বিহারের (Bihar) সমস্তিপুরে তোলা একটি পুরনো ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ২০২০'র বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে, জনতাদল ইউনাইটেড-র (JDU) বিধায়ক মহেশ্বর হাজারিকে একদল লোক প্রচার কাজে বাধা দিচ্ছেন ও চলে যেতে বলছেন। সেই ভিডিও এই মিথ্যে দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে যে, বিজেপি'র (BJP) এক এমএলএ'কে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) একটি গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
ভিডিওটিতে মোটরসাইকেলে বসে থাকা এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায় যে, রাস্তার নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা তাঁকে ভোট দেবেন না। এবং বিধায়ককে গ্রাম থেকে চলে যেতে বলেন।
আগামী বছর উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে ভিডিওটি শেয়ার করা হচ্ছে।
ভিডিওটির সঙ্গে হিন্দিতে লেখা ক্যাপশনে বলা হয়েছে, "উত্তরপ্রদেশে পরিবর্তনের ঢেউ দেখা যাচ্ছে। মোদীজি ও যোগীজির সন্ধ্যে ঘনিয়ে আসছে। দু'বার জয়ী বিধায়ককে জনগণ ঢুকতে দিচ্ছেন না। দয়া করে শেয়ার করুন।"
দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
(হিন্দিতে লেখা ক্যাপশন: उत्तरप्रदेश में परिवर्तन की लहर चल चुकी है ! मोदी जी और योगी जी की शाम ढल चुकी है। दो बार के विधायक को जनता गांव में नहीं घुसने दे रही। शेयर जरुर करें)
আরও পড়ুন: ত্রিপুরার সাম্প্রদায়িক হিংসার সঙ্গে জোড়া হল পুরনো সম্পর্কহীন ছবি
তথ্য যাচাই
বুম দেখে, ভাইরাল ভিডিওটি অক্টোবর ২০২০তে তোলা। সেই সময়, বিহারের সমস্তিপুরে প্রচার করতে গেলে, স্থানীয় লোকেরা জেডিইউ বিধায়ক মহেশ্বর হাজারির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান।
ভিডিওটির প্রধান ফ্রেমগুলি বাছাই করে আমরা কি-ওয়ার্ড সার্চ করি। তার ফলাফল থেকে জানা যায় যে, ভিডিওটি ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে তোলা। এবং ওই নেতাকে বিহারের কল্যানপুর কেন্দ্রে জনতা দল ইউনাইটেড-এর বিধায়ক হিসেবে শনাক্ত করা হয়।
সার্চ থেকে পাওয়া ভিডিওটি ও ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্যগুলি হুবহু মিলে যায়। তা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, দু'টি ভিডিওই এক।
এই সূত্র ধরে আমরা 'জেডিইউ এমএলএ স্টপ্ড অ্যাট সমস্তিপুর' (জেডিইউ এমএলএ-কে সমস্তিপুরে আটকানো হল), এই কি-ওয়ার্ডগুলি দিয়ে সার্চ করি। তার ফলে, ওই ঘটনা সম্পর্কে কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদন আমরা দেখতে পাই।
১৯ অক্টোবর ২০২০ প্রকাশিত আজতক'র প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনাটি বিহারের সমস্তিপুরে কল্যাণপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ঘটে। বিহারের মন্ত্রী রামেশ্বর প্রসাদ বাইকে চড়ে সেখানে প্রচার করতে গেলে, গ্রামবাসীরা রাস্তাতেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। দশ বছরে মন্ত্রী কী কাজ করেছেন, গ্রামবাসীরা তার হিসেব চান।
ভাইরাল ভিডিওটি থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট ব্যবহার করে, ১৯ অক্টোবর ২০২০ ন্যাশনাল হেরাল্ড একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
নীতীশ কুমার সরকারকে আক্রমণ করে, রাষ্ট্রীয় জনতাদলের তেজস্বী যাদবও ওই একই ভিডিও টুইট করেছিলেন। ক্যাপশনে লিখেছিলেন, "কল্যাণপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ১০ বছরের বিধায়ক ও বিহার সরকারের মন্ত্রী রামেশ্বর প্রসাদকে বিক্ষুব্ধ মানুষ তাঁর নিজের গ্রামে ঢুকতে দেয়নি। তাঁরা রাস্তা নয়, তো ভোট নয় আওয়াজ তোলেন। নীতীশ কুমারের কাগুজে বিকাশ এখন সবাই ধরে ফেলেছে। তা সে জ্বর, জল জমা, বন্যা, খরা বা করোনা, যাই হোক না কেন।"
আরও পড়ুন: ২০১৯ সালে নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে অসমের ছবি ছড়াল ত্রিপুরা হিংসা বলে