সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে ভিডিওটিতে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ধূলিয়ানে বিজেপি কর্মীদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে মারপিট-হাতাহাতি হতে দেখা যাচ্ছে।
বুম যাচাই করে দেখে ভিডিওটি মুর্শিদাবাদের ধূলিয়ানের নয় বরং, পাঞ্জাবের। লুধিয়ানার পায়েলে বিজেপির একটি অধিবেশনে বক্তৃতা দেওয়া নিয়ে কর্মীদের মধ্যে বচসা বাঁধে যা শেষ পর্যন্ত হাতাহাতির রূপ নেয়।
ভাইরাল ভিডিওটিতে বিজেপির পতাকা দিয়ে সাজানো একটি মঞ্চ এবং হলঘর দেখা যাচ্ছে। সেই ঘরে অনেকজন পাগড়ি পড়া লোককে লাঠি, টেবিল, চেয়ার নিয়ে ভাঙচুর করতে দেখা যায়। আসন্ন নির্বাচনের আগে ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে ঘটনাটি ধূলিয়ানের।
একটি ফেসবুক পেজ ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশন হিসাবে লেখে, "ধূলিয়ানে খেলা চলছে"।
ভিডিওটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
আরও একজন ব্যবহারকারী একই ক্যাপশনসহ ফেসবুকে ভিডিওটি শেয়ার করেছেন।
ভিডিওটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম দাবিটির সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে লক্ষ্য করে ভিডিওটিতে একাধিক পাগড়ি পরা ব্যাক্তি দেখা যাচ্ছে এবং তারা পাঞ্জাবি ভাষায় কথা বলছে। এই সুত্রধরে আমরা ইউটিউবে পাঞ্জাবে বিজেপি কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি সম্পর্কিত কিওয়ার্ড সার্চ করে ভাইরাল ভিডিওর অনুরূপ দৃশ্যসহ একটি ভিডিও দেখতে পাই।
নিউজ ১৮ পাঞ্জাব/হরিয়ানা/হিমাচল ইউটিউব চ্যানেলে ১৪ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে আপলোড করা একটি ভিডিও প্রতিবেদন দেখতে পাই। সেখান থেকে আমরা জানতে পারি লুধিয়ানার পায়েলে একটি অধিবেশনে বক্তৃতা দেওয়া নিয়ে বচসা বাঁধে স্থানীয় বিজেপি নেতার সঙ্গে। এই ঝামেলাই হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছায়।
ভিডিওটি দেখুন এখানে।
নীচে নিউজ ১৮ পাঞ্জাব/হরিয়ানা/হিমাচলের আপলোড করা ভিডিওর স্ক্রিনশট ও ভাইরাল ভিডিওর স্ক্রিনশটের তুলনা দেওয়া হল।
এছাড়াও, আমরা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে এই ঘটনা সংক্রান্ত, টেবিল, চেয়ার, মাইক্রোফোন ও ঘুষি চলল যখন বিজেপি কর্মীরা একে অপরের উপর হামলা করল দলীয় অধিবেশনে শিরোনামসহ একটি প্রতিবেদন পাই।
প্রতিবেদনটি থেকে আমরা জানতে পারি বিজেপি খান্নার জেলা সভাপতি ভুপিন্দর সিং চীমা জানান ওই অধিবেশনে কেবল উচ্চপদস্থ নেতাদের বক্তৃতা দেওয়ার আয়োজন ছিল। স্থানীয় মহিলা মোর্চার সভাপতি জসবীর কৌরের স্বামী গুলজার সিং বক্তৃতা দিতে চাইলে তাকে বাধা দেওয়ায় তিনি ভাঙচুর আরাম্ভ করেন।
অন্যদিকে, জসবীর কৌর দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, "মহিলা মোর্চার সভাপতি হিসাবে আমি অধিবেশনে যোগ দেওয়ার জন্য তিনটি গাড়িতে মহিলা সদস্যদের নিয়ে এসেছি। আমরা শুধু নতুন সদস্যদের তালিকা চিমার কাছে জমা দেওয়ার চেষ্টা করছিলাম। নতুন সদস্যরা একটি ছবি তুলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমার বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি আমাদের কথা শোনেননি। তখনই আমার স্বামী মঞ্চে গিয়ে তাদের কাছে মাইক্রোফোন চান যাতে তিনি একটি গ্রুপ ফটোগ্রাফের জন্য সমস্ত নতুন মহিলা সদস্যদের নাম ডাকতে পারেন। কিন্তু যে ব্যক্তি মঞ্চ পরিচালনা করছিল সে আমার স্বামীকে গালিগালাজ করে এবং আক্রমণ করে। তাঁকে মঞ্চ থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয় এবং চিমার সহযোগীরা তাঁকে আক্রমণ করে। তারা আমার স্বামীকেও গালিগালাজ করে।"
প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে।
এভাবেই, আমরা নিশ্চিত হই ভাইরাল ভিডিওটিতে ধূলিয়ান নয়, পাঞ্জাবের ঘটনা দেখা যাচ্ছে।