উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) আগ্রায় (Agra) একটি ক্যাফেতে পুলিশি তল্লাশির একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে, ঘনিষ্ঠ ভঙ্গিতে বসে থাকা একটি যুগলকে পুলিশ পাকড়াও করছে। ভিডিওটি সোশাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর সাম্প্রদায়িক দাবি সহ ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার করে ভুয়ো দাবি করা হয়েছে যে, মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) একটি হুক্কা বারে মুসলমান ছেলেরা হিন্দু মেয়েদের প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করছে।
বুম আগ্রার এসএসপি (সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট অব পুলিশ) প্রভাকর চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি নিশ্চিত ভাবে জানান যে, এই ঘটনাটি একটি স্থানীয় ক্যাফেতে ঘটেছে। তিনি আরও বলেন যে, এই ঘটনাটির কোনও সাম্প্রদায়িক মাত্রা নেই।
ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে যে, ক্যাফের যে আন্ডারগ্রাউন্ড অংশে কেবিন রয়েছে, সেখানে পুলিশ ঢুকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় থাকা যুগলদের পাকড়াও করছে।
ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "গতকাল মধ্যপ্রদেশের এক হুক্কা বারে তল্লাশি চালিয়ে ১৫টি ছেলে ও ১৫টি মেয়েকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সবকটি মেয়েই সম্পন্ন পরিবারের। ঘটনা হল, সবকটি ছেলেই মুসলমান, আর সবকটি মেয়ে হিন্দু।"
পোস্টটি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
পোস্টটি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুন: ডিনামাইটে আহত বলিভিয়ার প্রতিবাদী জম্মু-কাশ্মীরের ভিডিও বলে ছড়াল
তথ্য যাচাই
ভাইরাল ভিডিওটির একটি কিফ্রেম নিয়ে বুম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে, এবং ২০২২ সালের ১২ অগস্ট ইউপি তক-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের সন্ধান পায়।
প্রতিবেদনটিতে লেখা হয়েছে, "হরিপরভাত পুলিশ স্টেশনের তিন পুলিশকর্মী যে ভিডিওটি বানিয়েছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে যে, একটি ক্যাফের ভিতরে তরুণ-তরুণীরা ঘনিষ্ঠ ভঙ্গিতে বসে রয়েছেন, এই অবস্থায় পুলিশি তল্লাশি চলছে। তাঁরা কাকতিমিনতি করলেও পুলিশকর্মীরা তাতে কর্ণপাত করছেন না। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরে এই তিন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর শহরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পুলিশের কর্মপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আপনাদের জানিয়ে দেওয়া যাক যে, প্রায় ১২ দিন আগে হরপরভাত থানার পুলিশ ক্যাফেটিতে হানা দেয়। এই তল্লাশির ভিডিও যে ভাইরাল হয়েছে, এসএসপি সে বিষয়ে অবগত আছেন। তিনি এই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করলে সংশ্লিষ্ট তিন পুলিশকর্মীর অনভিপ্রেত আচরণ সামনে আসে।"
দৈনিক জাগরণ এবং অমর উজালার মতো হিন্দি সংবাদমাধ্যমও এই ঘটনাটির সংবাদ প্রকাশ করেছে।
এই সূত্র ধরে আমরা আগ্রার সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট অব পুলিশ (এসএসপি) প্রভাকর চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করি, এই ভাইরাল দাবিটিতে যে সাম্প্রদায়িক মাত্রা রয়েছে, তার সত্যতা সম্বন্ধে জানতে চাই। চৌধুরী বুমকে জানান, "দাবিটি ভুয়ো। এই ঘটনাটির কোনও সাম্প্রদায়িক মাত্রা নেই। যাঁদের ধরা হয়েছে, আমরা তাঁদের পরিচয় গোপন রেখেছি।"
আরও পড়ুন: অলৌকিক দৃশ্য ভুয়ো দাবিতে ছড়াল পুরনো সম্পাদিত অ্যানিমেশন ভিডিও