একটি ভাইরাল ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সোনিয়া গাঁধীর (Sonia Gandhi) পিছনে বইয়ের তাকে একটি বই রয়েছে, যেটির নাম, 'হাউ টু কনভার্ট ইন্ডিয়া ইন্টু খ্রিস্চিয়ান নেশন' (ভারতকে কীভাবে খ্রিস্টান দেশে পরিণত করা যায়)। আর রয়েছে পবিত্র বাইবেল (Holy Bible) ও যিশু খ্রিস্টের (Jesus Christ) মূর্তি। কিন্তু ছবিটি সম্পাদিত ও ভুয়ো।
টুইটার ব্যবহারকারী 'নো কনভারশান' ছবিটি টুইট করেন ও ডিলিটও করে দেন। ছবিটিতে টুইটার হ্যান্ডেলের নামের জলছাপও ছিল। @নো কনভারশান হ্যান্ডেলটি ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪'য় তৈরি করা হয় এবং সেটির দু'লক্ষরও বেশি অনুগামী আছে। ওই টুইটার হ্যান্ডেলটি থেকে খ্রিস্টান-বিরোধী বক্তব্য নিয়মিত টুইট করা হয়।
আলাদা ভাবে জুড়ে দেওয়া ওই বইটি বা মূর্তিটির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ না করে, ক্যাপশনে বলা হয়েছে, "এই সব বই কে পড়ে?"
পরে, কোনও কারণ না দেখিয়েই, ছবিটি ডিলিট করে দেওয়া হয়। ছবিটির আর্কাইভ এখানে দেখুন।
ছবিটি আসল মনে করে, অনেক টুইটার ব্যবহাকারী সেটি টুইট করেন।
ফ্রাঁসোয়া গটিয়ের নিজেকে একজন লেখক হিসেবে পরিচয় দেন ও তাঁর ৬৩,০০০-এরও কিছু বেশি টুইটার অনুগামী আছেন। উনিও ভা্ইরাল ছবিটি টুইট করেন। কিন্তু সোনিয়া গাঁধীর অংশটি বাদ দিয়ে কেবল বইগুলির ওপরই ফোকাস করেন উনি।
এমন কিছু পোস্টের আর্কাইভ দেখতে এখানে, এখানে ও এখানে ক্লিক করুন।
একই মিথ্যে দাবি সমেত ছবিটি ফেসবুকেও শেয়ার করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইতালির শিল্পীর ভাস্কর্য ছড়াল ইয়াসের পর বিহারে বিরল প্রাণী মিলল বলে
তথ্য যাচাই
বুম ছবিটি বিশ্লেষণ করে দেখে যে, একটা মিথ্যে দাবি করার জন্য 'হাউ টু কনভার্ট ইন্ডিয়া ইন্টু খ্রিস্চিয়ান নেশন' বইটি, পবিত্র বাইবেল ও মূর্তিটি মূল ছবিটিতে জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
ভাইরাল ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে আমরা আসল ছবিটির হদিস পাই। সেটি অক্টোবর ২০২০তে রাহুল গাঁধীর টুইট করা একটি ভিডিও থেকে নেওয়া। ২০২০ তে বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে, 'মহাজোট'কে সমর্থন করার জন্য সোনিয়া গাঁধী সেখানকার নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানান ওই ভিডিওটিতে।
সম্পূর্ণ ভিডিওটি নীচে দেখুন।
ভাইরাল ছবিতে সোনিয়া গাঁধীকে যে পোশাকে দেখা যাচ্ছে, ভিডিওটিতেও তিনি একই পোষাক পরে আছেন। তাঁর পিছনে বইয়ের তাকে 'হাউ টু কনভার্ট ইন্ডিয়া ইন্টু খ্রিস্চিয়ান নেশন' বইটি, পবিত্র বাইবেল ও যিশুর মূর্তি, কোনওটাই দেখা যাচ্ছে না। ভাইরাল ছবিতে, যেখানে বাইবেল রয়েছে, আসল ছবিতে সেই জায়গাটি ফাঁকা রয়েছে। এবং অন্য একটি বইয়ের নাম মুছে সেখানে ধর্মান্তকরণের বইয়ের নামটি বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, আসল ছবিটিতে তাকে যিশুর মূর্তিটি দেখা যাচ্ছে না। মিথ্যে দাবি করার জন্য ওই তিনটি জিনিসই সম্পাদনা করে আসল ছবিটিতে বসিয়ে দেওয়া হয়।
ভাইরাল ছবিটি ও আসল ছবিটি এখানে তুলনা করা হল।
২০২০ তে হিন্দুস্থান টাইমস-এ প্রকাশিত একটি রিপোর্টেও আমরা সোনিয়া গাঁধীর একই ছবি দেখতে পাই। ফলে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, তাঁর বইয়ের তাকে ওরকম কোনও বই ছিল না।
আরও পড়ুন: ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল কী করোনা টিকা নেওয়ার ভান করছেন?