পারমাণবিক বিকিরণে অসুস্থ পাক মন্ত্রী দাবিতে ছড়াল পুরনো, অসম্পর্কিত ভিডিও
বুম দেখে ভাইরাল ভিডিওয় ২০২৩ সালে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতা ফাওয়াদ চৌধুরীকে ফের গ্রেফতার হওয়ার আশঙ্কায় পালাতে দেখা যায়।



ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের (India-Pakistan conflict) আবহে, পারমাণবিক বিকিরণে (nuclear radiation) অসুস্থ পাক মন্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দাবি করে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ব্যক্তিকে দুদিক থেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
বুম দেখে ২০২৩ সালের এই ভিডিওয় পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতা ফাওয়াদ চৌধুরীকে দেখা যায়। তিনি পুলিশের হাতে পুনরায় গ্রেফতার হওয়ার আশঙ্কায় পালানোর সময় ভিডিওটি তোলা হয় এবং এই ঘটনার সঙ্গে অপারেশন সিঁদুরের কোনও সম্পর্ক নেই।
পাকিস্তানের পারমাণবিক স্থাপত্য কিরানা পাহাড়ে ভারতের প্রত্যাঘাতে পারমাণবিক বিকিরণ শুরু হয়েছে দাবি নিয়ে নানা জল্পনা ছড়ায় গণমাধ্যমে। যদিও, ভারতীয় সেনার তরফ থেকে গত ১২ মে-র সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি অস্বীকার করা হয়।
সমাজমাধ্যমে পারমাণবিক বিকিরণ সম্পর্কে পাকিস্তান সরকারের ঘোষণা দাবিতে ভাইরাল হয় একটি ভুয়ো বিজ্ঞপ্তি যা বুম যাচাই করে খণ্ডন করে। পড়ুন এখানে।
পাকিস্তানে পারমাণবিক বিকিরণ সম্পর্কে নানা জল্পনার মধ্যেই ৬ সেকেন্ডের ক্লিপটি ভাইরাল হয় যেখানে এক আপাত দৃষ্টিতে অসুস্থ ব্যক্তিকে সাহায্য করে ধরে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে দাবি করেন, "রেডিয়েশন আক্রান্ত পাকিস্তান মন্ত্রী পারমাণবিক বিকিরণ লিক হওয়ার কারণে পাকিস্তান ভুগছে...মন্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঝাড় যেমন বাচতো তেমনি হবে এবার নিজেরাই ভোগ কর।"

পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম ভাইরাল দাবিটির সত্যতা যাচাই করতে প্রথমে গুগলে ভিডিওটির কিফ্রেমের রিভার্স ইমেজ সার্চ করে অনুরূপ দৃশ্যসহ ফার্স্টপোস্টের একটি প্রতিবেদন পায়। ১৬ মে, ২০২৩-এ প্রকাশিত রিপোর্টটি অনুসারে, ফাওয়াদ চৌধুরীকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের দিকে দৌড়তে দেখা যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ইমরান খান গ্রেফতার হওয়ার পরই ২০২৩ সালের ১০ মে ফাওয়াদ চৌধুরীকে পাক পুলিশ আটক করে। ইসলামাবাদ হাইকোর্ট তার গ্রেফতারিকে বেআইনি বলে এবং চৌধুরীকে গ্রেফতার হওয়ার থেকে সুরক্ষা প্রদান করে তাকে পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্তি দেয়।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদন অনুসারে, ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ফাওয়াদ যখন তার গাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন, ইসলামাবাদ পুলিশ তাকে পুনরায় গ্রেফতার করার চেষ্টা করেন। পুলিশের বিরুদ্ধে আদালত চত্বরের সব প্রবেশ পথ বন্ধ করারও অভিযোগ করা হয়।
রিপোর্টটি থেকে জানা যায়, এরপরই ওই পিটিআই নেতা তার গ্রেফতারি এড়াতে ফের আদালতের উদ্দেশ্যে দৌড়ান।
এরথেকে পাওয়া তথ্যের সূত্র ধরে, আমরা ইউটিউবে একটি সম্পর্কিত কিওয়ার্ড সার্চ করে ২০২৩ সালে ফাওয়াদ চৌধুরীর আদালতের দিকে দৌড়ানোর একাধিক ভিডিও প্রতিবেদন দেখতে পাই।
১৬ মে, ২০২৩-এ হিন্দুস্তান টাইমসের আপলোড করা প্রতিবেদনে ভাইরাল ক্লিপের দৃশ্য দেখা যায়।