বাংলাদেশে অপহৃত হিন্দু মেয়ের বাবাকে মারধর বলে ভাইরাল অসম্পর্কিত ভিডিও
বুম দেখে ভাইরাল ভিডিওটি বাংলাদেশে একাধিক মামলায় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা নির্মলেন্দু দাস রানাকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার।

অনেকে মিলে এক ব্যক্তিকে মারধর করার একটি ভিডিও সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে সম্প্রতি। ব্যবহারকারীরা ভিডিওটি শেয়ার করে ভুয়ো দাবি করেছেন বাংলাদেশে (Bangladesh) এক মুসলিম (Muslim) ব্যক্তির দ্বারা মেয়ের অপহরণের (kidnapping) প্রতিবাদ করায় এক হিন্দু বাবাকে (Hindu father) মুসলিম জনতা মারধর করছে।
বুম যাচাই করে দেখে ভাইরাল ভিডিওতে উত্তপ্ত জনতার আওয়ামী লীগ নেতা নির্মলেন্দু দাস রানাকে মারধরের দৃশ্য দেখা যায়।
ভাইরাল দাবি
৩১ সেকেন্ডের ভাইরাল ভিডিওটি পোস্ট করে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ক্যাপশনে দাবি করেন, "বাংলাদেশের নওগায় একটি মুসলিম আব্দুল হামিদ একটা হিন্দু মেয়ে অঞ্জনা রায়কে অপহরণ করে দুঃখের বিষয় তার বাবা হারাধন রায় প্রতিবাদ করলে এই জিহাদি মুসলিমরা তাকে গুরুতরভাবে মেরে আহত করে এখনো পর্যন্ত অঞ্জনা রায়ের কোন খোঁজ মেলেনি প্রত্যেকের কাছে অনুরোধ ভিডিওটি দেখুন এবং সকলের কাছে পৌঁছে দিন।"
পোস্টের আর্কাইভ দেখুন এখানে।
অনুসন্ধানে আমরা কি পেলাম: ভিডিওটি আওয়ামী লীগ নেতা নির্মলেন্দু দাস রানাকে মারধরের ঘটনার
বুম গুগলে কিওয়ার্ড সার্চ করে বাংলাদেশে অপহৃত অঞ্জনা রায়ের বাবা হারাধন রায়কে মারধর করা নিয়ে কোনও বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদন খুঁজে পায়নি।
এরপর, আমরা রিভার্স ইমেজ সার্চ করে, ভাইরাল ভিডিওর স্ক্রিনশটসহ বাংলা ট্রিবিউনের একটি প্রতিবেদন পাই। প্রতিবেদনে ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে বাংলাদেশের করগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু দাস রানা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।
১. ভাইরাল ভিডিওর দীর্ঘতর সংস্করণ
বুম সম্পর্কিত কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ফেসবুকে ভাইরাল ভিডিওর একটি দীর্ঘতর সংস্করণ পায়। ১৪ মে, ২০২৫-এ পোস্ট করা ভিডিওয় দেখা যায় নির্মলেন্দু দাস রানাকে কয়েকজন মিলে একটি খাবারের দোকান থেকে বের করে মারধর করতে শুরু করে।
২. নির্মলেন্দু দাস রানা পলাতক ছিলেন
আমরা এই ঘটনা সংক্রান্ত দেশ টিভির প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি, ১৩ মে, ২০২৫ তারিখে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী মডেল থানার লামাবাজার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহত রানাকে উদ্ধার করে গ্রেফতার করে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নির্মলেন্দু দাস রানা নানা ধরণের দুর্নীতিতে যুক্ত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে কোটা আন্দোলনের সময় ছাত্র আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করানোর অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়াও, একটি মামলায় প্রধান আসামি হিসাবে অভিযুক্ত হওয়ার থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন।