ভারতীয় সেনা চিনের সেনাদের ধরেছে—দাবির ভিডিওটি সিনেমার শুটিংয়ের দৃশ্য
বুম দেখে মুক্তির অপেক্ষায়-থাকা এল.এ.সি. নামের একটি ফিল্মের দৃশ্য সোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো দাবি সহ ছড়াচ্ছে।
মুক্তির অপেক্ষায়-থাকা একটি সিনেমার দৃশ্য (Movie Scene) এই মিথ্যে দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে যে, ভারতীয় জওয়ানদের (Indian Army) চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (PLA) সেনাদের গ্রেফতার করতে দেখা যাচ্ছে ওই ভিডিওতে।
৮ অক্টোবর, ভারতের বেশ কয়েকটি সংবাদ সংস্থা তাদের প্রতিবেদনে জানায় যে, অরুণাচলপ্রদেশের তাওয়াং অঞ্চলে ভারতীয় সেনাদের সঙ্গে এক সংঘর্ষের সময়, ২০০ চিনা সেনাকে গ্রেফতার করা হয়। ভারতীয় আধিকারিকদের বক্তব্য উদ্ধৃত করে হিন্দুস্থান টাইমস লেখে, "প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাটি ঠিক কোথায়, তা নিয়ে মতপার্থক্য থাকার ফলে, দু'তরফের মধ্যে বচসা বেধে যায়। ওই নিয়ন্ত্রণ রেখা দু'দেশের মধ্যে সীমানার কাজ করে।" ওই রিপোর্টে চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান'র বক্তব্যও ছাপা হয়। উনি বলেন, ওই ঘটনা সম্পর্কে তাঁর কাছে কোনও "প্রাসঙ্গিক তথ্য" নেই।
ফেসবুকে প্রচারিত ওই ছবিটির সঙ্গে দেওয়া ক্যাপশনে বলা হয়েছে, "রাহুল গাঁধী কখনও টু্ইট করে জানাবেন না যে, অরুণাচলে ভারতীয় জওয়ানরা একশ'রও বেশি চিনা সেনাকে গ্রেফতার করে। এবং চিনা ও ভারতীয় সেনা কমান্ডারদের মধ্যে আলোচনার পরই তাদের ছাড়া হয়। এটা হল পরিবর্তনশীল ভারত।"
(হিন্দিতে মূল ক্যাপশন: राहुल गांधी कभी इस पर ट्वीट नहीं करेगा कि भारतीय सेना ने अरुणाचल में डेढ़ सौ से ज्यादा चीनी सैनिकों को बंदी बना लिया, फिर जब चीन के सेना के कमांडर और भारतीय कमांडर के बीच में मीटिंग हुई उसके बाद ही उन्हें छोड़ा गया)
পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
ওই মিথ্যে ক্যাপশন সমেত ছবিটি, 'দ্য জাইডুলিকস' নামের একটি টুইটার হ্যান্ডেল থেকে ছড়ানো হয়। মিথ্যে খবর ছড়ানোর জন্য বুম আগেও ওই হ্যান্ডেলটি যাচাই করে দেখে। সেই তথ্য-যাচাই পড়তে ক্লিক করুন এখানে।
টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
আরও পড়ুন: বাসে এক মহিলাকে এক ব্যক্তির শ্লীলতাহানির ভিডিওটি পাকিস্তানের
তথ্য যাচাই
বুম দেখে ছবিটি মুক্তির অপেক্ষায়-থাকা একটি বলিউড ফিল্মের দৃশ্য। ভারতের কার্গিলে তোলা ওই ছবিটির নাম এল.এ.সি। ওই ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখা যায় যে, কয়েকটি চিনা খবরের ওয়েবসাইট ওই ছবিটি ব্যবহার করে। গালওয়ান সংঘর্ষের ওপর বলিউড একটি ফিল্ম তৈরি করছে, এই মর্মে একটি খবরের সঙ্গে ছবিটি ছাপা হয়। ওই রিপোর্টে ফিল্মটি থেকে আরও কয়েকটি ছবি ব্যবহার করে বলা হয়, কিছু অসঙ্গতির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
এটিকে সূত্র ধরে আমরা ইউটিউবে সার্চ করি। দেখা যায়, 'মার্শিয়াল আর্ট লাদাখ' নামের একটি চ্যানেল, ভাইরাল ছবিতে যে দৃশ্য দেখা যাচ্ছে সেরকমই ভিডিও আপলোড করেছিল।
ভিডিওটির বিবরণে বলা হয়: "লাদাখের কার্গিলে এল.এ.সি ফিল্মের শুটিংয়ের নেপথ্য দৃশ্য।"
ইউটিউব ভিডিওটি থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট।
ভাইরাল ছবিটিকে স্ক্রিনশটটির সঙ্গে মিলিয়ে দেখলে, অনেক সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।
ইউটিউব ভিডিওটির কয়েক জায়গায় লেখা ছিল, "কোরিওগ্রাফি টোনি জা (জাকির)"। ওই নাম দিয়ে ফেসবুকে সার্চ করলে, একজন মার্শিয়াল আর্টের প্রশিক্ষককের পরিচিতি সামনে আসে। ভাইরাল ছবিটি সহ তাঁর একটি পোস্টে উনি লেখেন, "এল.এ.সি সিনেমাটিকে গোদি (কোলে-বসা মাধ্যম) কোথায় নিয়ে গেছে।" (পোস্টটি বর্তমানে ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে)