বেশ কয়েকটি পাকিস্তানি মিডিয়া সংস্থা এবং একটি ইরানি সংস্থাও ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের হামলায় ভেঙে পড়া ভারতীয় ফাইটার জেটের ছবি বলে যা দেখাচ্ছে, তা আসলে ওড়িশায় ভেঙে পড়া ভারতীয় বায়ুসেনার একটি বিমানের ছবি ।
ইরানের প্রেস টিভি-র অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল এক গুচ্ছ এ রকম ছবি পোস্ট করে দাবি করেছে, ‘এগুলিই পাকিস্তানের গুলি করে নামানো ভারতীয় বায়ুসেনার ফাইটার জেটের প্রথম ছবি’ ।
ডন এবং এক্সপ্রেস ট্রিবিউন-এর মতো অগ্রণী পাক সংবাদ সংস্থাও এই পুরনো ফোটোগুলিই ব্যবহার করে লিখেছে—ভারতীয় বায়ুসেনার দুটি বিমান পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করার পর পাক বাহিনী গুলি করে এগুলিকে নামায় ।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের টুইটের আর্কাইভ বয়ান এখানে দেখুন ।
তবে ডন সংবাদপত্রের ওয়েবসাইট পরে ছবিটি সরিয়ে নেয় ।
পাকিস্তানের নেটিজেনরাও তাদের সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে ব্যাপকভাবে ছবিটি ব্যবহার করে ।
তথ্য যাচাই
বুম ছবিগুলি অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ করে দেখেছে, তিনটির মধ্যে দুটি ছবিই পুরনো বিমান ভেঙে পড়ার ছবি ।
প্রথমটি ২০১৫ সালের জুন মাসে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলায় একটি প্রশিক্ষক জেট বিমানের দুর্ঘটনায় ভেঙে পড়ার ।
দ্বিতীয় ছবিটি গুজরাটি একটি ওয়েবসাইটের, যা ২০১৮ সালের জুন মাসে গুজরাটের মাটিতে দুর্ধটনাগ্রস্ত ফাইটার জেটের এই ছবিটি প্রকাশ করে।
এখানে প্রতিবেদনের লিঙ্কটি দেখুন।
ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার গত কাল বিকালে নয়াদিল্লিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান—একটি মিগ বাইসন যুদ্ধবিমান ও তার পাইলট নিখোঁজ হয়েছে । তাঁর পুরো বিবৃতিটা নীচে পড়ুনঃ
“পাকিস্তানে ঘাঁটি গাড়া জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ ভারতের বিরুদ্ধে আরও হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এর বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা গতকাল তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস-বিরোধী ব্যবস্থাগ্রহণ করি । আমাদের এই ব্যবস্থাগ্রহণের প্রত্যুত্তরে পাকিস্তান আজ তার বিমানবাহিনীকে ব্যবহার করে ভারতীয় সামরিক লক্ষ্যবস্তুর উপর হামলা চালায় । আমরা প্রস্তুত ও সতর্ক থাকায় পাকিস্তানের সেই প্রয়াস বানচাল করে দিতে সফল হই ।
পাক বিমানবহরের দেখা পাওয়া মাত্রই ভারতীয় বায়ুসেনা জবাব দেয় । আকাশের এই লড়াইয়ে একটি পাকিস্তানি ফাইটার বিমানকে বায়ুসেনার মিগ-২১ বাইসন জেট নামিয়ে দেয় । স্থলবাহিনীর জওয়ানরা ওই বিমানটিকে পড়তে দেখেছেন পাকিস্তান ভূখণ্ডের ভিতরে । দুর্ভাগ্যবশত এই লড়াইয়ে আমরাও একটি মিগ-২১ জেট হারাই, যার পাইলট নিখোঁজ । পাকিস্তান দাবি করেছে, ওই পাইলট তাদের হেফাজতে রয়েছেন l আমরা এখনও তার প্রমাণ সংগ্রহ করে উঠতে পারিনি ।”