২০১৮ সালের এক প্রকাশ্য জনসভায় মঞ্চের দিকে একটি জুতো উড়ে আসায় উত্তেজিত সমর্থকদের শান্ত করতে আসাদউদ্দিন ওয়াইসি সমবেত জনতাকে নিজের-নিজের আসনে বসতে অনুরোধ করছেন, এই দৃশ্যের একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ওয়াইসি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করায় জনতা সভাস্থল ছেড়ে চলে যাচ্ছে।
১ মিনিট ১২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে ওয়াইসিকে মোদী সরকারের সমালোচনা করতে শোনা যাচ্ছে আর তার পরেই দেখা যাচ্ছে, কোনও অজ্ঞাত কারণে শ্রোতারা মঞ্চের দিকে ছুটে যাচ্ছে।
রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদ জমি বিরোধ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তিনি সন্তুষ্ট নন, ওয়াইসি এ কথা বলার পর-পরই এই ভিডিওটি শেয়ার হতে শুরু হয়েছে।
বুম ওই টুইটার ব্যবহারকারীর ভুয়ো ও বিভ্রান্তিকর পোস্ট আগে খণ্ডন করেছে। প্রতিবেদনগুলি পড়া যাবে এখানে ও এখানে।
টুইটটি দেখা যাবে এখানে। টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
আমরা ভিডিও যাচাই করার সফটওয়ার ইনভিড ব্যবহার করে ভিডিওটিকে মূল কয়েকটি ফ্রেমে ভেঙে নিই। তারপর রুশ সার্চ ইঞ্জিন ইয়ানডেক্স প্রয়োগ করে সেগুলির অনুসন্ধান করে দেখি, ভাইরাল টুইটে যেমনটা দাবি করা হয়েছে, সে ভাবে জনতা মোটেই সভাস্থল ছেড়ে চলে যাচ্ছে না।
আমরা আরও দেখি, ২০১৮ সালের ২৩ জানুয়ারি জি-নিউজ-এর আপলোড করা একটি প্রতিবেদনে ওই একই ভিডিও ব্যবহার করা হয়েছে এবং সেখানে বলা হয়েছে, কেউ ওয়াইসিকে লক্ষ্য করে একটি জুতো ছুঁড়তেই ঘটনাটি ঘটে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনেও লেখা হয়, ২০১৮ সালের ২৩ জানুয়ারি মুম্বইয়ের নাগপাডা জংশন স্টেশনে এক জনসভায় ওয়াইসিকে জুতো ছোঁড়ার ঘটনাতেই উত্তেজনা ছড়ায়, তবে পুলিশ এবং ওয়াইসির দলের স্বেচ্ছাসেবকরা উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে এবং তার পরেই জনতা চলে যেতে থাকে।
বরং ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ৫১ সেকেন্ডের ফ্রেমে জনতা মঞ্চের দিকে ছুটে যাওয়ার পর ওয়াইসিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “মোদীর নাম নিতেই বেচারির কষ্ট হয়েছে, এবার তো আরও বেশিকরে ওঁর নাম বলবো”
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্টে জানানো হয়, এই ঘটনার পর নাগপাডা থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি এফআইআর-ও দায়ের করা হয়।
২০১৯ সালের এপ্রিলে এই একই ভুয়ো দাবির পর্দাফাঁস করেছিল দ্য কুইন্ট, যা আগে একই ক্যাপশন দিয়ে সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল।
২০১৮ সলের মার্চ মাস থেকে ফেসবুকে এই ভুয়ো দাবি সহ ভিডিওটি শেয়ার করা হচ্ছে।