রাজস্থানের আজমেঢ় শরিফ (Ajmer Sharif) দরগায় হাত-মুখ ধোয়ার চৌবাচ্চার মধ্যে বসানো ফোয়ারার ছবি, উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে জ্ঞানবাপী (Gyanvapi Mosque) মসজিদের সঙ্গে মিথ্যে করে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এবং দাবি করা হচ্ছে যে, হিন্দু মামলাকারীরা ওই ফোয়ারাটিকে শিবলিঙ্গ (Shivling) বলে ভুল করেছেন।
বুম দেখে, ভাইরাল ছবির ফোয়ারাটি জ্ঞানবাপী মসজিদের 'ওজুখানা' বা হাত-মুখ ধোয়ার জায়গায় অবস্থিত নয়। এবং মিথ্যে করে ওই মসজিদের সঙ্গে সেটিকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
৬ মে, ২০২২, বারাণসীর একটি আদালত, জ্ঞানবাপী মসজিদের একটি অংশ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। আদালতের তত্ত্বাবধানে মসজিদটির সার্ভে হওয়ার পর, হিন্দু মামলাকারীরা দাবি করেন যে, মসজিদটির একাংশে একটি শিবলিঙ্গ পাওয়া গেছে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই আদালত নির্দেশটি দেয়। অপর দিকে মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব করছে যে সংস্থা, সেই অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটি দাবি করে, যে-বস্তুটিকে শিবলিঙ্গ বলে দাবি করা হচ্ছে, সেটি আসলে একটি ফোয়ারা। এই মামলায় হিন্দুদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, মোগল আমলে তৈরি উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে অবস্তিত জ্ঞানবাপী মসজিদ একটি হিন্দু মন্দিরের ওপর নির্মাণ করা হয়। কিন্তু অপর পক্ষ এই দাবি সম্পর্কে আপত্তি করেছেন।
ছবিটি যে ক্যাপশন সমেত শেয়ার করা হচ্ছে, অনুবাদ করলে তার মানে দাঁড়ায়, "অন্ধ ভক্তরা যেটিকে শিবলিঙ্গ বলছেন, সেটি আসলে হাত-মুখ ধোয়ার চৌবাচ্চায় বসানো একটি ফোয়ারা। সেটির মাঝখানে একটি ফুটোও আছে!! আপনারা একটি ফোয়ারাকেও শিবলিঙ্গ বলছেন।"
(হিন্দিতে লেখা ক্যাপশন: अंध भक्त वजू खाने मे जिसे शिवलिंग बता रहे हैं असल में वो पानी का फव्वारा है और उसके बीच में एक छेद भी है !! पानी के फव्वारा को भी शिवलिंग समझ रहे हो)
দেখার জন্য ক্লিক করুন এখানে।
বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের সঙ্গে যুক্ত করে ছবিটি ফেসবুকেও শেয়ার করা হচ্ছে।
পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, "জ্ঞানবাপী মসজিদ সার্ভে মামলায় একটি বড় দাবি সামনে এসেছে। আইনজীবী বিষ্ণু জৈন-এর করা আবেদন অনুযায়ী, মসজিদের ওয়াজু খানায় লাগানো ফোয়ারাটি একটি শিবলিঙ্গ। তারপরই জজ সাহেব ওয়াজুখানা বন্ধ করার এবং মসজিদে ২০ জনের বেশি লোক যাতে না যান, সেই মর্মে নির্দেশ দেন।
(হিন্দিতে লেখা ক্যাপশন: ज्ञानवापी मस्जिद सर्वे मामले में बड़ा दावा प्रकाश में आया है. वकील विष्णु जैन की ओर से कोर्ट में दाखिल याचिका के मुताबिक, मस्जिद के वजूखाने में लगा ये फव्वारा शिवलिंग है। जिसके बाद जज साहब ने वजू खाने को सील करने और मस्जिद में सिर्फ 20 लोगों को ही जानें का आदेश जारी किया है ।)
দেখার জন্য ক্লিক করুন এখানে।
আরও পড়ুন: না, ভিডিওর মারধর খাওয়া ব্যক্তি শ্রীলঙ্কার তথ্য বা জনকল্যাণ মন্ত্রী নন
তথ্য যাচাই
গুগল ইমেজেস-এর সাহায্যে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে দেখা যায় যে, ভাইরাল ছবিটি পুরনো এবং সেটি রাজস্থানের আজমেঢ় শরিফ দরগায় তোলা হয়।
সার্চের ফলাফল থেকে জানা যায় যে, ছবিটি স্টক ফটোর ওয়েবসাইট 'অ্যালামি'তে ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬'য় আপলোড করা হয়। এবং সেটির ক্যাপশনে লেখা হয়, "হাত-মুখ ধোয়ার চৌবাচ্চা, আজমেঢ় শরিফ দরগা, রাজস্থান, ইন্ডিয়া।"
তাছাড়া, ভাইরাল ছবিটিতে ও নীচে দেওয়া মূল ছবিটিতে অ্যালামি'র জলছাপ স্পস্ট দেখা যাচ্ছে।
দেখার জন্য ক্লিক করুন এখানে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট: এনডিটিভির প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট সম্পাদিত