প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের চার বছরের পুরনো একটি ছবি সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে এই ভুল ব্যাখ্যা সহ যে, পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় নিহত এক জওয়ানের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে গিয়ে তাঁরা হাসাহাসি করছেন ।
পোস্টটির একটি আর্কাইভ বয়ান দেখুন এখানে।
শেয়ার করা পোস্টটির ক্যাপশনঃ আজ শ্রীযুক্ত মোদী শহিদ সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছেন এক মুখ্যমন্ত্রীর (কুমার) সঙ্গে ।
সমাজকর্মী কবিতা কৃষ্ণন এবং যুব কংগ্রেসের সরকারি টুইটার হ্যান্ডেলও পোস্টটি শেয়ার করেছে ।
টুইটের আর্কাইভ বয়ান দেখুন এখানে ।
তথ্য যাচাই
বুম ছবিটির খোঁজখবর নিতে গিয়ে দেখে, ছবিটি গত ২০১৫ সাল থেকে শেয়ার হয়ে আসছে । ২০১৫ সালের ২৫ জুলাই বিজেপির একটি নির্বাচনী জনসভায় এটি তোলা হয় । সেখানে নীতীশের সঙ্গে একই মঞ্চে বসে থাকার কয়েক ঘন্টা পরেই মোদী নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে প্রবল সমালোচনা করেন । ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি রিপোর্টে একই পোস্ট শেয়ার করা হয়, যার আর্কাইভ বয়ানটি এখানে দেখতে পারেন ।
লাইভমিন্ট নামে অন্য একটি সংবাদপত্রও ওই একই পোস্টটি ছেপে দিয়েছে ।
খুঁজতে-খুঁজতে আমরা ২০১৫ সালের ওই একই ঘটনার একটি ভিডিও পেলাম, যাতে মোদী এবং কুমার ওই একই ভঙ্গিতে পাশাপাশি বসে রয়েছেন ।
এ বিষয়ে অতএব কোনও সন্দেহই নেই যে ছবিটি পুলওয়ামায় জঙ্গি হানায় শহিদ হওয়া জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের কোনও ঘটনার ছবি নয় ।
মোদী এবং কুমার আবারও হাসলেন
ঘটনাচক্রে ১৭ ফেব্রুয়ারি মোদী আবার বিহারে যান নীতীশ কুমারের সঙ্গে একত্রে বেগুসরাই জেলার বারাউনিতে কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করতে । বিহারের যে দু জন সিআরপিএফ জওয়ান পুলওয়ামা হামলায় নিহত হয়েছেন, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলিও অর্পণ করেন ।
যিনি মোদী ও কুমারের হাস্যময় আগের ছবিটি টুইট করেছিলেন, সেই সমাজকর্মী কবিতা কৃষ্ণন তাঁর কাজের কৈফিয়ত দেন এই বলে যে, দুই নেতাই এই রবিবার আবার হেসেছেন এবং তাঁদের সেই হাসাহাসির ছবি ফের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিতও হয়েছে ।
তাঁর টুইটটি আরও অনুসন্ধান করে আমরা দেখতে পাই, রবিবার মোদী এবং কুমার বাস্তবিকই অশোভন রকমের হাসি-বিনিময় করেছেন, অন্তত স্ক্রোল নিউজ-পোর্টালের ব্যবহার করা পিটিআইয়ের একটি ফোটো থেকে তেমনটাই মনে হচ্ছে ।
২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ের উপর জঙ্গিদের একটি গাড়ি-বোমা হামলায় অন্তত ৪০ জন জওয়ান নিহত হন । এই মর্মান্তিক ঘটনার পরে-পরেই সোশাল মিডিয়া তা নিয়ে তথ্য সরবরাহের নামে ভুয়ো খবরের প্লাবন বইয়ে দেয় । এই ধরনের ভুয়ো খবরের কিছু-কিছু বুম পর্দাফাঁস করেছে, যা এখানে দেখে নিতে পারেন ।