পাকিস্তানের কাছে মোদী-শাহর ক্ষমা চাওয়ার AI ভিডিও ভাইরাল
বুম দেখে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পাকিস্তানের কাছে হার মানা ও ক্ষমা চাওয়ার ভিডিওগুলি এআই প্রয়োগে তৈরি ডিপফেক।



ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) পাকিস্তানের (Pakistan) কাছে হার স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার (apologise) ডিপফেক (deepfake) ভিডিও ভারত-পাক সংঘাতের আবহে সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
বুম যাচাই করে ভিডিওগুলিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগের স্পষ্ট চিহ্ন পায় এবং আমাদের নিশ্চিত হতে সাহায্য করে বিভিন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যাচাইকারী ওয়েবসাইট।
ভারতের অপারেশন সিঁদুরের পরিপ্রেক্ষিতে, পাকিস্তানের তরফ থেকে পাল্টা হামলার আবহে ভিডিওটি ভাইরাল হয়। গত ১০ মে বিকেল ৫টা থেকে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয় যদিও কয়েক ঘন্টার মধ্যেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে যা ওই দেশ পরে অস্বীকার করে।
পাকিস্তানের কাছে অমিত শাহর হার স্বীকার করা ভিডিওটি ফেসবুকে শেয়ার করে এক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, "স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আমিত শাহ বাংলাদেশ পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করে ভারতের মুসলিম সহ সকলের কাছে ক্ষমা চাইলেন।"
পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
একই রকম বক্তব্যসহ প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভিডিও পোস্ট করে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ক্যাপশনে লেখেন, "মোদি হাতজোড় করে পাকিস্তানের কাছে ক্ষমা চাচ্ছে আরো বেশি করে গরুর গোমূত্র খাও সবাই শেয়ার দিন।"
পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
তথ্য যাচাই: ভাইরাল ভিডিও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি
বুম দেখে ভাইরাল দুটি ভিডিওই ভুয়ো এবং শুধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহই নন, কোনও ভারতীয় নেতারই পাকিস্তানের কাছে হার স্বীকার বা ক্ষমা চাওয়ার কোনও বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদন পাওয়া যায় না।
আমরা ভিডিও দুটি পর্যবেক্ষণ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার হওয়ার চিহ্ন লক্ষ্য করেছি যেমন কণ্ঠস্বরগুলি মোদী বা শাহর স্বাভাবিক কণ্ঠস্বরের চেয়ে বেশি তীক্ষ্ণ এবং কথোপকথন ও বক্তব্যের শৈলী অত্যন্ত অস্বাভাবিক ও যান্ত্রিক ছিল। আমরা কণ্ঠস্বরের সাথে ঠোঁটের নড়াচড়ার অমিল ছাড়াও বিভিন্ন অভিব্যক্তিমূলক অসঙ্গতি লক্ষ্য করি।
এর থেকে ইঙ্গিত নিয়ে, আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যাচাইকারী হাইভ মডারেশনের ভিডিও ডিটেক্টরে ভাইরাল ভিডিও দুটি পরীক্ষা করি। হাইভ মডারেশনে পরীক্ষার ফল অনুযায়ী ভিডিওগুলি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগে তৈরি হওয়ার উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে। নীচে ফলাফলগুলি দেখা যাবে।
এছাড়াও, আমরা ভিডিওগুলির অডিও আলাদা করে সেগুলিকে বাফেলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরির মিডিয়া ফরেন্সিক্স ল্যাবের ডিপফেক-ও-মিটারে ভয়েস ক্লোনিং ও এআই অডিও সনাক্তকরণের বিভিন্ন সরঞ্জামের পরীক্ষা করি। ডিপফেক-ও-মিটারে বেশিরভাগ এআই অডিও সনাক্তকরণ মডেলের পরীক্ষায় অডিও দুটিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার হওয়ার উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা পাওয়া যায়। ফলাফল নীচে দেখা যাবে।