Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available

Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available
ফ্যাক্ট চেক

না, নেতাজির গাওয়া ‘জাতীয় সঙ্গীত’কে রবীন্দ্রনাথ অদলবদল করেননি

একটি ভাইরাল পোস্টে দাবি করা হয়েছে যে, নেতাজি তাঁর আজাদ হিন্দ ফৌজের সহযোদ্ধাদের সঙ্গে সমবেতভাবে জাতীয় সঙ্গীতের আদি রূপটি গেয়েছিলেন। আসলে তাঁরা যেটা গেয়েছিলেন, সেটা ছিল ১৯১১ সালে রবীন্দ্রনাথ রচিত একটি গানের হিন্দুস্তানি অনুবাদ।

By - Sumit Usha | 14 May 2019 4:50 PM IST

ভাইরাল হওয়া একটি পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ‘স্বাধীন ভারত’-এর ‘অস্থায়ী সরকার’-এর জাতীয় সঙ্গীত ‘শুভ সুখ চৈন কি বরখা’ গানটিকেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একটু অদলবদল করে বর্তমান জাতীয় সঙ্গীত বলে মান্য ‘জনগণমন’ রচনা করেছিলেন। দাবটি সম্পূর্ণ মিথ্যে।
ভাইরাল হওয়া পোস্টটির ক্যাপশনে লেখাঃ “আসল জাতীয় সঙ্গীতটা শুনুন, যেটা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ও তাঁর আজাদ হিন্দ ফৌজের সহযোদ্ধারা গাইতেন এবং যেটা রদবদল করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পরে ব্রিটেনের রাজা পঞ্চম জর্জকে ভারতে স্বাগত জানানোর জন্য রচনা করেছিলেন এবং যা ভারতের জাতীয় সঙ্গীত রূপে প্রতিটি সরকারের দ্বারা স্বীকৃত হয়ে এসেছে।”

Full View

পোস্টটি দেখতে এখানে এবং তার আর্কাইভ সংস্করণ দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

তথ্য যাচাই

বুম দেখেছে, পোস্টের দাবিটি তথ্যগতভাবে ত্রুটিপূর্ণ।
জনগণমন প্রথম প্রকাশ্যে গীত হয় ১৯১১ সালের ২৭ ডিসেম্বর, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের কলকাতা অধিবেশনে। আর আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠিত হয় রাসবিহারী বসুর হাতে, ১৯৪২ সালে, যা পরের বছর ১৯৪৩ সালে সুভাষচন্দ্র পুনরুজ্জীবিত করেন।

তাহলে জাতীয় সঙ্গীতটি প্রথম সুভাষচন্দ্র ও তাঁর আজাদ হিন্দ ফৌজই গায় এবং রবীন্দ্রনাথ পরে সেটিকে পরিমার্জন করে বর্তমান রূপ দেন, এটা তথ্যগতভাবে ভুল। কেননা আজাদ হিন্দ ফৌজ প্রতিষ্ঠার অনেক আগে থেকেই রবীন্দ্রনাথ রচিত সংস্করণটি চালু ছিল।

শুভ সুখ চৈন’ বনাম ‘জনগণমন’

‘শুভ সুখ চৈন’ হল ১৯১১ সালেই রবীন্দ্রনাথ রচিত একটি ব্রহ্মসঙ্গীতের হিন্দুস্তানি (হিন্দি ও উর্দু) সংস্করণ। গানটি সুভাষচন্দ্র নিজেই অনুবাদ করেছিলেন আজাদ হিন্দ ফৌজের ক্যাপ্টেন আবিদ আলি এবং মুমতাজ হুসেনকে সঙ্গে নিয়ে, আর ক্যাপ্টেন রাম সিং গানটিতে সুর দেন।

Full View

শুভ সুখ চৈন এর একটি প্রতিরূপ।

রেডিফ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্যাপ্টেন রাম সিং বলেনঃ “আমৃত্যু লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে, এমন একটি বাহিনীকে অনুপ্রাণিত করতে নেতাজি সঙ্গীতের উপর বিরাট গুরুত্ব দিতেন। আমার স্পষ্ট মনে আছে ১৯৪৩ সালের সেই দিনটির কথা, যে দিন নেতাজি সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ ফৌজের সম্প্রচার দফতর ক্যাথে বিল্ডিংয়ে এসে আমাকে ডেকে বললেন রবীন্দ্রনাথের লেখা একটি কবিতার অনুবাদে সুর সংযোজন করতে। তিনি আমায় এমন সুর দিতে বললেন, যা সৈন্যদের কুচকাওয়াজের মতো, যা মানুষকে ঘুম পাড়িয়ে দেবে না, বরং ঘুমন্ত মানুষকেও জাগিয়ে তুলবে।”

ক্যাপ্টেন রাম সিংয়ের সাক্ষাৎকার।

এই গানটিই ১৯৪৩ সালে স্বাধীন ভারতের অস্থায়ী সরকারের জাতীয় সঙ্গীত রূপে গৃহীত হয়। এই অস্থায়ী আজাদ হিন্দ সরকারের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ভারতীয় ভূখণ্ডের বাইরে, ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটাতে।

জনগণমন সঙ্গীত নিয়ে বিতর্ক

আজ যা ভারতের জাতীয় সঙ্গীত রূপে মান্য, তাতে চূড়ান্ত সুরারোপ কে করেছিলেন, তা নিয়ে দীর্ঘ বিতর্কের এখনও অবসান হয়নি। বুম বেশ কিছু সংবাদ-প্রতিবেদন এবং দলিলপত্র ঘেঁটে বুঝেছে, এই বিতর্ক একটি ব্রহ্মসঙ্গীতের জাতীয় সঙ্গীতে পরিণত হওয়ার বিতর্কের চেয়ে কম মজাদার নয়।

আইরিশ যোগযোগ

১৯১১ সালেই রবীন্দ্রনাথের ‘ভারতভাগ্যবিধাতা’ নামক ব্রহ্মসঙ্গীতটি কলকাতায় জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে গীত হয়।
তবে ১৯১৯ সালে রবীন্দ্রনাথের এই গানটিতে নতুন একটি সুর সংযোজন করেন জনৈকা আইরিশ মহিলা মার্গারেট কাজিন্স। ওই বছরেই দক্ষিণ ভারত সফরের সময় রবীন্দ্রনাথ অন্ধ্রপ্রদেশের মদনপাল্লে-তে বেসান্ত থিওসফিকাল কলেজে হাজির হন।
কলেজের অধ্যক্ষ জেমস হেনরি কাজিন্স এবং তাঁর স্ত্রী মার্গারেট কবিকে স্বাগত জানান।কলেজে একটি কবিতা আবৃত্তির অধিবেশনে রবীন্দ্রনাথ কাজিন্স দম্পতি এবং ছাত্রদের সামনেই এই গানটি গেয়ে শোনান।

দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন।

এর পরেই খুলে যেতে থাকে ইতিহাসের এক-একটি পরত। সমগ্র কবিতাটির ব্যাখ্যা শুনবার পর মার্গারেট কাজিন্স তাতে সুর সংযোজনের সিদ্ধান্ত নেন।
জনগণমন-র আইরিশ যোগাযোগ সম্পর্কে আরও জানতে এখানে এবং এখানে ক্লিক করুন।
বিশ্বভারতীর প্রাক্তন অধিকর্তা সবুজকলি সেন-এর সঙ্গে কথা বলে বুম জেনেছে, জাতীয় সঙ্গীতটি বাস্তবিকই ১৯১১ সালে রচিত ভারতভাগ্যবিধাতা গানটির প্রথম স্তবক থেকে নেওয়া। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ১৯২১ সালে।

ব্রিটিশ যোগাযোগ

এখান থেকেই জাতীয় সঙ্গীতের ইতিহাস একটা নতুন মোড় নেয়। মার্গারেট কাজিন্স কবির গানে যে সুর সংযোজন করেছিলেন, তা ছিল অনেকটা ঢিমে লয়ের, কতকটা কবির নিজের গাওয়া সুরেরই অনুরূপ।
কিন্তু এখন যে অপেক্ষাকৃত দ্রুত লয়ে গানটি আমরা শুনতে অভ্যস্ত, তার পিছনে রয়েছে বিখ্যাত ব্রিটিশ সুরকার ও গীতিকার হার্বার্ট মুরিল-এর হাতযশ। তিনিই সুরটির বর্তমান কুচকাওয়াজি, রণবাদ্যসুলভ অর্কেস্ট্রার স্রষ্টা।
১৯৫০ সালের ২১ জানুয়ারি দ্য হিন্দু সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী জনগণমন-র হার্বার্ট মুরিল-কৃত সংস্করণটিই অনুমোদিত হয়।

১৯৫০ সালের দ্য হিন্দু

জনগণমন-র সুরে হার্বার্ট মুরিল-এর ভূমিকা সম্পর্কে আরও জানতে এখানে এবং এখানে ক্লিক করুন।

বিভ্রান্তিটা কোথায়?

আমাদের জাতীয় সঙ্গীত এবং ‘শুভ সুখ চৈন’-এর সুর নিয়ে বিভ্রান্তি বরাবরই থেকে গিয়েছে l দুটি গানের সুরে সাদৃশ্য রয়েছে তাদের কুচকাওয়াজি ছন্দে ও লয়ে l নেতাজি সুভাষচন্দ্র তাঁর আজাদ হিন্দ ফৌজের জন্য একটি কুচকাওয়াজি সুর চেয়েছিলেন, আর তা মাথায় রেখেই শুভ সুখ চৈন গানটিতে সুরারোপ করা হয়।
একই ভাবে জনগণমন-র ক্ষেত্রেও হার্বার্ট মুরিলের অর্কেস্ট্রা স্বাধীন ভারতের জাতীয় সঙ্গীতে একটা রণধ্বনি আনতে চেয়েছিল।
তবে উভয় গানেরই মূল সুরটি ধার করা হয় রবীন্দ্রনাথের ব্রহ্মসঙ্গীত ভারতভাগ্যবিধাতা থেকে। আর তাতেই দুটি গানের সুরে এত মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Related Stories