বাংলাদেশের (Bangladesh) সাম্প্রদায়িক হিংসার প্রেক্ষিতে সোশাল মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) একটি ভুয়ো কাল্পনিক উক্তি (Fictional Quote) গ্রাফিক পোস্ট (Graphic) শেয়ার করা হচ্ছে।
বুম যাচাই করে দেখে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শেখ হাসিনার উদ্দেশে (Sheikh Hasina) এই ধরণের কোনও মন্তব্য করেনি। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফেও এই ধরণের কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
১৩ অক্টোবর ২০২১ বাংলাদেশে দুর্গাপুজোর সময় কুমিল্লার এক পূজা মণ্ডপে কোরান রাখাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ায়। ৭ ব্যক্তির মৃত্যু হয় এই সাম্প্রদায়িক হিংসায়। তাণ্ডব চালানো হয় বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে। ঘটনার উত্তাপ এসে লাগে পড়শি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে। বাংলাদেশের ঘটনার প্রতিবাদে ২৬ অক্টোবর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ উত্তর ত্রিপুরার পানিসাগরের বিভিন্ন এলাকায় র্যালি বের করে। ওই প্রতিবাদ মিছিল এক মসজিদে আক্রমণ করা হয়, রোয়া বাজারের দোকানপাট ও বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ।
শিখ ধর্মাবল্মীদের প্রতীকী গেরুয়া কাপড় বাঁধা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি শেয়ার করে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া গ্রাফিক পোস্টটিতে লেখা হয়েছে, "বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতে এবার যদি ভারতে মসজিদে হামলা শুরু হয় তার দায়ী শেখ হাসিনাকে নিতে হবে—নরেন্দ্র মোদী।" সংশ্লিষ্ট এই উক্তিকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য বলে ছড়ানো হচ্ছে।
গ্রাফিক পোস্টটি ফেসবুকে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, " মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়। জয় হিন্দুস্তান।"
পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
বুম দেখে ওই একই গ্রাফিক পোস্ট শেয়ার করেছেন অন্যান্য ফেসবুক ব্যবহারকারী।
আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরুতে এক অপরাধীকে হত্যার দৃশ্য ছড়াল ত্রিপুরায় হিংসার ঘটনা বলে
তথ্য যাচাই
বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক হিংসা নিয়ে "শেখ হাসিনাকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য" গুগলে কিওয়ার্ড সার্চ করে বুম কোনও সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পায়নি।
বুম নরেন্দ্র মোদীর টুইটার অ্যাকাউন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব দপ্তরের টুইটার অ্যাকাউন্টে কিওয়ার্ড সার্চ করে দেখে প্রধানমন্ত্রী এই ধরণের কোনও বক্তব্য রাখেননি বাংলাদেশের হিংসার ঘটনা সম্পর্কে।
১৪ অক্টোবর ২০২১ দ্য হিন্দু প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ভারতের তরফে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী জানান, "আমরা বাংলাদেশে ধর্মীয় সমাবেশে হামলার সাথে জড়িত অপ্রীতিকর ঘটনার কিছু প্রতিবেদন দেখেছি। আমরা লক্ষ্য করছি যে বাংলাদেশ সরকার আইনত ভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার জন্য অবিলম্বে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। আমরা বুঝতে পেরেছি বাংলাদেশী সংস্থা এবং অবশ্যই সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সমর্থনে বাংলাদেশে চলা দুর্গাপূজা অব্যাহত থাকবে।"
১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধে ভারতের বায়ু সেনার ভূমিকা প্রসঙ্গে এক আলোচনায় ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রীঙ্গালা ২৩ অক্টোবর ২০২১ ভারত ও বাংলাদেশের আদর্শ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য প্রকাশ করেন।
বুম ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বাংলাদেশের হিংসা প্রসঙ্গে এই ধরণের কোনও মন্তব্য খুঁজে পায়নি।
আরও পড়ুন: পুরনো সম্পর্কহীন ছবি ত্রিপুরার পানিসাগরে হিংসার ঘটনা বলে ছড়াল