সামরিক উর্দি পরা দুই মহিলার ছবি ফেসবুকে শেয়ার হচ্ছে, বাংলায় যার ক্যাপশনে লেখা হচ্ছে—ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে নিযুক্ত ভারতীয় সেনাবাহিনীর মহিলা যোদ্ধারা। কিন্তু ওই মহিলারা যে উর্দি পরে আছেন, সেটা অনেকটা কুর্দ পেশমেরগা যোদ্ধাদের উর্দির মতো। ভারতীয় সেনা কর্তৃপক্ষ এখনও যুদ্ধ করার কাজে মহিলাদের নিয়োগ করেনি। ২০১৮ সালের নভেম্বরেই সেনাধ্যক্ষ বিপিন রাওয়াত বলেছেন , ভারতীয় সামরিক বাহিনী এখনও মহিলাদের যুদ্ধ করার কাজে নিয়োগ করতে প্রস্তুত নয়।
গত ২৭ ডিসেম্বর ফেসবুকের ‘ইন্ডিয়ান আর্মি সাপোর্টার’ নামের পেজটিতে পোস্ট হওয়া এই ছবি ও তার ক্যাপশন ইতিমধ্যেই ৩০০০ জন শেয়ার করেছেন। বাংলা ক্যাপশনটিতে লেখা হয়েছে—‘না, আমরা কোনও নায়িকা নই, নিছক পাকিস্তান সীমান্তে সামরিক ডিউটিতে নিযুক্ত। আমরা কি একবার ‘জয় হিন্দ’ পাওয়ার যোগ্য? জানি এ ছবি আপনাদের পছন্দ হবে না, বা আপনারা এটা শেয়ারও করবেন না’।
পোস্টের আর্কাইভ বয়ানটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন ।
গুগলে ফোটোটি নিয়ে একটি রিভার্স ইমেজ সার্চ চালিয়ে বুম দেখেছে, ইরাকের কুর্দ গেরিলাদের মহিলা বাহিনীই সাধারণত এ ধরনের উর্দি ব্যবহার করে। বুম আরও দেখেছে, ২০১৪ সালে অর্থাত্ ৪ বছর আগে প্রথম সোশাল মিডিয়ায় ছবিটি পোস্ট হয়েছিল।
এ কথা ঠিক যে, আমরা ছবিটির ব্যাপারে কোনও অভ্রান্ত, প্রমাণিত উত্স পাইনি। তবে বেশ কিছু সূত্র থেকে অনুমান করা যায় যে, এ ধরনের উর্দি কুর্দিস্তানের পেশমেরগা বাহিনীর মহিলা যোদ্ধারা ব্যবহার করে থাকেন।
পেশমেরগা কথাটির অর্থ—যারা মৃত্যুর মুখোমুখি। উত্তর ইরাকের কুর্দিস্তানে এরা লড়াই চালায়। বিংশ শতকের প্রথমার্ধ্বে অটোমান ও কারাজ সাম্রাজ্যের পতনের পর যে কুর্দ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন তৈরি হয়, সেখান থেকেই এই গেরিলা যোদ্ধারা তাদের অভিযান শুরু করে। পেশমেরগা সম্পর্কে আরও জানতে এখানে পড়ুন।
উর্দির গায়ে যে পতাকা চিহ্নিত রয়েছে, ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলের পতাকাও তেমনই।
সেই সঙ্গে ছবিটিতে মহিলাদের যে মেরুন রঙের টুপি এবং তাতে লাগানো ব্যাজ দেখা যাচ্ছে, তাও কুর্দ গেরিলা বাহিনীরই। তথ্য-সূত্র।
সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী আইসিস-এর বিরুদ্ধে সংগ্রামরত পেশমেরগা গেরিলাদের নিয়ে এবিসি নিউজ যে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে, বুম দেখেছে, সেখানেও মহিলা যোদ্ধাদের এই উর্দিই পরে থাকতে দেখা গেছে । সঙ্গের ভিডিওটিতেও মহিলা যোদ্ধা একই ব্যাজ পরে আছেন ।
যে ধরনের বুট এবং পোশাক যোদ্ধারা পরে আছেন, তাও কুর্দ পেশমেরগা বাহিনীর অনুরূপ ।