কতই বা বয়স হবে রাজদ্বীপ নস্করের। সদ্য কলেজর পাঠ ছেড়েছে হাওড়ার ওই তরুন। সরশুনা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র ছিল সে। অবসর বিনোদন বা শখ বলতে মিম বানানো; এই মিম তৈরিই তার ধ্যান-জ্ঞান। ফেসবুকে কয়েকটি জনপ্রিয় মিম তৈরির পেজের অ্যাডমিন সে। চলতি নানা ঘটনাবলী থেকে নামকরা ব্যক্তিত্ব। তাদের মিম থেকে রেহাই পায়না কেউ।
সম্প্রতি বাংলার নেটিজেন সমাজ থেকে মূলধারার গণমাধ্যম মেতে ছিল ধুপগুড়ির প্রেমিক যুগলে। অনন্ত বর্মণ তার প্রেমিকা লিপিকার সঙ্গে শুভ পরিণয়ের দাবিতে অনশন ও ধর্ণায় বসেছিল প্রেমিকার বাড়ির সামনে। খবরে প্রকাশ লিপিকার সঙ্গে আট বছরের প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল তার। আকস্মিক লিপিকার সঙ্গে অনন্তর ফোনে বার্তালাপ বন্ধ হসে যায়। অন্য পাত্রের সঙ্গে বিয়ের সম্বন্ধও নাকি শুরু হয়েছিল। বিয়ে রুখে প্রণয়িনীকে ফিরে পেতেই নাকি অভিনব এই পন্থা।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যখন নেটিজেনরা মিম, মন্তব্য, বিয়ের স্বপক্ষে কিংবা মেয়েটির স্বাধীনতার প্রশ্নে উত্তাল। সেসময় রাজদ্বীপ নস্করের কয়েকজন বন্ধু নেহাত খেলার ছলে একটি সংবাদপত্রের শিরোনামকে বিকৃত করে রাজদ্বীপ নস্করের ছবি সহ একটি মিম শেয়ার করে। সেই মিম-এ শিরোনাম লেখা হয়, ‘‘এক্স গার্লফ্রেন্ডের থেকে বদলা নিতে তার বাড়ির উঠানে মলত্যাগ করতে গিয়ে পাড়ার লোকজনের কাছে গণপিটুনি খেলেন রজদ্বীপ নস্কর।’’
বুম এমনকি খবরের কাগজের ভুয়ো বিবৃতিটি তার হেল্পলাইনেও পায়।
গোড়ারদিকে ৪০ টির বেশি শেয়ার জোটেনি সে পোস্টের। পরে পোস্টটি মুছে দেওয়া হয়। অথচ, দিনকয়েক পরেও সোশ্যল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে শুরু করে সে মিম। ফেসবুকের দেওয়াল পেরিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে সে মিম যখন হাত ঘুরে রাজদ্বীপের বন্ধুমহলে ফিরে আসে, টনক নড়ে তখন। রাজদ্বীপ তার নিজস্ব ফেসবুক পেজে বিবৃতি দিতে বাধ্য হয়। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে। নীচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেওয়া হল।
বুম আজকাল সংবাদপত্রের ১৯ মে ২০১৯ তারিখের আসল কপির ই-পেপার খুঁজে পেয়েছে। ভালো ভাবে নজর করলে মিম করা কাগজটি ও সংবাদপত্রের হরফের ধরন ও আকারের তারতম্য বোঝা যায়। কিন্তু সাধারন পাঠকের কাছে আসল নকলের তফাত বোঝা মুশকিল।
বুমের তরফে রাজদ্বীপের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। সে এই মিম ভাইরাল হওয়ায় ব্যক্তিগত সম্মানহানিতে ভীত। বুম সম্পাদকীয় বিভাগ ফেক নিউজের ভয়াবহতা ও ভবিষ্যত জীবনে তার সম্ভাব্য প্রভাব পর্যালোচনা করে রাজদ্বীপের পরিচয়ের সত্যতা পাঠকের কাছে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রাজদ্বীপ বলে, "আমি প্রথমে খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম, যখন মিম টা ভাইরাল হয়ে যায়। পরে আমাকে আরও অনেক পেজ অ্যাডমিন পরামর্শ দেয়। ওরা বলে যে কিছু জিনিস যে গুলি নিমেষের মধ্যে ভাইরাল হয়, সেগুলি আবার কিছু দিন পরে নিজে থেকেই থিতিয়ে যায়। আমিও এখন তাই আশা করছি।"
সংবাদপত্রের শিরোনামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য বিকৃতি নিয়ে বুমের প্রকাশিত আগের প্রতিবেদনটি পড়া যাবে এখানে।