Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available

Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available
রাজনীতি

গান্ধীরা আইএনএস বিরাটকে কীভাবে ব্যবহার করেছিলেন, সে সম্পর্কে নৌবাহিনীর অফিসারদের মতভেদ স্পষ্ট

১৯৮৭-র ডিসেম্বরে আইএনএস বিরাটে মোতায়েন দুই নৌ-অফিসারের সঙ্গে বুম কথা বলেছে এবং দুজনের বয়ানে যথেষ্ট অমিল রয়েছে

By - Archis Chowdhury | 10 May 2019 8:43 AM GMT

ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী কীভাবে ‘অপব্যবহার’ করেন, ৩০ বছর আগের সেই ঘটনা সম্পর্কে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য অবসরপ্রাপ্ত নৌ-অফিসারদের মধ্যে বিভাজন ঘটিয়ে দিয়েছে ।

২০১৯ সালের ৮ মে নয়াদিল্লির রামলীলা ময়দানে এক জনসভায় নরেন্দ্র মোদী বলেন—“রাজীব গান্ধী ও তাঁর পরিবার ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিরাটকে ছুটি কাটানোর ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেছিলেন” ।

মোদীর সরকারি টুইটার হ্যান্ডেলেও লেখা হয়েছে—রাজীব গান্ধী তাঁর সপরিবার ব্যক্তিগত ছুটি কাটানোর কাজে ওই রণতরীটিকে কার্যত ‘ট্যাক্সির মতো’ ব্যবহার করেছিলেন । সেই সঙ্গে ইন্ডিয়া টুডে পত্রিকায় ৩০ বছর আগে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনও জুড়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে ১৯৮৭-৮৮ সালের ঘটনাবলীর বিশদ বিবরণ রয়েছে, যার মধ্যে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রীর আইএনএস বিরাটকে ব্যবহার করার গল্পও অন্তর্ভুক্ত ।



একটি আদর্শ ছুটি কাটানোর গল্প

১৯৮৮ সালে সাংবাদিক অনীতা প্রতাপ যখন এই প্রতিবেদনটি লেখেন, তখন তা নিয়ে বিশেষ হৈ-চৈ হয়নি ।

তিনি তখন ভাবেনওনি যে, ৩০ বছর পরে তাঁর ওই প্রতিবেদন একজন প্রধানমন্ত্রীর নজরে পড়ে যাবে এবং সেই সুবাদে তিনি পাদপ্রদীপের আলোয় উদ্ভাসিত হবেন ।


প্রতিবেদনটিতে ১৯৮৮ সালের জানুয়ারিতে লাক্ষাদ্বীপের বাঙ্গারাম দ্বীপে সপরিবারে রাজীব গান্ধীর এক বিলাসবহুল অবকাশ যাপনের বিশদ বিবরণ রয়েছে । রিপোর্টটিতে এই নির্জন দ্বীপখণ্ডে অমিতাভ বচ্চনের মতো সেলিব্রিটির এবং রাজীব-পত্নী সনিয়ার ইটালির আত্মীয়স্বজনদের ছুটির আনন্দ উদযাপন করতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগ দেওয়ার বিশদ বর্ণনাও ছিল ।

কিন্তু রিপোর্টটি গুরুতর বাঁক নেয় যখন তাতে উল্লেখ করা হয় যে, রাজীব গান্ধীর পরিবারকে সেখানে নিয়ে যেতে আইএনএস বিরাট যুদ্ধজাহাজকে ব্যবহার করা হয় এবং রণতরীটি ১০ দিন ধরে আরব সাগরে পড়ে থাকে ।

রিপোর্টে এমন ইঙ্গিতও দেওয়া হয় যে, ভারতীয় নৌবহরের আরও অনেক জাহাজ এবং একটি সাবমেরিনও প্রধানমন্ত্রীর এই অবকাশ যাপনের সঙ্গে জুড়ে থাকে, যা কার্যত নৌবাহিনীর কর্মক্ষমতা বা প্রতিরক্ষা রক্ষাকবচকেই সাময়িকভাবে অরক্ষিত করে দেয় ।

প্রকৃত সত্য, নাকি অতিরঞ্জন

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ৩০ বছর আগের সেই প্রতিবেদনটি জিইয়ে তোলার পর প্রতিবেদকের রচিত বিবরণের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ।

বুম ভারতীয় নৌবাহিনীর মুখপাত্রের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করে, কিন্তু তিনি গোপনীয়তার অজুহাতে এ বিষয়ে কিছু বলতে অস্বীকৃত হন ।

অন্য দিকে ১৯৮৭ সালে যে সব নৌ-অফিসার বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিরাটে মোতায়েন ছিলেন, বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত সেই অফিসাররা গান্ধী পরিবারের দ্বারা ওই রণতরীর অপব্যবহার বিষয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পেশ করছেন ।

সে সময় আইএনএস বিরাটের ভারপ্রাপ্ত অফিসার, অধুনা অবসরপ্রাপ্ত ভাইস-অ্যাডমিরাল বিনোদ পসরিচা এবং ঘটনার সময় যুক্ত অন্যান্য অফিসারদের ডাকে সাড়া দিয়ে অবসরপ্রাপ্ত অ্যাডমিরাল এল রামদাস এক প্রেস-বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন, যাতে ইন্ডিয়া টুডে-র প্রতিবেদনের বিষয়কে অসত্য বলে খারিজ করা হয়েছেঃ

বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী একটি বিশেষ সরকারি কাজে লাক্ষাদ্বীপ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের একটি বৈঠকে যোগ দিতেই ১৯৮৭ সালের ডিসেম্বরে আইএনএস বিরাটে করে সেখানে গিয়েছিলেন । বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যাতে নৌ-অফিসাররা মতবিনিময় করতে পারেন, সে জন্য ভারতীয় নৌবাহিনীর পশ্চিম নৌবহর কর্তৃপক্ষ আরব সাগরে তাদের বাৎসরিক মহড়ার দিনক্ষণ কিছুটা এগিয়ে এনেছিল মাত্র ।

অন্যদিকে সে সময় ওই বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজে উপস্থিত অবসরপ্রাপ্ত কমান্ডার ভি কে জেটলি আবার একটি টুইটে ইন্ডিয়া টুডে-র প্রতিবেদনটিকে যথার্থ বলে মত দিয়েছেন এবং রণতরীটি গান্ধী পরিবারের প্রমোদভ্রমণের জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল, এমন কথা বলেছেন ।



বুম কমান্ডার জেটলির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তাঁর টুইটারের বক্তব্যে অবিচল থাকেন । তবে রাজীবের সফরটি সরকারি কাজে ছিল, না ব্যক্তিগত কাজে, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি । তাঁর বক্তব্যঃ “ওটা সরকারি সফর ছিল, নাকি বেসরকারি, তা বলা আমার দায়িত্ব নয় । তবে তাঁরা যে ছুটি কাটাচ্ছিলেন, তা নিশ্চিত ।”

পরস্পরবিরোধী এই বক্তব্যে বিভ্রান্ত হয়ে বুম আরও গভীরভাবে জানতে আইএনএস বিরাটের ভারপ্রাপ্ত অফিসার বিনোদ পসরিচার সঙ্গে যোগাযোগ করে । তিনি জানান, “রণতরীতে গান্ধী পরিবারের লোক বলতে রাজীব, সনিয়া ও তাঁদের ১৬ বছরের পুত্র রাহুল ছিলেন । এবং লাক্ষাদ্বীপ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বৈঠকে যোগ দিতেই তাঁদের ত্রিবান্দ্রম থেকে লাক্ষাদ্বীপ পৌঁছে দিতে জাহাজটি ব্যবহৃত হয় । এটা ছিল একটা সরকারি সফর এবং তাতে অস্বাভাবিকও কিছু ছিল না । বিভিন্ন দ্বীপে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের শেষে আমরা ওঁদের আবার ত্রিবান্দ্রমেই নামিয়ে দিই ।”

কমান্ডার পসরিচার সঙ্গে আলোচনার সময়েই বুম তাঁকে অন্য এক নৌ-অফিসার জেটলির সম্পূর্ণ বিরোধী বক্তব্যের কথা জানালে তিনি বলেন—ওই বক্তব্য তথ্যগতভাবে অসত্য । “আমার কমান্ডার জেটলিকে মনে আছে, তিনি সে সময় এক তরুণ অফিসার ছিলেন । তবে তিনি যা বলছেন, তা তথ্যের বিচারে অসত্য ।”

এ ব্যাপারে প্রতিবেদকের বক্তব্য কী?

অনীতা প্রতাপ এখন হয়তো সুদূর নরওয়েতে বসবাস করেন । কিন্তু তাঁর ৩০ বছর আগে লেখা প্রতিবেদন এখন ভারত থেকে তাঁকে নরওয়ে পর্যন্ত তাড়া করছে ।

নৌ-বহর ব্যবহার করে গান্ধী পরিবারের ছুটি কাটানো নিয়ে লেখা তাঁর প্রতিবেদন খুঁচিয়ে তুলে যে বিতর্ক জাগানো হয়েছে, তার ধন্দ কাটাতে তাঁর প্রাক্তন নিয়োগকর্তা ইন্ডিয়া টুডে পত্রিকা প্রতিবেদনটির সারবত্তা প্রমাণে তাঁর কাছে কিছু প্রশ্ন রাখে ।



তিনি দাবি করেন, প্রতিবেদনটি আগাগোড়াই সত্য, কেননা ৮০-র দশকে তিনি যখন এটি লেখেন এবং তা প্রকাশিত হয়, তখন সরকারের তরফে তার সত্যতা অস্বীকার করা হয়নি, ভারতীয় নৌবাহিনীও সে সময় প্রতিবেদনটির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি । তাই আজ যখন সেই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, তখন তা নিয়ে সন্দেহ জাগা স্বাভাবিক ।

তাঁর মতে, ‘আজ এতদিন পরে সেদিনের সেই ঘটনার সত্যতা প্রতিষ্ঠা করা কিংবা তাকে অসত্য প্রতিপন্ন করা, উভয়ই রাজনৈতিক’ ।

অনীতা দেবী আরও জানান, সে সময় তাঁর প্রতিবেদনটি ভারতীয় মিডিয়ায় আরও অনেক বড় একটি কেলেংকারি (বফর্স) ফাঁস হওয়ার কারণে ধামা-চাপা পড়ে যায় ।

বুম অনীতা প্রতাপের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে । এ বিষয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেলেই প্রতিবেদনটি হালনাগাদ করা হবে ।

বিভিন্ন বিবরণ থেকে এটা স্পষ্ট যে ১৯৮৭ সালের ডিসেম্বরে লাক্ষাদ্বীপে দ্বীপের উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে রাজীব গান্ধী উপস্থিত ছিলেন । কিন্তু তাঁর ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আইএনএস বিরাট ব্যবহৃত হয়েছিল কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো কঠিন, যেহেতু এ বিষয়ে ঘটনার সময় উপস্থিত নৌ-অফিসারদের বক্তব্যেই পরস্পরবিরোধিতা লক্ষ করা যাচ্ছে ।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে বর্তমান লোকসভা নির্বাচন চলা কালে এই প্রথম প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন, এমনও নয় । এই মাসেই প্রতাপগড়ের একটি জনসভা থেকে তাঁর ভাষণে “রাজীব গান্ধী পয়লা নম্বর ভ্রষ্টাচারী হিসাবেই মারা গিয়েছেন”, এই উক্তির জন্য তিনি বিরোধীদের কাছে প্রবল সমালোচিত হয়েছেন এবং এই প্রশ্নে জনমতও স্পষ্টতই বিভাজিত হয়েছে ।

Related Stories