Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available

Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available
ফ্যাক্ট চেক

হিতেশ মুলচন্দানির খুনের পিছনে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোন অস্বীকার করছে পিম্পরির পুলিশ

পুনের একটি পানশালায় বচসা, তারপর অপহরণ ও ছুরিকাঘাতে নিহত হয় হিতেশ মুলচন্দানি। পুলিশ বুমকে জানিয়েছে, এই ঘটনাকে ঘিরে যারা সাম্প্রদায়িক ঘৃণা উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

By - Nivedita Niranjankumar | 29 July 2019 12:48 PM IST

২৪ বছরের তরুণ হিতেশ মুলচন্দানির অপহরণ ও খুনের পিছনে সাম্প্রদায়িক কারণ ছিল বলে সোশাল মিডিয়ায় যে প্রচার চলছে, পুনের পুলিশ প্রশাসন তা খারিজ করে দিয়েছে। টুইটার ও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া পোস্টে দাবি করা হয়েছে, মুকেশ প্রকাশ্যে প্রস্রাব করার প্রবণতার প্রতিবাদ করায় মুসলিমদের একটি দুর্বৃত্ত দল তাকে অপহরণ ও হত্যা করেছে। ঘটনার সময় অকুস্থলে উপস্থিত মুকেশের বন্ধু রোহিত সুখেজার (যিনিই এ সংক্রান্ত এফআইআর দায়ের করেন) সঙ্গে বুম যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ঘটনার এই সাম্প্রদায়িক বিবরণ ও ব্যাখ্যায় তিনি রুষ্ট। তাঁর কথায়, “এ ধরনের সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় পোস্ট মুলচন্দানির পরিবারেরও বহু ক্ষতি করে চলেছে।”
ঘটনার পর পুনের পিম্পরি পুলিস দুই অপ্রাপ্তবয়স্ক সহ মোট ৬ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। অভিযুক্তরা হল অক্ষয় ভোঁসলে ওরফে লিঙ্গা, শাহবাজ সিরাজ, যোগেশ টোম্পে ওরফে ল্যাংড়া, আরবাজ শেখ এবং দুই কিশোর। পলিশ ভোঁসলে এবং টোম্পেকে গ্রেফতার করলেও সিরাজ ও যোগেশ এখনও অধরা। পুনে শহরেরই একটি মফঃস্বল এলাকা হল পিম্পরি এবং এটি পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড় যুগল শহরের অন্যতম।
ঘটনাটিতে একটা সাম্প্রদায়িক প্রেক্ষিত জুড়ে শেফালি বৈদ্য টুইট করেছেন “২৪ বছরের তরুণ হিতেশকে পুনেতে একদল মুসলিম অপহরণ করে, ছুরিকাহতও করে। হিতেশকে ওরা সম্ভবত নির্যাতনও করে। হিতেশ এক মুসলিম ব্যক্তির প্রকাশ্যে প্রস্রাব করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। তাই দেশের অন্যতম নিরাপদ শহর পুনেতে তাকে তার দাম চোকাতে হল। বিদ্রূপ করে তিনি টুইটে লিখেছেন—তবে এটাকে কেউ আর ‘ঘৃণার অপরাধ’ বলবে না, কারণ তার শিকার ব্যক্তিটি যে হিন্দু!”



বৈদ্যর টুইট ইতিমধ্যেই ৫০০০ জন পুনরায় টুইট করেছে এবং ৬০০০ জন লাইক দিয়েছে। যেমন অ্যারন ক্যাপিটালের চেয়ারম্যান জনৈক মোহনদাস পাই এটি পুনরায় টুইট করেছেন একটি মন্তব্য সহ: “তথ্য-যাচাইকারী ভারতীয়রা কি এটাকে মুসলমানদের তরফে ঘটা ‘ঘৃণার অপরাধ’ রূপে গণ্য করবে, নাকি বরাবরের মতো উপেক্ষা করবে? পেশাদার বামপন্থী প্রতিবাদীরা কেন এই বীভৎস অপরাধের প্রতিবাদ করছেন না?”



বস্তুত, বৈদ্যর টুইটটি একটি ভাইরাল বার্তা যা ঘটনাটি ঘটার পর থেকেই ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে ঘুরছে।

Full View

অনেকগুলি পোস্টেই সাম্প্রদায়িক ঝোঁক স্পষ্ট, যাতে কেবল মুসলিম অভিযুক্তের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, এমনকী নাবালক মুসলিমের নামও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। মিথ্যা দাবি করা হয়েছে যে, মুলচন্দানিকে মুসলমানরাই হত্যা করেছে। কোনও কোনও পোস্টে এমন ভুয়ো দাবিও করা হয়েছে যে, মুলচন্দানিকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে।





২৪ জুলাই একটি দক্ষিণপন্থী হিন্দি ওয়েবসাইট অপইন্ডিয়া-তে একটি প্রতিবেদনের শিরোনামে লেখা হয়, ‘এখানে প্রস্রাব কোরো না, এই কথা নিয়ে হিতেশকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে রাখ করে দেওয়া হয়েছে: ফিরোজ, কুরেশি, শেখ, ল্যাংড়া সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর।’ মজার ব্যাপার, অপইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে কেবল মুসলমানদেরই অভিযুক্ত হিসাবে শনাক্ত করা হয়েছে, যদিও হিন্দু নামধারী এক ব্যক্তিও অভিযুক্তের তালিকায় ছিল।

অপইন্ডিয়া হিন্দির প্রতিবেদন।

তথ্য যাচাই

পিম্পরি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (অপরাধ শাখা)সুরেশ হিরেমথ বুম-এর সঙ্গে কথাপ্রসঙ্গে ঘৃণার অপরাধ-এর দাবিটি সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেন। তিনি জানান, “হিতেশ পুনের ক্রুনাল পানশালায় প্রায়শ তার মালিক এবং তার বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পর ঘটনাটি ঘটেছিল। পানশালাটি ভোর ৩টে ৩০ পর্যন্ত খোলা ছিল, যদিও সরকারি নিয়ম ১টা ৩০ মিনিটে তা বন্ধ করে দেওয়ার।

৩টে ৩০ নাগাদ  ২জন নাবালক সহ ৬ জনের একটি দল একটি গাড়িতে পানশালায় পৌঁছয় এবং একজন গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে বিয়ারের অর্ডার দেয়। একজন যখন মদ কিনছিল তখনই একটি নাবালক গাড়ি থেকে নেমে পানশালার গেটে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে থাকে। পানশালারই এক কর্মী ব্যাপারটা দেখতে পেয়ে তাকে থামাতে চেষ্টা করলে নাবালকটি একটি বোতল সেই কর্মীর মাথায় ভাঙে। তা দেখেই পানশালার মালিক এবং তার বন্ধু মুলচন্দানি ছুটে বেরিয়ে আসে এবং দু পক্ষে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। তার পরেই লোকগুলি মুলচন্দানিকে ধরে গাড়িতে তুলে নেয়, তবে পানশালার মালিক ও কর্মীরা মিলে একটি নাবালককে ধরে ফেলে। অভিযুক্ত নাবালক এবং ৩ জন প্রাপ্তবয়স্ক সিরাজ, সাবন্ত, শেখ ও ভোঁসলে গাড়ির ভিতর মুলচন্দানিকে বারবার ছোরা দিয়ে আঘাত করতে থাকে। তারপর তারা পানশালার মালিককে বলে ধৃত নাবালকটিকে তাদের হেফাজতে ফিরিয়ে দিলে তবেই তারা মুলচন্দানিকেও ফিরিয়ে দেবে।” প্রায় ২-৩ ঘন্টা ধরে এই দরকষাকষি চলে আর তারপর অভিযুক্তরা নিজেদের ফোন বন্ধ করে দেয়। তখনই পানশালার মালিক ও কর্মীরা থানায় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে এফআইআর দায়ের করে। বুম ক্রুনাল পানশালার মালিক রোহিত সুখেজার দায়ের করা এফআইআর-এর একটি প্রতিলিপি যোগাড় করেছে এবং তার সঙ্গে হিরেমথের এই বিবরণ হুবহু মিলে যায়।

হিতেশ মুলচন্দানির খুনে দায়ের হওয়া এফআইআর।

সুখেজা বুমকে জানান, “এই ঘটনায় কোনও হিন্দু-মুসলিম বিরোধের ব্যাপার নেই। অভিযুক্তদের মধ্যে ৩ জন হিন্দু এবং ৩ জন মুসলিম। এরা সকলেই দুষ্কৃতী মাত্র। যারা কিছু জানে না, তারাই এই ঘটনার মধ্যে ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক ব্যাখ্যা খুঁজে বেড়াচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, ‘‍এই সব কথা বলে তারা মুলচন্দানির পরিবারকেও সমস্যায় ফেলে দিচ্ছে।’

পিম্পরি থানার বরিষ্ঠ পুলিশ ইনস্পেক্টর কল্যাণ পাওয়ার বলেন, “মুলচন্দানিকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার গল্পটাও ডাহা মিথ্যে। ওকে অনেক জায়গায় ছুরিকাহত করা হয়েছিল, পুড়িয়ে মারা হয়নি। ওর শরীরে কোনও পোড়ার ক্ষতচিহ্ন ছিল না।’’ তাঁর মতে, ‍‘ভাইরাল হওয়া পোস্টে যেমনটা দাবি করা হয়েছে, সেভাবে প্রকাশ্যে প্রস্রাব করতে নিষেধ করার জন্য তাকে খুন করা হয়নি। নিষেধ মুলচন্দানি করেওনি, করেছিল পানশালার এক কর্মী। তারপর দু পক্ষে ধস্তাধস্তির সময় মুলচন্দানিকে দুষ্কৃতীরা গাড়িতে তুলে নেয় এবং উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে, যাতে তার মৃত্যু হয়।

পাওয়ার জানান, গ্রেফতার হওয়া দুই অভিযুক্ত হল অক্ষয় ভোঁসলে এবং যোগেশ টোম্পে। অন্যরা শাহাবাজ সিরাজ ও আরবাজ শেখ এবং দুই নাবালক, সকলের বিরুদ্ধেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ৩২৬, ৩৬৪ ও ৫০৪ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।

“যারা এই ঘটনাকে ঘিরে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” হিরেমথ বলেন।

Related Stories