ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে রাজনীতি না করার আবেদন জানিয়ে এক ভারতীয় সেনা-অফিসারের স্ত্রীর পোস্ট করা একটি ভিডিওর ভুয়ো ব্যাখ্যা করে শেয়ার করা হচ্ছে যে, তিনি ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট উইং কমান্ডার অভিনন্দনের স্ত্রী ।
২৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ঘোষণা করেন যে, দু দেশের মধ্যে শান্তির পদক্ষেপ হিসাবে শুক্রবার বায়ুসেনার ওই ধৃত পাইলটকে মুক্তি দেওয়া হবে ।
ওই ঘোষণার কয়েক ঘন্টা আগে উইং কমান্ডার অভিনব বর্তমানের স্ত্রীর নামে ওই ভিডিওটি ভাইরাল করে প্রচার হতে থাকে যে, তিনি জওয়ানদের আত্মত্যাগ নিয়ে রাজনীতি করে তাকে হেয় করতে নিষেধ করছেন ।
ফেসবুক ও টুইটারে ভিডিওটি ভাইরাল হয় এই হিন্দি ক্যাপশন সহ –জওয়ানদের আত্মত্যাগ নিয়ে যেন বিজেপি রাজনীতি না করে । ভারতীয় যুব কংগ্রেসের সরকারি হ্যান্ডেল যুব দেশও একই ক্যাপশন দিয়ে ভিডিওটি শেয়ার করে ।
এখানে আর্কাইভ পোস্ট দেখুন।
পোস্টটির আর্কাইভ বয়ান দেখতে এখানে ক্লিক করুন ।
তথ্য যাচাই
১ মিনিট ৮ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে এক মহিলাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, রাজনীতিকরা যেন সেনাদের আত্মত্যাগ নিয়ে রাজনীতি না করেন । শুরুতেই মহিলাটি বলছেন—“সকলকে বলছি ! আমি একজন সেনা-অফিসারের স্ত্রী…”। এখানে উল্লেখ্য যে অভিনন্দন বর্তমান কোনও সেনা-অফিসার নন, ভারতীয় বায়ুসেনার একজন পাইলট ।
বুম ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে জানতে পেরেছে, ভিডিওর মহিলাটি গুরুগ্রামের বাসিন্দা জনৈকা শিরীষা রাও । শিরীষা তাঁর ব্যক্তিগত হ্যান্ডেলটি ব্যবহার করেই ভিডিওটি পাঠিয়েছেন, ক্যাপশন দিয়েছেন—“বিনীত আবেদন@বিজেপি4ইন্ডিয়া জওয়ানদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে জেতা আসনের হিশেব কষো না” ।
বুম শ্রীমতি রাওয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি স্বীকার করেন, তিনিই ভিডিওটি তৈরি করেছেন এবং পাঠিয়েছেন—“হ্যাঁ, আমিই আমার টুইটার হ্যান্ডেলে ভিডিওটি পাঠিয়েছি । এটা ছিল রাজনীতিকদের প্রতি আমার একটা আবেদন যাতে সীমান্তে কর্মরত আমাদের জওয়ানদের নিয়ে তাঁরা রাজনীতি না করেন” । রাও আম আদমি পার্টির একজন স্বেচ্ছাসেবক । তিনি জানালেন, তাঁর স্বামী সেনাবাহিনীর একজন কর্নেল, কিন্তু এর চেয়ে বিশদে আর কিছু বলতে চাননি ।
তিনি আরও বললেন—“ভিডিওটায় আমি তো স্পষ্টই বলেছি যে আমি একজন সেনা-অফিসারের স্ত্রী, আর অভিনন্দন তো বায়ুসেনার উইং কমান্ডার । তাহলে কেন লোকে ভিডিওটি শেয়ার করার সময় আমাকে অভিনন্দনের স্ত্রী বলে পরিচয় দিচ্ছে?”