২০১৬ সালে বাংলাদেশের ঢাকার রক্ত মেশা জলস্রোতের ছবি ফের ভাইরাল
বুম দেখে ছবিটি ঢাকায় ২০১৬ সালে তোলা। ইদের পরের দিন অতি বৃষ্টি ও খারাপ নিকাশির ফলে কুরবানির প্রাণীর রক্তে রাস্তা লাল হয়।
ইদ-আল-আজহার (Eid Al-Adha) পরে বাংলাদেশের (Bangladesh) ঢাকার রাস্তায় কুরবানি হওয়া প্রাণীদের (Animal Sacrifice) রক্ত মিশ্রিত জমে থাকা জলের পুরনো ছবি সোশাল মিডিয়ায় মিথ্যে দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে।
২১ জুলাই, ২০২১ কুরবানির পরব ইদ-আল-আজহার পরের দিন থেকে ছবিটি ছড়াতে থাকে। ভাইরাল ছবিটিতে একটি রিক্সাকে জলমগ্ন রাস্তা দিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। পরবের পরের দিন ঢাকায় কুরবানি দেওয়া প্রাণীদের রক্ত মিশে জলের স্রোতের রঙ লাল হতে দেখা যায়।
হিন্দিতে লেখা ক্যাপশন সমেত ছবিটি শেয়ার করা হচ্ছে। তাতে বলা হয়েছে, "কিছু ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তি গতকাল আমায় জিজ্ঞেস করেন, আমি ইদে শুভেচ্ছা জানাইনি কেন? আমি বলি, একটু অপেক্ষা করুন। ইদ উদযাপনের জন্য বিকেলে রুহ আফজা সরবতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খেয়ে যদি ভাল লাগে আমাকে জানাবেন। আমি তখন ইদ মুবারক জানাবো। আমার ধর্মনিরপেক্ষ ভাইরা, হাতে জগ নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন। আপনার পানীয় উপভোগ করুন...একটা সরবতের নদী বয়ে যাচ্ছে।"
ফেসবুক পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
(হিন্দিতে লেখা ক্যাপশন: कल कुछ सेक्युलर लोगों ने मुझे कहा कि आपने ईद की मुबारकबाद क्यों नहीं दी ? मैंने कहा कि अभी थोड़ा रुकिए ईद की खुशी में आपके लिए शाम तक रूह अफजा शर्बत का प्रबंध किया गया है उसे पीकर दिखाना फिर अच्छा लगे तो मुझे बताना, उसके बाद आपको मुबारकवाद दूँग। तो सेक्युलर भाइयो आप लोग हाथ में जग लेकर जाओ और मौज से पियो..नदी बह रही है शर्बत की)
একই পরিপ্রেক্ষিতে ছবিটি টুইটারেও শেয়ার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুস্তিতে প্রিয়া মালিকের সোনা জয় ভুল করে ছড়াল টোকিও অলিম্পিক বলে
তথ্য যাচাই
বুম ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখে যে, সেটি ঢাকায় ইদ উদযাপনের সময় তোলা।
সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৬ 'নিউজলন্ড্রি'তে একটি খবর ছাপা হয় যাক শিরোনাম লেখা হয়, "এই ইদে ঢাকার রাস্তায় 'রক্তের নদী' বয়ে যায়। কেন তা জানুন"। 'ঢাকা ট্রিবিউন'-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের সঙ্গেও ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছিল। তাতে বলা হয়, সোশাল মিডিয়া সূত্র থেকে ছবিটি পাওয়া যায়।
'দ্য গার্ডিয়ান'-এ প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, "ঢাকার প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ জানায় যে, পরবের আগে কুরবানির জন্য বিশেষ জায়গা নির্ধারিত করা হয় যাতে প্রাণীদের রক্ত আর মত প্রাণীর অবশিষ্টাংশ সহজেই পরিষ্কার করা যায়।"
কিন্তু বেশির ভাগ বাসিন্দাই ওই নির্দিষ্ট জায়গায় না গিয়ে, নিজেদের বাড়ির গ্যারাজে বা রাস্তায় কুরবানি দেন।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬'র ওই ঘটনা সম্পর্কে বুম একটা ভিডিও রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল।
ঢাকার বাসিন্দাদের কাছে খারাপ নিকাশি ব্যবস্থা এক দীর্ঘ দিনের সমস্যা। ২০১৭ সালে সেপ্টেম্বর মাসে রক্ত মেশা বৃষ্টির জলে এক নাবালিকার দাঁড়িয়ে থাকার ছবি ভাইরাল হয়। বুম সেই ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বাংলাদেশের ওই ধরনের ছবি প্রায়শই ব্যবহার করে ভারতের মুসলমানদেরনিশানা করা হয়।