চিনের সরকার-সমর্থিত সংবাদ মাধ্যম গ্লোবাল টাইমস (Global Times) এক সেট ছবি টুইট করে। এবং মিথ্যে দাবি করে যে, ইউক্রেন-এর (Ukraine) ওপর হামলা চলা কালে, ভারত রাশিয়ার পতাকার রঙের আলো দিয়ে কুতুব মিনার আলোকিত করে।
ছবিগুলি সোশাল মিডিয়ায় এই দাবি করে শেয়ার করা হয় যে ইউক্রেন আক্রমণ করার জন্য যখন বেশ কিছু দেশ রাশিয়ার সমালোচনা করেছে ও তার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, ভারত তখন রাশিয়ার সমর্থনে এগিয়ে এসেছে।
রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, উভয় দেশের সঙ্গেই ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। ভারত রাশিয়ার নিন্দা করেনি এবং তার বিরুদ্ধে আরোপ-করা নিষেধাজ্ঞার প্রতি সমর্থনও জানায়নি। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ সভায় রাশিয়া-ইউক্রেন সংক্রান্ত ভোটাভুটিতে ভারত অংশ নেয়নি।
ভারতের অবস্থান হল, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা উচিত দু'দেশের।
ভাইরাল ছবিগুলি গ্লোবাল টাইমস টুইট করে। সঙ্গে ক্যাপশনে লেখা হয়, "দিল্লির বিশেষ ঐতিহাসিক স্তম্ভ কুতুব মিনারকে ভারত রাশিয়ার পতাকার রঙে আলোকিত করেছে।"
আর্কাইভ দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
এই প্রতিবেদন লেখার সময় দেখা যায়, টুইটটি ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে।
ওই ছবির সেটটি একই মিথ্যে ক্যাপশন সহ টুইটারে ব্যাপক ভাবে শেয়ার করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সামরিক মহড়ার পুরনো ভিডিও ভুয়ো দাবিতে ছড়াল ইউক্রেন অভিমুখে রুশ যুদ্ধ বিমান
তথ্য যাচাই
বুম দেখে, ২০২২-এর জনৌষধি দিবস উপলক্ষে কুতুব মিনার আলোয় সাজানো হয়। ওই আলোকসজ্জা রাশিয়ার সমর্থনে করা হয়নি, যেমনটা দাবি করা হচ্ছে।
১ মার্চ ২০২২ থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত জনৌষধি দিবস পালিত হয়। প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় জনৌষধি প্রকল্পের (পিএমবিজেপি) অঙ্গ হল সেটি। উচ্চমানের জেনেরিক ওষুধ যাতে সকলে ন্যায্য মূল্যে পান, সেই জন্য কেন্দ্রীয় সরকার প্রকল্পটি চালু করেছে।
৫ মার্চ পিএমবিজেপি'র অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকে ওই একই ছবির সেট টুইট করা হয়। ক্যাপশনে বলা হয়, "৫-৭ মার্চ ২০২২, 'আজাদি কা অমৃত মহোৎসব' ও জনৌষধি উদ্যোগ উপলক্ষে কুতুব মিনার আলোকিত করা হয়েছে।"
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ড. মনসুখ মন্ডাব্যা-ও একই ছবির সেট টুইট করেন।
উনি লেখেন, "উন্নত মানের জেনেরিক ওষুধ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে, জনৌষধি দিবস ২০২২ উদযাপন উপলক্ষে কুতুব মিনার আলো দিয়ে সাজানো হয়।"
একটি ছবিতে 'প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় জনৌষধি প্রকল্প' শব্দগুলি আলোর সাহায্যে কুতুব মিনারের ওপর ফুটিয়ে তোলা হয়।
সরকারি তথ্য-যাচাই সংস্থা 'পিআইবি ফ্যাক্ট চেক' গ্লোবাল টাইমস-এর দাবিটি খণ্ডন করে টুইট করে।
রাশিয়া দ্বারা ইউক্রেন আক্রমণ সংক্রান্ত বেশ কিছু ভুল ও মিথ্যে দাবি বুম আগেও খারিজ করেছে।
আরও পড়ুন: একই সিএনএন সাংবাদিকের আফগানিস্তান ও ইউক্রেনে মৃত্যুর খবরটি ভুয়ো