নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে করা টাইম পত্রিকার প্রচ্ছদের একটি ফোটোশপ করা বয়ান সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে 'ফ্যাসিবাদ হটাও' এই কথাগুলি জুড়ে দিয়ে। তাতে এই ধারণাটি প্রচার করার চেষ্টা হচ্ছে যে, ওই বিখ্যাত পত্রিকাটি যেন নরেন্দ্র মোদীকে ফ্যাসিবাদী বা স্বৈরাচারী হিসাবে বর্ণনা করছে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে টাইম পত্রিকায় বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ জন ব্যক্তির তালিকায় নরেন্দ্র মোদীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে। টাইম এর আগেও মোদীর সমালোচনা করেছে এবং ২০১৯ সালের প্রচ্ছদে মোদীকে 'মুখ্য বিভেদসৃষ্টিকারী' বলেও বর্ণনা করেছিল।
ভাইরাল হওয়া ছবিটিতে টাইম পত্রিকার ২৫ অক্টোবর/ ১ নভেম্বর, ২০২১-এর সংস্করণের প্রচ্ছদটি দেওয়া হয়েছে, যাতে মোদীর মুখের ছবির উপর 'ফ্যাসিবাদ হটাও' বার্তাটি জুড়ে দিয়ে তার নীচে 'হটাও' এবং 'বাতিল করো' এই বিকল্পও দেওয়া রয়েছে, ঠিক যেমন স্মার্টফোনে এই কমান্ডগুলি দেওয়া থাকে।
জনৈক টুইটার ব্যবহারকারী একটি টুইটে এই ভুয়ো প্রচ্ছদের ছবিটি টুইট করে ক্যাপশন দিয়েছেন: "আমরা সুখী যে 'হটাও' কিংবা 'মুছে দাও' বোতামটি খুঁজে পেয়েছি...অতএব বিজেপির হাত থেকে ভারতকে বাঁচান।"
পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
অন্য টুইটার ব্যবহারকারীরাও একই ছবি টুইট করেছেন।
আরও পড়ুন: ছত্তীসগঢ়ে ভাসানের সময় ১৬ জন বাঙালিকে পিষে মারা হল দাবিটি বিভ্রান্তিকর
তথ্য যাচাই
প্রচ্ছদের ছবিতে অন্য দুটি নিবন্ধের শিরোনাম এবং সেগুলির নিবন্ধকারের নামও ছাপা হয়েছে— বিলি পেরিকো-র লেখা 'ইনসাইড দ্য ড্যামেজ' এবং রজার ম্যাকনামি-র লেখা 'চেঞ্জ ক্যান্ট ওয়েট'।
কিন্তু টাইম পত্রিকার ওয়েবসাইটে বুম বিলি পেরিকো নামে কোনও নিবন্ধকারকে খুঁজে পায়নি, তার পরিবর্তে বিলি পেরিগো নামের একজনকে পেয়েছে, যিনি ওই পত্রিকায় কর্মরত একজন লেখক।
এই সূত্র ধরে অগ্রসর হয়েই আমরা পেরিগোর টুইটার হ্যান্ডেলও যাচাই করি এবং সেখানেই মার্ক জুকারবার্গকে নিয়ে করা পত্রিকার আসল প্রচ্ছদটি খুঁজে পাই।
নরেন্দ্র মোদীর মুখচ্ছবি দিয়ে তৈরি ভাইরাল প্রচ্ছদে যে তারিখ দেওয়া আছে, এই প্রচ্ছদটিতেও সেই একই তারিখl মূল নিবন্ধটির বিষয়, "ফেসবুক কীভাবে রাজনীতির ওপরে মানুষকে অগ্রাধিকার দেওয়া ব্যক্তিদের জোর করে স্তব্ধ করে দিচ্ছে"। টাইম পত্রিকাও ৮ অক্টোবর, ২০২১ প্রচ্ছদে জুকারবার্গের ছবি দেওয়া এই নিবন্ধের লিঙ্ক টুইট করেছে।
নীচে পত্রিকার আসল ও নকল প্রচ্ছদের তুলনামূলক চিত্র দেখতে পারেনl পত্রিকার সর্বশেষ প্রচ্ছদ নিয়ে এনডিটিভির রিপোর্টও এখানে পড়তে পারেন।
টাইম পত্রিকার আর্কাইভ বিভাগ-এ প্রচ্ছদটি আপলোড করা হয়েছে।
ফেসবুক এবং জুকারবার্গকে নিয়ে লেখা পেরিগোর নিবন্ধটি এই সংস্থায় সমিধ চক্রবর্তী ও ফ্রান্সেস হাউজেন-এর নেতৃত্বে কাজ করা দলটির তরফে ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ নানা গোলমালের তথ্য ও সংবাদ সিকিওরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের কাছে ফাঁস করে দেওয়ার বিষয়েl এ বিষয়ে ফেসবুকের প্রতিক্রিয়া পড়তে পারেন এখানে।
এর আগেও বুম প্রধানমন্ত্রী মোদী, বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জোসেফ বাইডেন এবং প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে করা টাইম পত্রিকার ভুয়ো প্রচ্ছদের পর্দাফাঁস করেছে।
আরও পড়ুন: ছত্তীসগঢ়ে ভাসানের সময় ১৬ জন বাঙালিকে পিষে মারা হল দাবিটি বিভ্রান্তিকর