একাধিক ফেসবুক পোস্টে দাবি করা হয়েছে,হরিয়ানার (Haryana) যে চিকিৎসক গোবর (cow dung) খেয়েছেন এবং অন্যদের খাওয়ার পরামর্শও দিচ্ছেন, তিনি অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন। এই দাবিটি আসলে ভুয়ো।
পোস্টটিতে দু'টি ছবির একটি কোলাজ দেওয়া হয়েছে— একটিতে এক ব্যক্তিকে ইনটিউবেশন টিউব লাগানো অবস্থায় হাসপাতালের শয্যায়শুয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে, এবং অন্যটিতে ডাক্তার মনোজ মিত্তলকে (Manoj Mittal) গোবর খেতে দেখা যাচ্ছে।
মনোজ মিত্তলের গোবর খাওয়ার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকে তিনি বিখ্যাত হয়ে গেছেন। তাঁকে ভিডিওতে গোবরের স্বাস্থ্যকরী দিক নিয়ে বিভিন্ন দাবি করতে দেখা গিয়েছে, এমনকি অন্যদের গোবর খাওয়ার পরামর্শ দিতেও দেখা গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটির যথেষ্ট সমালোচনা হয়েছে এবং অনেকেই তাঁর দাবির জন্য ওই চিকিৎসকের নিন্দা করেছেন। ডাক্তার মিত্তল তাঁর ক্লিনিকের ওয়েবসাইটে দাবি করেছেন যে, তিনি এলাহাবাদ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেছেন। বুম এই দাবি যাচাই করেনি।
ছবিগুলির কোলাজের সঙ্গে যে ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে তার অনুবাদ, "করনালের এমবিবিএস চিকিৎসক, যিনি অন্যদের গোবর খেতে পরামর্শ দিতেন, গোবর খাওয়ার পর তাঁর নিজেরই পাকস্থলিতে সংক্রমণ হয়েছে এবং তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।"
পোস্টটি দেখার জন্য ক্লিক করুন এখানে।
(হিন্দিতে লেখা ক্যাপশন- करनालकाएमबीबीएसडॉक्टरजोदूसरोंकोगोबरखानेकीसलाहदेताथाखुदगोबरखाखाकरपेटमेंइन्फेक्शनकरबैठापहुंचामेडिकल)
ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে
আমরা দেখতে পাই যে, এই একই ছবির সেট একই মিথ্যে দাবির সঙ্গে ফেসবুকে শেয়ার করা হয়েছে।
পাঠকরা ভাইরাল হওয়া ছবিটি যাচাই করার জন্য বুমের হোয়্যাটসঅ্যাপ টিপলাইন নম্বরে (৭৭০০৯০৬১১১)পাঠিয়েছেন।
আরও পড়ুন: হাতুড়ি দিয়ে এক ব্যক্তিকে ফরিদাবাদে আক্রমণের ভিডিও সাম্প্রদায়িক রঙ নিল
তথ্য যাচাই
বুম যাচাই করে দেখে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা ব্যক্তির ভাইরাল হওয়া ছবিটি পুরানো এবং এই ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন। আমরা জানতে পারি যে, ছবির ভদ্রলোকের নাম বিধান থাপা।তিনি বেঁচে নেই।
রিভার্স ইমেজ সার্চ করে আমরা দেখতে পাই যে,আসল ছবিটি ২০১৭ সালে গো ফাউন্ডমি নামে একটি পেজে দেখা গিয়েছিল। ওই ছবির ক্যাপশন অনুসারে ছবির ব্যক্তির নাম বিধান থাপা। তিনি ২০১৭ সালের ১০ জুলাই মারা যান। আমেরিকা থেকে তাঁর দেহ নেপালে তাঁর বাড়িতে ফিরিয়ে আনার জন্য অর্থ সাহায্য জোগাড় করা শুরু হয়েছিল।
নীচে ছবিটি দেখতে পাবেন।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে যখন এই একই ছবি ভাইরাল হয় তখন এএফপি এই ছবির তথ্য যচাই করছিল। সেই সময় ওই ছবিতে মিথ্যে দাবি করা হয়েছিল যে, ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী মরণাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ডাক্তার মনোজ মিত্তল: "একেবারেই মিথ্যে। ভাইরাল হওয়া ছবিটি আমার নয়।"
বুম এরপর ডাক্তার মনোজ মিত্তলের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তিনি ভাইরাল হওয়া দাবিটি একেবারেই নস্যাৎ করে দেন, এবং বলেন যে, ভাইরাল হওয়া ছবিটি তাঁর নয়। তিনি যে হাসপাতালে ভর্তি হননি, তাও জানিয়ে দেন।
ডাক্তার মিত্তল বলেন, "এই দাবি একেবারেই ভুয়ো। সোশাল মিডিয়ায় যে ছবিটি দেখা যাচ্ছে, সেটি মোটেই আমার নয়। আর আমি হাসপাতালেও ভর্তি হইনি।"
তিনি আরও বলেন, "আমি গতকাল আইবিএন২৪ নিউজকে আমার ক্লিনিকে বসে সাক্ষাৎকারও দিয়েছি।"
৩.২৭ মিনিটের পর তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে, তিনি একেবারেই সুস্থ আছেন এবং তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি।