যোগী আদিত্যনাথ বসে আছেন এবং তাঁর শাকরেদরা গ্রামবাসীদের মধ্যে টাকা বিলোচ্ছে, এমন একটি পুরনো ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় জিইয়ে তোলা হয়েছে এই বলে যে, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আসলে এই ভাবে হবু ভোটারদের মধ্যে টাকা ছড়াচ্ছেন । ভিডিওটির সঙ্গে ক্যাপশন জোড়া হয়েছে—“ভারতের নির্বাচন কমিশন কোথায়?” সুস্পষ্ট ইঙ্গিত হল, ভোট কেনার জন্য টাকা বিলনো হচ্ছে, আর মুখ্যমন্ত্রী গোটা ব্যাপারটার সরেজমিন তদারকি করছেন ।
ভিডিওটি পোস্ট করেছেন জনৈক আতিক খান আই সাপোর্ট রবীশ কুমার এনডিটিভি , এই গ্রুপে । পোস্টটি ইতিমধ্যেই ৭৬০০০ বার শেয়ার হয়েছে । ভিডিওটি দেখতে এখানে এবং তার আর্কাইভ সংস্করণ দেখতে এখানে ক্লিক করুন ।
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওটির একটি স্ক্রিনশটের খোঁজখবর লাগিয়ে একটি অনুরূপ ছবি পায়, কিন্তু যখন তার লিংকে সংযোগ করা হয়, তখন সম্পূর্ণ অন্য একটি ভিডিও নজরে আসে ।
বুম তখন ওই লিংক থেকেই বিনয়কুমার গৌতমের পেজটি অনুসন্ধান করে এবং সেখানে এই ভিডিওটির সন্ধান পায় ।
ভিডিওটি সেই সময়কার, যখন যোগী আদিত্যনাথ গোরক্ষপুরের নির্বাচিত সাংসদ ছিলেন ।
ভিডিও ক্লিপটিতে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তি একজন করে লোকের নাম ডাকছে এবং তার হাতে টাকা তুলে দিচ্ছে । এক সময় যে নাম ডাকছিল, তাকে বলতে শোনা যাচ্ছে—“ফাগুলাল, এটা কি তোমার ভাইয়ের নাম? তোমরা কি দু জায়গায় চাষ করেছো?”
তাতে লোকটি উত্তর দিচ্ছে—‘হ্যাঁ, আমরা একই ফসল দুটো জমিতে চাষ করেছিলাম’ । তখন যোগী আদিত্যনাথকে বলতে শোনা যাচ্ছে—‘ওটা নিশ্চয় ওর ভাইয়ের জমি, ওকে ডাকো’ । এই কথোপকথন থেকে মনে হয়, বণ্টন হওয়া টাকা নষ্ট ফসলের ক্ষতিপূরণ বাবদ ।
তথ্য যাচাই করে সংবাদ-পোর্টাল দ্য কুইন্টও এই সিদ্ধান্তে পৌঁছয় যে, ২০১২ সালের এপ্রিলে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ফসলের প্রভূত ক্ষতি হলে গোরক্ষপুরের তদানীন্তন এমপি আদিত্যনাথ ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের মধ্যে ক্ষতিপূরণ বাবদ ডোল বিতরণ করেন ।
“গোরক্ষপুরের বেশ কয়েকটি ফসলের খামার সে সময় জ্বলে গিয়েছিল । যে সব কৃষকের ফসল পুড়ে যায়, তাদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে সেখানকার সাংসদ আদিত্যনাথ এগিয়ে আসেন । তিনি জমির পরিমাণ অনুযায়ী পরিবার-পিছু ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা বিতরণ করেন” বলে বিনয়কুমার গৌতম কুইন্টকে জানিয়েছিলেন ।