একটি পুড়ে যাওয়া বাড়ির সামনে এক মহিলার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ার ছবি, সম্প্রতি বাংলাদেশের (Bangladesh) নানা জায়গায় হিংসা ও আগুন লাগানোর ঘটনার সঙ্গে মিথ্যে করে জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
বুম দেখে, ছবিটি ২০১৭ সালের, যখন একটি ইসলাম-বিরোধী ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে, রংপুরে হিন্দুদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
এ বছর দুর্গা পুজোর সময়, বাংলাদেশের নানা জায়গায় হিন্দু-বিরোধী হিংসা ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে ছবিটি সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে। খবরে প্রকাশ, রংপুরে মারধোর, ভাঙ্গচুর, অগ্নিসংযোগ, ও বাড়িঘর, দোকানপাট ও মন্দিরের ওপর আক্রমণে যুক্ত থাকার অভিযোগে ৩৮ জনকে জেলে পাঠানো হয়েছে।
ছবিটি সোশাল মিডিয়ায় বাংলা ক্যাপশন সহ শেয়ার করা হয়। ক্যাপশনে লেখা হয়, "পূর্ণিমা রাণী বলেন, হামলাকারীরা বাড়িতে ঢুকে তার দুই তরুণী মেয়ে কোথায়, জানতে চায়। ঘরে ঢুকে ভাঙচুর করে টাকা, গরু নিয়ে যায়। ঘরে আগুন লাগিয়ে যায়। (রংপুর, প্রথম আলো)"
পোস্টটি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
ফেসবুকে ভাইরাল
বুম দেখে একই ক্যাপশন সহ ছবিটি ফেসবুকে শেয়ার করা হচ্ছে।
১৮ অক্টোবর, লেখিকা ও সমাজকর্মী তসলিমা নাসরিনও ওই ভাইরাল ছবিটি টুইট করেন। সঙ্গে দেওয়া ক্যাপশনে লেখেন, "কাঁদো, আমার প্রিয় দেশ।" আর্কাইভ দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে পুজোয় হিংসা: না, ইনি ইসকন বাংলাদশের নিহত সন্ন্যাসী নন
তথ্য যাচাই
বুম ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে। তার ফলে ১৮ নভেম্বর ২০১৭ বিডিনিউজ২৪ প্রকাশিত একটি খবর দেখতে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনে একই ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল। ছবিটির ক্যাপশনে লেখা হয়, "ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে রংপুরে হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলায় আরও এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।"
১০ নভেম্বর ২০১৭ ঢাকা ট্রিবিউন-ও একই ঘটনার ওপর প্রতিবেদন ছাপে। ঢাকা ট্রিবিউনের রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশের রংপুরে ঠাকুরপাড়া গ্রামে হিন্দুদের ৩০ টির বেশি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
বুম দেখে, ভাইরাল ফেসবুক পোস্টে যে ক্যাপশনটি লেখা হয়েছে, সেটি ১৮ অক্টোবর ২০২১ প্রথম আলো'য় প্রকাশিত একটি রিপোর্টের অংশ। ওই রিপোর্টে, অক্টোবর ২০১৭'য় রংপুরের ঘটনা সম্পর্কে লেখা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে হিংসা: কর্নাটকে রাম নবমীর পুরনো ভিডিও দিল্লিতে প্রতিবাদ বলে ছড়াল