপুরি ভুয়ো।"
— অ্যাডভোকেট মহেশ জেঠমালানি ( রাম জেঠমালানির পুত্র )
বুম মুম্বই হাইকোর্টের অ্যাডভোকেট মহেশ জেঠমালানির সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে তিনি কবিতাটিকে তাঁর বাবার লেখা নয় বলে উড়িয়ে দেন।
"কবিতায় যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, ছোটু নামের কোনও ছেলের সব্জি বিক্রেতা বাবাকে তিনি কখনও দেখেননি। তা ছাড়া, এটা তাঁর লেখা নয়, তাঁর লেখার স্টাইল এ রকম নয়। গোটা ব্যাপারটাই ভুয়ো।" মহেশ জেঠমালিনী বুমকে বলেন।
কবিতাটির প্রথম স্তবকটি সাজিয়ে বুম গুগল সার্চ করলে আমাদের ২০১৭ সালে সিয়াসত ডেইলিতে প্রকাশিত একটি আর্কাইভ হওয়া নিবন্ধে পাঠানো হয়, যাতে ওই কবিতাটি দিল্লির লেখিকা জনৈক রশ্মি ত্রিবেদীর রচনা বলে প্রকাশিত হয়েছিল।
২০১৭ সালের ২ ডিসেম্বর ত্রিবেদী তাঁর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও কবিতাটি শেয়ার করেন।
পোস্টটি নিয়ে যে সব মন্তব্য জমা হয়, তা থেকে স্পষ্ট যে ত্রিবেদী কবিতাটি রচনার কৃতিত্ব দাবি করছেন এবং অনেকে এটিকে বিভিন্ন উপলক্ষে নিজেদের বলে চালাবার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেছেন।
অতঃপর বুম রশ্মি ত্রিবেদীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান যে, তিনিই কবিতাটির রচয়িতা।
"হ্যাঁ, কবিতাটা আমারই লেখা। আর এমন ব্যাপার যে এই প্রথম ঘটছে, এমনও নয়। আমার আরও অনেক কবিতাই হোয়াটসঅ্যাপে ছড়ায় অন্য লোকের কবিতা বলে কিংবা কোনও রচনাকারের নাম ছাড়া। প্রথমদিকে এ জন্য খারাপ লাগতো, পরে মনে হলো, কবিতাগুলো নিশ্চয় লোকের ভালো লাগছে, সে জন্যই তারা এগুলো নকল করছে। এই ভেবেই এখন সান্ত্বনা পাই।"