একটি ভাইরাল হওয়া ভিডিও এমন একটা ধারণা ছড়াচ্ছে, যেন পশ্চিমবঙ্গে এক রোগীর পরিবারের লোকজন একজন ডাক্তারকে মারধোর করছে। ছবিটি পুরনো এবং সম্পূর্ণ অপ্রাঙ্গিক।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে রোগীর পরিজনরা এক ডাক্তারের চেম্বারে ঢুকে তাঁকে ধাক্কাধাক্কি করছে। তাঁকে মারধোরও করছে। এই ছবিটিই বিভিন্ন পেজে মিথ্যে দাবি সমেত শেয়ার করা হয়েছে।
এর ক্যাপশনে বলা হয়েছে, “দেখুন ঠিক কেন ডাক্তাররা নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছেন। পুলিশের ভূমিকাও দেখুন। এমনকি পরিষ্কার সিসিটিভি ফুটেজ থাকলেও কারও শাস্তি হয়না।”
এই প্রতিবেদনটি লেখার সময় পর্যন্ত ভিডিওটি ৫০,০০০ বার দেখা হয়েছে। ডাক্তাররা যখন আক্রান্ত হচ্ছেন তখন পুলিশের এই ভূমিকা কেন - এই একই প্রশ্ন নিয়ে বহু জনই একইরকমের মন্তব্য সহ শেয়ার করেছেন।
ওই ভিডিওটি শেয়ার করার সময় অন্য একটি পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, “চোরের মার খাবার জন্য ছেলে মেয়েরা ডাক্তারি পড়ে? পুলিশের ভূমিকাটা দেখুন। কি নিদারুণ সুরক্ষা দিচ্ছেন কর্তব্যরত ডাক্তার কে!!! যারা এই আন্দোলনের দায় ডাক্তারদের দিচ্ছেন তাদের ধিক্কার! আপনারাও এইরকম ভাবে ডাক্তার পেটাতে উৎসাহিত বোধ করেন নিশ্চই!!’’
তথ্য যাচাই
বুম দেখেছে ভিডিওটি পুরনো এবং পশ্চিমবঙ্গে চলা ডাক্তারি ছাত্রছাত্রীদের স্ট্রাইকের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্কই নেই। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে দেখা যাচ্ছে যে, ভিডিওটি তোলা হয়েছিল ২৪ অক্টোবর, ২০১৮। বুম প্রধান শব্দগুলি দিয়ে গুগলে সার্চ করলে মেডিক্যালরিপোর্টারটুডে.কম- এর একটি নিউজ রিপোর্টের খোঁজ পাওয়া যায়।
ঘটনাটি মধ্যপ্রদেশের ভিন্দ জেলা হাসপাতালে ঘটেছিল। চিকিৎসায় অবহেলার জন্য এক রোগী মারা গেলে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসককে মারধোর করা হয়।
আমরা ভিন্দের সিএমওএইচ ডাক্তার জগপাল কুশওয়া-এর কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে, তিনি সেটি সমর্থন করেন এবং জানান, “গতবছর চিকিৎসায় অবহেলা ঘটায় এক রোগীর মৃত্যু হলে দায়িত্বে থাকা ডাক্তার রজনকুমার আগরওয়ালকে রোগীর পরিবারের লোকেরা মারে।”
ওই একই ভিডিও দেশে ডাক্তারদের সোশাল মিডিয়ার একটি প্ল্যাটফর্ম মেডিকোজ ইউনাইটেড ফেসবুক পেজ’এও আপলোড করা হয়েছিল।
ওই আক্রমণে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বহু ডাক্তারই তখন ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।