একটি বাজার এলাকায় এক দল পুলিশকে জনতার ওপর লাঠি চালাতে দেখা যাচ্ছে এক অস্বস্তিকর ভিডিওতে। ভিডিওটি এই মিথ্যে দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে যে, উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) কানপুরে (Kanpur) সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের (Communal Clash) সময় ঘটনাটি ঘটে।
বুম দেখে ভিডিওটি ২০১৯ সালের। সেই সময়, উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরে সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠি চালায়।
২৭ মে, একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে, এখন সাসপেন্ড হওয়া বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মা, পয়গম্বর মহম্মদের বিরুদ্ধে মন্তব্য করার প্রতিবাদে, ৩ জুন, ২০২২, কানপুরের বেকানগঞ্জ এলাকায় বন্ধ ডাকা হয়। সেই বন্ধ চলা কালে, সেখানে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ বাধে। তাতে পুলিশ কর্মী সহ বেশ কিছু মানুষ আহত হন।
কিছু পুলিশ কর্মীকে জনতার ওপর লাঠি চালাতে দেখা যায় ওই ভিডিওটিতে। একটি হিন্দি ঘোষণা জুড়ে দেওয়া হয়েছে সেটিতে। তাতে একটি ধর্মীয় ভোজের আয়োজন থেকে জনসাধারণকে প্রসাদ নিতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
ব্যঙ্গাত্মক হিন্দি ক্যাপশন সহ ভিডিওটি শেয়ার করা হচ্ছে। তাতে বলা হয়েছে, "যোগীজির জন্মদিন উপলক্ষে, কানপুরে এক বিশাল ভোজের আয়োজন করা হয়েছে। যাঁরা ওই প্রসাদ পেতে চান, তাঁরা লাইন করে আসুন। তাঁদের পুরো মাত্রায় প্রসাদ দেওয়া হবে। যাতে কাউকে আর ফিরে না আসতে হয়। আসুন, আর প্রসাদ গ্রহণ করুন..."
(হিন্দিতে মূল ক্যাপশন: योगी_जी के जन्मदिन के अवसर पर. यह विशाल भंडारा कानपुर में चल रहा है जिन्हें भी विशाल भंडारे में प्रसाद लेना चाहते हैं वह लाइन से क्रमबद्ध होकर अवश्य पधारें उन्हें प्रसाद संपूर्ण रूप से दिया जाएगा ताकि दोबारा आपको प्रसाद लेने की आवश्यकता ना पड़े आइए और प्रसाद ग्रहण कीजिए विशाल भंडारे में आप ही का प्रसाद है और आप ही को दिया जा रहा है जैसा आप ने बनाया है वैसा ही आप को परोसा जा रहा है)
ফেসবুক পোস্টটি দেখুন এখানে।
অন্যান্য অনেক ফেসবুক পেজ থেকে, ওই ভিডিওটি একই দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে।
তথ্য যাচাই
বুম দেখে ভিডিওটি ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে তোলা হয়। সেই সময়, উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরে, সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ লাঠি চালায়।
ভিডিওটির মূল ফ্রেমগুলি দিয়ে আমরা রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। সেই সঙ্গে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড দিয়েও সার্চ করা হয়। তার ফলে, লাইভ হিন্দুস্থান-এ আমরা একটি রিপোর্ট দেখতে পাই।
১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ প্রকাশিত লাইভ হিন্দুস্থানের রিপোর্টে ভাইরাল ক্লিপটির দৃশ্যই দেখা যায়। রিপোর্টটির হিন্দিতে লেখা শিরোনামে বলা হয়, "গোরক্ষপুর: পাথর ছোঁড়ায় দু' জন আহত; সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর চলল লাঠি"।
ওই প্রতিবেদনে আমরা ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্যই দেখি।
ভিডিওটির বিবরণে বলা হয়, "নাখাস চৌকে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালে পাথর ছোঁড়ার ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ও উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিও চালায়।"
ওই বিবরণে আরও বলা হয় যে, প্রতিবাদকারীরা শুক্রবারের নামাজের পর পদযাত্রা করছিলেন। নাখাস চৌকে পৌঁছলে, কেউ একজন পাথর ছোঁড়ে। পাথর ছোঁড়ার পর পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে, পুলিশ লাঠি চালায়।
ফেসবুকে ভাইরাল ভিডিওটিরই একটি বড় সংস্করণ দেখতে পায় বুম। ডিসেম্বর ২০১৯-এ সেটি পোস্ট করা হয়েছিল।
২০ ডিসেম্বর, ২০১৯-এ করা পোস্টটির হিন্দি ক্যাপশনে বলা হয়, "গোরক্ষপুর: নামাজের পর নাখাস চৌক এলাকায় বড় ধরনের প্রতিবাদ। পুলিশ আর বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পাথর ছোঁড়া হয়। মারমুখী জনতার ওপর পুলিশ লাঠি চালায়।"
(হিন্দিতে ক্যাপশন: #गोरखपुर: मुख्यमंत्री योगी आदित्यनाथ के गढ़ में नखास चौक पर नमाज के बाद भारी विरोध प्रदर्शन, पुलिस और प्रदर्शनकारियों के बीच हुई जमकर झड़प, जमकर चले ईंट-पत्थर और जूते, पुलिस ने हिंसक भीड़ पर भांजी लाठियां।)