আর্মা ৩ নামে (ARMA 3) এক ওপেন মিলিটারি স্যান্ডবক্স গেম ব্যবহার করে নিজের পছন্দমতো তৈরি করা একটি ভিডিওকে সোশাল মিডিয়ায় ইউক্রেন (Ukraine) ও রাশিয়ার (Russia) মধ্যে সংঘাতের দৃশ্য বলে মিথ্যা দাবি করে শেয়ার করা হচ্ছে। ভিডিওটির দৈর্ঘ্য আট মিনিটের সামান্য বেশি, এবং অ্যান্টি এয়ারক্রাফ্ট গান থেকে আকাশে উড়তে থাকা বিমানের দিকে গুলিবর্ষণের বিভিন্ন দৃশ্য এই ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে।
আর্মা ৩ ব্যবহার করে নিজের পছন্দ অনুযায়ী ভবিষ্যমুখী মিলিটারি কার্যকলাপের কনটেন্ট তৈরি করা সম্ভব। ২০১৩ সালে বোহেমিয়া ইন্টার্যাকটিভ মাইক্রোসফট ইউন্ডোজ-এর জন্য এটিকে রিলিজ করে।
ভিডিওটি নীচে দেখা যাবে। এর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে: "#রাশিয়া বনাম ইউক্রেন মিগ২৯ বনাম সি-র্যাম'এর লড়াই"।
এটি যে একটি ভিডিও গেম থেকে নেওয়া দৃশ্য, ভিডিওটির শিরোনাম বা ক্যাপশনে তার কোনও ইঙ্গিত নেই। অনেক গেমারই তাঁদের গেমের জন্য বিভিন্ন দেশের মধ্যে সংঘাতের এমন কল্পিত দৃশ্য তৈরি করেন, কিন্তু তাঁরা ক্যাপশনে স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, এটি একটি ভিডিও গেমের ফুটেজ।
ইউক্রেনের পূর্ব সীমান্তে রাশিয়ার সঙ্গে যে সীমান্ত সংঘর্ষ চলছে, তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। আজ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি এক্সিকিউটিভ অর্ডারে সাক্ষর করেন, যাতে ইউক্রেন থেকে বেরিয়ে এসে যে দুটি অঞ্চল— লুহান্সক ও ডোনেটস্ক— নিজেদের স্বাধীন প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করেছে, তাদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এই দুটি অঞ্ল ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত।
আরও পড়ুন: 'মাথ্রুভূমি' রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বলে দেখাল ভিডিও গেম আর্মা-৩-এর দৃশ্য
তথ্য যাচাই
বুম এই ভিডিওটিকে কয়েকটি কিফ্রেমে ভেঙে নেয়, এবং গুগল ব্যবহার করে এই কিফ্রেমগুলির উপর রিভার্স ইমেজ সার্চ করে।
এই ভিডিওটি ৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ড দৈর্ঘের আর একটি ভিডিওর অবিকল নকল।
সেই ভিডিওটির শিরোনাম হল: "আর্মা ৩- সি-র্যামের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মিগ২৯- ফ্যালাঙ্কস সিআইডব্লিউএস- সি র্যাম- ট্রেসার ফায়ারিং- সিমুলেশন", এবং ভিডিওটিতে এক কোটি পঁয়তাল্লিশ লক্ষের বেশি ভিউ রয়েছে।
এ ছাড়াও বুম আর্মা ৩-র বেশ কয়েকটি দৃশ্যের সন্ধান পায়। তার প্রতিটিতেই দেখা গিয়েছে যে, বিভিন্ন ধরনের বন্দুক থেকে বিমানের দিকে গুলি চালানো হচ্ছে।
প্রতিটি ভিডিওতেই একই রকম শব্দ ও দৃশ্য ব্যবহার করা হয়েছে। নীচে আর একটি আর্মা ৩ ভিডিও দেখা যাবে।
বিভিন্ন দেশের মধ্যে সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে আর্মা ৩ ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ার ঘটনার এটাই প্রথম উদাহরণ নয়।
২০২০ সালে আমেরিকা যখন ইরানের মিলিটারি জেনারেল কাসিম সোলেইমানিকে হত্যা করে, তখনও এমন ফুটেজ ভাইরাল হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ইরফান মাক্কির গান ভুয়ো দাবিতে ছড়াল মাইকেল জ্যাকসনের নিষিদ্ধ গান বলে