এক ব্যক্তি ভূত তাড়ানোর অছিলায় একটি মেয়ের নিগ্রহ ও শ্লীলতাহানি করছে, এমন একটি অস্বস্তিকর ভিডিও একটি ভুয়ো বিবরণী সহ সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে যে, এটি গুজরাটের আরএমভিএম স্কুলের ঘটনা ।
ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, এক মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি এক কিশোরীকে চুল ধরে টানছে, নীচে পেড়ে ফেলছে এবং তার অস্থানে হাত দিচ্ছে, যখন এক মহিলা ও একটি শিশু তা দাঁড়িয়ে দেখছে ।
হিন্দিতে ভিডিও ক্লিপটির ক্যাপশন হলঃ “এই ভিডিওটি সব জায়গায় পাঠিয়ে দিন । ইনি বালসাদের আরএমভিএম স্কুলের এক শিক্ষক । ভিডিওটি যতবার সম্ভব শেয়ার করুন । এটি ভাইরাল হলে তার একটা প্রভাব পড়বে । স্কুলটি বন্ধ হয়ে যাবে এবং তদন্তও তাড়াতাড়ি হবে । যাঁদের ভিডিওটি দেখেও দয়া হবে না,তাঁরা না হয় নাই শেয়ার করলেন ।”
এই ভিডিও ক্লিপটি দিল্লি বিজেপির মুখপাত্র তেজিন্দর পাল সিং বাগ্গাও টুইট করেছেন । পরে বুম যখন এটি তুলে ধরে যে, এটি ওই স্কুলকে বদনাম করার জন্য আরও অনেক অনুরূপ ভুয়ো ভিডিওর একটি, তখন সেটি মুছে দেওয়া হয় ।
২০১৭ সাল থেকে ইন্টারনেটে ভুয়ো তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে এই স্কুলটির সুনাম নষ্ট করার অপচেষ্টা চলেছে, যাতে অভিভাবকরা তাতে প্রভাবিত হয়ে তাঁদের বাচ্চাদের এই স্কুলে পড়তে না পাঠান । ফলে স্কুলটিতে ভর্তির সংখ্যাও অনেক কমে গেছে ।
আরও পড়ুনঃ কীভাবে গুজপাটের একটি নামি স্কুলকে ভুয়ো খবর ছড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে
অস্বস্তিকর হওয়ায় বুম ভিডিওটি তার প্রতিবেদনের অন্তর্ভুক্ত না-করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওটিকে মূল ফ্রেমে ভেঙে খোঁজখবর চালিয়ে দেখেছে, এই একই ভিডিও গত বছর ফেব্রুয়ারি মসে দৈনিক ভাস্কর সংবাদপত্র আপলোড করেছিল । ঘটনাটি আসলে রায়পুরের, যেখানে এক পাদ্রি এক কিশোরী মেয়ের ভূত ছাড়ানোর অজুহাতে তার শ্লীলতাহানি করেছিল ।
ঘটনাটি হরিভূমি সংবাদপত্রেও রিপোর্ট হয়েছিল । রিপোর্ট অনুযায়ী দীনেশ সাহু নামে এক ওঝা ও পাদ্রি তার মেয়ের সহপাঠিনীকে এভাবে লাঞ্ছনা করেছিল । ছত্তিশগড়ের চিপলি গ্রামের বাসিন্দা এই কিশোরীর পরিবার রায়পুরের সন্তোষনগরে চলে আসে যেখানে তার উপর এই ভূত ছাড়ানোর লাঞ্ছনা ও শ্লীলতাহানি চলে । ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ দীনেশ সাহুকে গ্রেফতারও করে ।