এক মদ্যপ ব্যক্তির (drunk man) রাস্তার মাঝে একটি বাঘের (tiger) গায়ে মাথায় হাত বুলিয়েও অক্ষত থাকার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (artificial intelligence) নির্মিত ভিডিও সম্প্রতি অবিশ্বাস্য কিন্তু সত্য ঘটনা দাবি করে ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে। ব্যবহারকারীরা ভিডিওটি শেয়ার করে ভুয়ো দাবি করেছেন ঘটনাটি বাঘ সংরক্ষণ কেন্দ্র হিসাবে জন্য খ্যাত মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) পেঞ্চের (Pench)।
বুম বিভিন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যাচাইকারী টুলে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছে ভাইরাল ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি।
ভাইরাল দাবি
ভাইরাল ভিডিওর ক্যাপশন অনুযায়ী, মধ্যপ্রদেশের এক স্থানীয় শ্রমিক মদ্যপ অবস্থায় পেঞ্চ বাঘ সংরক্ষণ কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসা একটি বাঘকে বিড়াল ভেবে গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে এবং বাঘটিকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টাও করে। তবে আশ্চর্যজনক ভাবে বাঘটি ওই ব্যক্তিকে কোনও রকম আঘাত করে না। একটি ফেসবুক পেজ ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখে, "মদের নেশায় বিড়াল ভেবে বাঘের সাথে খুনসুটি শ্রমিকের, পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভ থেকে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছিল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, কারও কোনও ক্ষতি হয়নি।"
পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
অনুসন্ধানে আমরা কী পেলাম
১. পুলিশের বয়ান: বুম সম্পর্কিত কিওয়ার্ড সার্চের মারফত ঘটনা সংক্রান্ত এমন কোনও বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদন পায়নি যা ভাইরাল দাবিকে সমর্থন করে। নিশ্চিত হওয়ার জন্য, আমরা মধ্যপ্রদেশের সিওনির পুলিশ কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করি ভাইরাল দাবির বিষয়ে। সিওনির পুলিশ সুপারের অফিস থেকে আমাদের জানায় তারা এধরণের কোনও ঘটনা সম্পর্কে অবগত নয়। সংবাদমাধ্যম দ্য সূত্র পেঞ্চ বাঘ সংরক্ষণ কেন্দ্রের সহ পরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে ভিডিওটির ব্যাপারে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ঘটনাটি পেঞ্চের নয়। দ্য সূত্রের প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, রাজনীশ বলেছেন পোষা বাঘ না হলে এধরণের পরিস্থিতি তৈরি হওয়া সম্ভব নয়।
২. দৃশ্যমান অস্বাভাবিকতা: ভাইরাল ভিডিওর একটি স্পষ্টতর সংস্করণে আমরা দেখি ভিডিওর প্রেক্ষাপটে কিছু অস্পষ্ট জিনিসকে অদ্ভুত ভাবে নড়াচড়া করতে দেখা যায়। এছাড়াও, ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে বাঘের মাথায় ওই ব্যক্তির আঙুলগুলির মধ্যে অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায় এবং তার হাতের মদের বোতলের মুখের কাছের অংশ কখনো দৃশ্যমান হয় আবার কখনো মিলিয়ে যায়।
৩. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যাচাইকারী টুলে পরীক্ষা: আমরা বাফেলো ইউনিভার্সিটির মিডিয়া ফরেন্সিক্স ল্যাবের তৈরি ডিপফেক-ও-মিটারের সাহায্যে ভিডিওটি পরীক্ষা করি। বিভিন্ন এআই যাচাইকারী মডেলে পরীক্ষা করে দেখা যায় ভাইরাল ভিডিওর এআই নির্মিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা পাওয়া গেছে।
আরও নিশ্চিত হতে, বুম তাদের সহকারী ডিপফেকস অ্যানালিসিস ইউনিটের (ডিএইউ) কাছে ভিডিওই পরীক্ষা করার জন্য পাঠায়। ডিএইউ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যাচাইকারী ওয়েবসাইট ইজ ইট এআই এবং এআই অর নটে ভিডিওটি পরীক্ষা করে। উভয় টুলেই পরীক্ষা করে দেখা যায় ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার ৬৯% প্রবণতা রয়েছে। নীচে ফলাফলগুলি দেখা যাবে।






 
                               
                               
                               
                               
                              
