নরওয়েতে কোভিড-১৯ প্রতিরোধী টিকা (Vaccine) নেওয়ার ফলে বয়স্ক ২৩ জন ব্যক্তির মৃত্যু ঘটনাকে ঘিরে টিকার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নিয়ে ফেসবুকে বিভ্রান্তিকর গ্রাফিক শেয়ার করা হচ্ছে। ওই গ্রাফিকে বিভ্রান্তিকর ভাবে দাবি করা হচ্ছে আমেরিকার টিকা নেওয়ায় নরওয়েতে মৃত্যু হলেও ভারতে উৎপন্ন টিকা প্রয়োগে এখনও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
বুম দেখে ভাইরাল হওয়া গ্রাফিকের ওই দাবি বিভ্রান্তিকর, ভারতে এখনও পর্যন্ত কোভিড-১৯ টিকার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার ঘটনা ঘটেছে ৪৪৭ টি।
সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী ফাইজারের (Pfizer) ও জার্মানির সহযোগী সংস্থা বায়োএনটেক (BioNTech)-এর তৈরি কোভিড ভ্যাক্সিন নেওয়ার ফলে নরওয়েতে ২৩ জন বয়স্ক ব্যক্তির মৃত্যুর হয়েছে। নরওয়ের মেডিসিন এজেন্সী অবশ্য জানিয়েছে সে দেশে নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন বা দীর্ঘদিন রোগশয্যায় থাকা গড়ে ৪০০ জন ব্যক্তি প্রতি সপ্তাহে মারা যায়।
সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া গ্রাফিকটিতে আমেরিকার ভাবি রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন (Joe Biden) ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) ছবি ব্যবহার করে ওই তুলনা করা হয়েছে। ওই গ্রাফিকে লেখা হয়েছে, "আমেরিকার ফাইজারের টিকা নিয়ে নরওয়েতে ২৩ জন লোকের মৃত্যু হয়েছে" এবং "ভারতে করোনার টিকা ২ লক্ষ লোক নিয়েও কারও অসুস্থতার খবর পাওয়া যায়নি।" তার নীচে লেখা রয়েছে, "আমাদের ভারত সর্বশ্রেষ্ঠ এবং জানিয়ে রাখি বিশ্বের ৬০% ভ্যাকসিন ভারতের তৈরি তাই দেশবিরোধিদের কথায় কান না দিয়ে নিশ্চিতে ভ্যাকসিন নিন।"
বুম দেখে ভাইরাল হওয়া গ্রাফিকের ওই দাবি বিভ্রান্তিকর, ভারতে এখনও পর্যন্ত কোভিড-১৯ টিকার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার ঘটনা ঘটেছে ৪৪৭ টি।
ভারতে জরুরি ভিত্তিতে এখনও পর্যন্ত দুটি ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে তা হল পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার কোভিশিল্ড (Covishield) এবং হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের কোভ্যাক্সিন।
১৮ জানুয়ারি ২০২১ প্রকাশিত মিন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী শনিবার ১৬ জানুয়ারির তথ্য অনুযায়ী ভারতে কোভিড-১৯ টিকার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার ঘটনার খবর মিলেছে ৪৪৭ টি। তবে কোভিশিল্ড না কোভ্যাক্সিন টিকা থেকে এই পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে ভারত সরকারের পক্ষে থেকে নির্দিষ্ট কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
কোভিড টিকার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নিয়ে সিরামের তরফে ডিসেম্বর মাসে জানানো হয় তাদের টিকা পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াহীন। ব্রিটিশ-সুইডিশ সংস্থা এ্যাস্ট্রাজেনেকা (AstraZeneca)-অক্সফোর্ড-এ উদ্ভাবিত ভ্যাক্সিনের ভারতে উৎপাদক সংস্থা হল পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট।
পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার ঘটনার খবর মেলায় ভারত বায়োটেকের তরফে ১৯ জানুয়ারি বিবৃতি প্রকাশ করা হয় জ্বর, অ্যালার্জি ও রক্তক্ষরণ-জনিত সমস্যা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার পর যেন টিকা নেওয়া হয়।