ব্রাজিলের বিচ্ছু বলা যেতে পারে তাকে। মহিলার বেশ জেল থেকে পালানোর চেষ্টা করছিল সে। সেই ঘটনার ভিডিওটিই শেয়ার করা হল ভুয়ো দাবির সঙ্গে। বলা হল, ভিন রাজ্যের কোনও মানুষকে নিজের বাড়িতে ঢুকতে দেওয়ার ব্যাপারে সাবধান করে দিয়েছে কেরল পুলিশ, কারণ তারা অপরাধী হতে পারে।
ভিডিওটির সঙ্গে মালায়লম ভাষায় যে ক্যাপশনটি রয়েছে, তাতে লেখা হয়েছে, “উত্তর ভারতের কিছু মানুষ কেরলে উলের জামাকাপড় বিক্রি করতে এসেছে। তাদের বাড়ির ভিতরে ঢুকতে দেবেন না। আন্তঃরাজ্য পুলিশ এই বার্তাটি দিয়েছে।”
(মূল মেসেজটি এ রকম: കമ്പിളി വില്ക്കാനായി കേരളത്തില് വന്ന north Indians ആണ് ഈഫോട്ടോയില് കാണുന്ന ആരേയും യാതൊരു കാരണവശാലും വീട്ടില് കയറ്റരുത് കൊടും കുറ്റവാളികളാണ്
Important message from inter state police ഈ message എല്ലാവരും പരമാവധി family groupil forward. ചെയ്യുക…)
পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
ফেসবুকে ভাইরাল
আমরা ক্যাপশন সার্চ করে দেখি সার্চ করে দেখি ভিডিওটি ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে।
বুমের হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইন নম্বরেও (৭৭০০৯০৬১১১) একজন এই মেসেজটি পাঠিয়ে জানতে চান, এটি সত্য কি না।
তথ্য যাচাই
ভিডিওটি আসলে ব্রাজিলের এক জেলবন্দির। তার কিশোরী মেয়ে তাকে জেলে দেখতে এসেছিল। এই সুযোগেই সে মেয়ের ছদ্মবেশে জেল থেকে পালানোর চেষ্টা করে, কিন্তু ধরা পড়ে যায়।
কেরলে পুলিশের সতর্কবার্তা হিসেবে যে ভিডিয়োটি ঘুরছে, তার সঙ্গে এই ভিডিয়োটি সম্পূর্ণ মিলে যায়। এক মিনিট পাঁচ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে শোনা যাচ্ছে যে লোকটি পর্তুগিজ ভাষায় কথা বলছে।
ভিডিওটিতে যে লোকটিকে দেখা যাচ্ছে, সে আসলে রিও ডি জেনেইরো-র ড্রাগ চোরাচালানকারী ক্লভিনো ডা সিলভা। রেড কম্যান্ড ড্রাগ ফ্যাকশনে যুক্ত থাকার অপরাধে তার ৭৩ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে।
সিলভা জেল থেকে পালানোর জন্য মেয়েদের মুখের সিলিকন মুখোশ পরে, মাথায় লম্বা কালো পরচুলা লাহায়। তার ধারণা ছিল, এই ছদ্মবেশে তাকে জেলের রক্ষীরা তার ১৯ বছর বয়সী মেয়ে বলে ভুল করবেন, এবং বেরোতে দেবেন। জেলের ভিজিটিং আওয়ার্স শেষ হওয়ার পরই সিলভা পালানোর চেষ্টা করে। ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকা এই সংবাদটি প্রকাশ করে।
দ্য গার্ডিয়ানের সংবাদ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সিলভা যখন জেলের দরজায় গিয়ে নিজের মেয়ের পরিচয়পত্রটি ফেরত চায়, উপস্থিত রক্ষীরা তার ছদ্মবেশ বুঝতে পারেন এবং ক্যামেরার সামনে নিজের সব পোশাক খুলতে আদেশ দেন।
আধিকারিকরা পরে এই ভিডিওটি অনলাইনে আপলোড করেন এবং তা ব্রাজিলসহ গোটা দুনিয়াতেই ভাইরাল হয়। যে মুখোশটি পরে সিলভা পালানোর চেষ্টা করেছিল, সেটা অত্যন্ত বিচিত্র, আর তাতেই ভিডিওটি জনপ্রিয় হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। দুঃখজনক ভাবে, এই ঘটনার কিছু ক্ষণ পরেই সিলভাকে তার জেলের সেলে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সিলভা সম্ভবত আত্মহত্যা করেছে। ২০১৯ সালের ৬ অগস্ট দ্য গার্ডিয়ানে এই সংবাদটি প্রকাশিত হয়।
তা ছাড়াও, কেরল পুলিশ এই গোত্রের কোনও সতর্কবার্তা জারি করেছে, সে রকম কোনও সংবাদ প্রতিবেদন অনেক খোঁজার পরেও আমাদের চোখে পড়েনি।