ফেসবুকে একটি উষ্ণপ্রস্রবণ বা পাইপে ফাটলের স্তম্ভাকার জলধারার ভিডিও শেয়ার করে ভুয়ো দাবি করা হয়েছে সেটি আফ্রিকার মোজাম্বিকের এক গ্রামের পাশে মেঘ থেকে জলপ্রপাতের মত মাটিতে নেমে আসা জলের ধারা। পোস্টটির আরও দাবি, দেড় ঘন্টার ওই ঘটনায় মাটিতে জল পড়ার পর সমস্ত জলই মাটি শুষে নেয়। সামান্য জলও চলকে বা গড়িয়ে কোনও দিকে যায়নি।
এক মিনিট ৫০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে আকাশের মেঘ থেকে জলপ্রপাতের মত একটি জলের ধারা নেমে আসেছে। এবং ওই জল ধারা মাটিতে মিশে যাচ্ছে। চারপাশে অনেকজন ভীড় করে সেটি দেখছে।
বুমের হেল্পলাইন (৭৭০০৯০৬১১১)-এ এই ভিডিওটি একজন পাঠক প্রেরণ করেছেন। তিনি জানতে চেয়েছেন সেটি মেঘ থেকে জলপ্রপাতের মত মাটিতে নেমে আসা জলধারা কীনা।
বুম কে পাঠানো মেসেজটিতে লেখা হয়েছে, ‘‘প্রকৃতির কি অপরূপ খেয়াল ------------
আফ্রিকার মোজাম্বিকের এক গ্রামের পাশে মেঘ থেকে জলপ্রপাতের মত জল একটা ধারায় মাটিতে নেমে আসে এবং সমস্ত জলই মাটিতে শুষে নেয়। সামান্য জলও ছলকে বা গড়িয়ে কোন দিকে যায়নি। ঐ রকম ধারায় প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে জল পড়েছিল।’’
ভিডিওটি নীচে দেওয়া হল।
তথ্য যাচাই
বুম যাচাই করে দেখেছে এটি আফ্রিকার মোজাম্বিকের কোনও গ্রামের ঘটনা নয়। বরং, ইন্টারনেটে ছড়ানো জনপ্রিয় গুজব গুলির মধ্যে অন্যতম।
এটি একটি সাধারণ উষ্ণপ্রস্রবণের ধারা অথবা পাইপে ফাটলের ফলে জল নির্গত হয়ে থাকতে পারে। যেখানে চলকে চলকে ওই ধারা আকাশে উঠছে।
ভালো করে খেয়াল করলে এই জলধারা যে নীচে থেকে উঠছে তা বোঝা যায়। জল ও আকেশের রঙ এক হওয়ায় দৃষ্টিভ্রম ঘটে। ভালো করে লক্ষ করলে জলের ১ মিনিট ১৭ সময় এ স্তম্ভটির ওঠানামা লক্ষ করা য়ায়।
‘ওয়াটার ফ্লোস ফ্রম স্কাই’ লিখে ইউটিউবে সার্চ করলে ‘ওয়াটার পোরিং ফ্রম স্কাই’, ‘স্ট্রেঞ্জ রেনফল ইন ট্যাঙ্গো’, 'আফ্রিকার ঘটনা' প্রভৃতি নামে ওই একই ভিডিওর হদিস মেলে। ৩ বছরের পুরনো সেগুলি।
ঘানার এ্যাকোসোম্বোর রাস্তা ফেটে যাওয়ায় উচ্চচাপে এমনভাবে জল নির্গত হয়েছিল একবার। বুমের পাঠকদের বোঝার সুবিধার্থে স্তম্ভাকার জলধারার ওই ভিডিওটি দেওয়া হল।
২০১৬ সালে ওই একই ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। তখন ভুঁয়ো দাবি করা হয়েছিল আকাশের এক জায়গা থেকে ট্যাঙ্গো-তে বৃষ্টি হচ্ছে। আবার কেউ কেউ বলে এটি ইন্দোনেশিয়া, চিন কিংবা ভিয়েতনামের ঘটনা। সেসময় একই ভিডিও ঘিরে ছড়ানো বিভ্রান্তিমূলক দাবিগুলি স্নোপস খন্ডন করে।