ইতালির (Italy) পিডমন্টের তুরিনে অবস্থিত মিশরীর মিউজিয়ামে (Museo Egizio) সংরক্ষিত সম্পর্কহীন এক অদিকালের পোশাকের ছবি ভুয়ো দাবি সমেত সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দাবি করা হচ্ছে সেটি ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক নবী হজরত (Prophet Muhammad) মহম্মদের ব্যবহৃত পোশাক (Cloth)।
বুম যাচাই করে দেখে ভাইরাল ছবিটি মিশরে প্রত্নতত্ত্ব খননে পাওয়া ২৪৩৫-২১১৮ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দের পোশাক। সেটি বর্তমানে রয়েছে ইতালির পিডমন্টের তুরিন-স্থিত মিশরীর মিউজিয়ামে।
সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ছবিটি একটি বিবর্ণ ছোট হাতা 'টিউনিক' পোশাকের। ছবিটি ফেসবুকে শেয়ার করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, "মহানবীর জোববা"।
একই ক্যাপশন সহ ফেসবুকে ছবিটি ব্যপকভাবে ভাইরাল হয়েছে। দুটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে ও এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম ছবিটিকে প্রথমে ইয়েন্ডেক্স ও পরে গুগলে রিভার্স সার্চ করে ২০১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ইতালির মিশরীয় মিউজিয়াম সংক্রান্ত এক ব্লগের লেখায় ছবিটি খুঁজে পায়।
বুম এই সূত্র ধরে মূল ছবিটিকে খুঁজে পায় ইতালির পিডমন্টের তুরিন-স্থিত মিশরীর মিউজিয়াম-এর ওয়েবাসাইটে (মূল নাম ইতালিতে: Museo Egizio)।
বুম বর্ণনাতে লেখা আছে, ১৯০৬ সালে প্রত্নতত্ত্ব খননকার্যের সময় বস্তুটি পাওয়া যায় মিশরের আদিশহর গেবেলিনে। ২৪৩৫-২১১৮ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দের পোশাক বলে দাবি করা হয়েছে মিউজিয়ামের ওয়েসবাইটে। তিনটি লিনেনের কাপড় খণ্ড দিয়ে তৈরি হয় টিউনিক পোশাক। বর্ণনাতে মোটেও উল্লেখ করা হয়নি ছবিটি ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক নবী হজরত মহম্মদের।
ব্রিটানিকার তথ্য অনুযায়ী পয়গম্বর মহম্মদের জন্ম মক্কায় ৫৭০ অব্দে। তিনি ৮ জুন ৬৩২ অব্দে মদিনাতে প্রয়াত হন। অর্থাৎ বর্তমানে ভাইরাল হওয়া ছবটি নবী মহম্মদের জন্মের বহু বছর আগের।
একই ছবি দেখা যাবে রোমের সাপিয়েঞ্জা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও নৃতত্ত্বের গবেষিকা ইমানুয়েলা চিয়াভেনির (Emanuela Chiavoni) প্রেজেন্টেশনে।
ইতালির পিডমন্টের তুরিন-স্থিত মিশরীর মিউজিয়ামের সৌজন্য ছবিটি ২০১৫ সালের ১ এপ্রিল তোলা দাবি করা হয়েছে স্টক ছবির সাইট অ্যালামিতে।
১১ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড সময়ের পরে একই পোশাকের ছবিটি দেখা যাবে ২০২১ সালের মার্চ মাসে ইউটিউবে আপলোড হওয়া মিশরীয় মিউজিয়াম সংক্রান্ত ভিডিওতে।
তুর্কির গণমাধ্যম ডেইলি সাবাহ-তে ২২ এপ্রিল ২০২২ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী নবী মহম্মদের একটি পোশাক সংরক্ষিত আছে ইস্তানবুলের হিরকা শরীফ মসজিদে।
আরও পড়ুন: ঐশী ঘোষের কপালে উধাও দাগ ভুয়ো দাবিতে ছড়াল সম্পাদনা করা ছবি