পতঞ্জলি (Patanjali) যোগপীঠের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও যোগগুরু বাবা রামদেবের (Baba Ramdev) সহযোগী আচার্য বালকৃষ্ণ (Acharya Balkrishna) অসুস্থ্য হয়ে এইমস (AIIMS) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মিথ্যে দাবি সহ সোশাল মিডিয়ায় ছড়াল ২০১৯ সালের ছবি।
সম্প্রতি বাবা রামদেব ও আচার্য বালকৃষ্ণ গণমাধ্যমে চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছেন। অ্যালোপ্যাথির ও আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে সন্ধিহান মন্তব্য পেশ করেন যোগগুরু বাবা রামদেব। বিষয়টি নিয়ে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যল অ্যাসোশিয়েশানের (আইএমএ) পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। সরকারি চিকিৎসা পদ্ধতি ও কোভিড টিকাকরণ নিয়ে ভুয়ো তথ্য ছড়াচ্ছেন এই অভিযোগ তুলে রামদেবের গ্রেফতারির দাবি জানায় সংগঠনটি। এর পর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন রামদেবকে তাঁর মন্তব্য প্রত্যাহার করে নিতে অনুরোধ করে চিঠি পাঠান। চিঠির জাবাব দেন রামদেব। অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য ১৫ দিনের মধ্যে ক্ষমা চাইতে হবে, নাহলে ১০০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এই মর্মে চিকিৎসক সংগঠন আইএমএ মানহানির নোটিশ পাঠায় রামদেবকে। বৃহঃস্পতিবার আবার নতুন করে রামদেব মন্তব্য করেন, "গ্রেফতারি তো দূর অস্ত ওর বাবাও কিছুও করতে পারবে না।"
এদিকে আইএমএ সভাপতি ডঃ জি এ জয়ালাল এর বিরুদ্ধে আচার্য বালকৃষ্ণ অভিযোগ তোলেন, "তিনি ভারতীয়দের খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত করতে চান আর সেকারণেই তিনি যোগগুরু রামদেব, যোগ ও আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের বদনাম করছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রী রামদেবের বিভ্রান্তিকর অপ্রচারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন, এমনটা দাবি জানিয়েছেন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডঃ জি এ জয়ালাল।
আচার্য বালকৃষ্ণ এবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জানান পতঞ্জলি উদ্ধাবিত করোনা প্রতিরোধী ওষুধ করোনিল (Coronil) নিয়ে ছাড়পত্র মিলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার থেকে। উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে এক মঞ্চ শেয়ার করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন ও নিতিন গডকড়ী। পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায় তারা এই ওষুধের ছাড়পত্র দেননি।
আরও পড়ুন: না, পতঞ্জলির করোনা ওষুধ করোনিল-কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন দেয়নি
ভাইরাল হওয়া ছবিটিতে দেখা যায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে রয়েছেন আচার্য বালকৃষ্ণ। ছবিটি ফেসবুকে শেয়ার করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, "এইমসে ভর্তি হয়ে বালকৃষ্ণ বুঝিয়ে দিলেন পাবলিককে বোকা বানানো ছাড়া পতঞ্জলি আর কিছুই করে না। বাবা রামদেব এলোপ্যাথিক ঔষধের বিরোধিতা করেছিল এখন বালাকৃষ্ণ সেই এলোপ্যাথিক চিকিৎসার ভরসায়…"
পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা হয়েছে এখানে।
বুম দেখে ওই একই দাবি সহ ছবিটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় কোকা-কোলা পণ্য বয়কট? না, পথে বোতাল ছড়ানো ছবিটি ফিলিপিন্সের
তথ্য যাচাই
বুম তথ্য যাচাই করে দেখে ভাইরাল ছবিটি ২০১৯ সালের অগস্ট মাসের, আচার্য বালকৃষ্ণ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে সে সময় ঋষিকেষের এইমস-এ ভর্তি করা হয়।
আমরা রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ২৪ অগস্ট ২০১৯ অমর উজালা গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন ছবিটি খুঁজে পায়। ওই প্রতিবেদনের শিরোনামে লেখা হয়েছিল, "পতঞ্জলি যোগপীঠের সাধারণ সম্পাদক আচার্য বালকৃষ্ণের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে, তাকে এইমসে ভর্তি করা হয়েছে"। ছবির সূত্র হিসেবে অমর উজালা নিজস্ব চিত্র বলে দাবি করে।
(হিন্দিতে মূল শিরোনাম "पतंजलि योगपीठ के महामंत्री आचार्य बालकृष्ण की तबीयत बिगड़ी, एम्स में भर्ती।" )
২৩ অগস্ট ২০১৯ প্রকাশিত মিন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী বুকে ব্যথা ও অস্থিরতা নিয়ে ঋষিকেষ এইমসে ভর্তি হন বালকৃষ্ণ। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায় শিষ্যের দেওয়া মিষ্টি খেয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন তিনি।
আরও পড়ুন: সাইক্লোন ইয়াস: কেরলে টাউটের দৃশ্য ছড়াল শঙ্করপুরে সমুদ্র ফুঁসছে বলে