একটি ছবিতে তরুণ বয়সের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অপরাধ জগতের নায়ক ছোটা রাজনের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু ছবিটি ফটোশপ করা।
ছবিটি শেয়ার করা হচ্ছে আরও একটি দাবি সমেত। বলা হচ্ছে, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবিসকেও দেখা যাচ্ছে ওই ছবিতে। রিপাবলিকান পার্টি অফ ইন্ডিয়া (আথওয়ালে)অক্টোবর মাসে মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে রাজনের ছোট ভাই দীপক নিকালজেকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার পরই ভাইরাল হয়েছে ওই ছবি। আরপিআই হল বিজেপির এক সরিক।
পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
পোস্টটিতে দুটি ছবি আছে। প্রথমটিতে নাম সেঁটে দিয়ে মিথ্যে দাবি করা হচ্ছে যে, মোদী আর ফডনবিসকে রাজনের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে। দ্বিতীয় ছবিটি হল টেলিভিশনে একটি খবরের স্ক্রিনশট। তাতে লেখা আছে, “অপরাধ জগতের ডন ছোটা রাজনের ভাইকে টিকিট দিয়েছে বিজেপি।”
ফেসবুকে ভাইরাল
একই ক্যাপশন দিয়ে সার্চ করলে দেখা যায় যে, ছবিটি ফেসবুকেও ভাইরাল হয়েছে।
তথ্যযাচাই
ফেসবুকে পোস্ট করা একটি মন্তব্যকে ভিত্তি করে ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে দেখা যায় সেটি ফটোশপ করা।
আসল ছবি
ছবিটি সার্চ করলে, টাইমস অফ ইন্ডিয়ার ২০১৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন সামনে আসে। তার শিরোনামে বলা হয়, "১৪ বছর নির্বাসনের পর নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হয়ে ফিরলেন তাঁর প্রিয় জায়গায়।" ওই প্রতিবেদনের সঙ্গে ছাপা হয়েছিল আসল ছবিটি।
দু’টো ছবি খুঁটিয়ে দেখলে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, ভাইরাল ছবিটি ফটোশপ করা হয়েছে। আসল ছবিতে নিজের ডান হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছেন যে ব্যক্তিটি, তার মুখটা বদলে দেওয়া হয়েছে ভুয়ো ছবিতে।
তুলনা
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার খবর অনুযায়ী, মোদীর বাঁ দেকে যিনি দাঁড়িয়ে আছেন তাঁর নাম সুরেশ জানি। উনি মোদীর দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি। মোদী ১৯৯৩ সালে আমেরিকা গেলে, নিউ ইয়র্কের জেএফকে বিমান বন্দরে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান সুরেশ জানি। ছবিটি সেই সময় তোলা হয়।
এ ছাড়াও আসল ছবিটি ২০১৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রিডিফ-এ প্রকাশিত লেখাতেও দেখা যায়।
জানির বক্তব্য উদ্ধৃত করা হয় ওই প্রতিবেদনে। উনি বলেন, “১৯৯৩’য়, নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার আমেরিকায় এলে, আমি তাঁকে বিমান বন্দরে আনতে যাই। তার পর উনি আবার আসেন ১৯৯৭ সালে। এবং আরও একবার ২০০০ সালে।
দুটি প্রতিবেদনের কোথাও জানি বলেননি যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জেএফকে বিমান বন্দরে মোদীকে আনতে যাওয়ার সময় ফডনবিস তাঁর সঙ্গে ছিলেন। বা ফডনবিস ছিলেন সে দেশে।
২০১৫ সাল থেকে ভাইরাল
আমরা দেখি যে, মিথ্যে দাবি সমেত ওই ফটোশপ করা ছবিটি ২০১৫ সাল থেকে সোশাল মিডিয়ায় চালু আছে।
টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।