Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available

Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available
ফ্যাক্ট চেক

বুট কেনার সামর্থ্যের অভাবে ১৯৪৮ অলিম্পিকে ভারতীয় ফুটবল দল খালি পায়ে খেলে?

খেলোয়াড়দের সঙ্গে বুট ছিল কিন্তু তাঁরা খালি পায়ে খেলায় বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করতেন বলেই বুট পরে খেলার মাঠে নামেননি।

By - Archis Chowdhury | 29 Nov 2022 12:20 PM GMT

তিন জন ভারতীয় ফুটবলার (Indian Footballers) ১৯৪৮ সালের লন্ডন অলিম্পিকে (London Olympics) খালি পায়ে মাঠে হাঁটছেন, এরকম একটি ছবি সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, ফ্রান্সের কাছে ভারতীয় ফুটবল দলের পরাজয়ের কারণ ছিল, তাঁদের বুট (Boots) কেনার পয়সা ছিল না। স্বাধীনতা-উত্তর ভারতীয় রাজনীতিতে নেহরু-গাঁধী (Jawaharlal Nehru) পরিবারের ভূমিকাকে হেয় করার উদ্দেশ্যেই এ ধরনের পোস্ট শেয়ার করা হয়েছে।

বুম দেখে এই দাবির দাবি সম্পূর্ণ ভুয়ো। অলিম্পিক সংক্রান্ত প্রতিবেদনের আর্কাইভ ঘেঁটে এবং বিশেষত ১৯৪৮-এর লন্ডন অলিম্পিকের কাগজপত্র খুঁজে আমরা দেখেছি, ভারতীয় ফুটবলারদের সকলের কাছেই বুট ছিল, কিন্তু তাঁদের অধিকাংশই বুট পরে খেলতে অভ্যস্ত না হওয়ায় খালি পায়ে মাঠে নেমেছিলেন।

ফেসবুক পোস্টে যে ছবিটি ভাইরাল করা হয়েছে, সেটিও ছাঁটাই করা। আর ফিফা'র টুইট করা সম্পূর্ণ ছবিতে অন্য ফুটবলারদের পায়ে বুট রয়েছে।

জনৈক ফেসবুক ব্যবহারকারী এই ছবিটি পোস্ট করে হিন্দিতে যা লিখেছেন, তার বঙ্গানুবাদ হল, "এই ছবিটা দেখার পর আপনারা গাঁধী পরিবারকে ঘৃণা করতে বাধ্য... এবং হ্যাঁ, এটা তখনকার ছবি, যখন নেহরুর জামাকাপড় ও জুতো বিশেষ বিমানে করে আসত। এটা ১৯৪৮ সালে অনুষ্ঠিত লন্ডন অলিম্পিকের একটি ছবি, যখন আমাদের ফুটবল দল ফ্রান্সের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছিল। আমাদের ফুটবলাররা জিততে পারেনি, কেননা তাদের পরার মতো বুটই ছিল না। এবং তারা পুরো ম্যাচটাই খালি পায়ে খেলতে বাধ্য হয়, যার ফলে অনেকে আহতও হন। তা সত্ত্বেও তাঁরা ড্র করেছিলেন। শৈলেন মান্না ছিলেন এই দলের ক্যাপ্টেন। তিনি ছিলেন বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফুটবলার। কিন্তু ভারতীয় ফুটবলারদের পায়ে বুট ছিল না কেন? কারণ বুট কেনার সামর্থ্য সরকারের ছিল না। নেহরুর জামাকাপড় তখন প্যারিস থেকে ধুয়ে আসত এবং তিনি ব্যক্তিগত বিমানে নিজের পোষা কুকুর নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন। ১৯৫০ সালে এ জন্যই ফিফা বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের খেলা নিষিদ্ধ করে দেয়, কেননা জুতো না পরে কোনও দলের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের অনুমতি ছিল না। এর পরে আর কখনও ফিফা আয়োজিত বিশ্বকাপ ফুটবলের আসরে ভারত যোগদানের সুযোগ পায়নি। আর আজকে নেহরু-গাঁধী পরিবারের সদস্যদের নামে ভারতের একাধিক স্টেডিয়াম গড়া হয়েছে।"

এই পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখুন


তথ্য যাচাই

বুম সার্চ করে ফিফার একটি ২০১৮ সালের ৩১ জুলাইয়ের পুরনো টুইট উদ্ধার করে, যাতে এই ছবিটি ব্যবহৃত হয়েছিল। সেটা ছিল ১৯৪৮ সালের ৩১জুলাই লন্ডন অলিম্পিকে ভারতীয় ফুটবল দলের আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশগ্রহণের একমাত্র স্মারক।

টুইটারের সেই মূল ছবিটির সঙ্গে ফেসবুকে ভাইরাল ছবির তুলনা করে আমরা দেখেছি, শেষোক্ত ছবিটি কাটছাঁট করে তৈরি করা। ফিফার টুইট করা মূল ছবিটিতে আরও একজন ফুটবলারকে দেখা যাচ্ছে, যাঁর পায়ে কিন্তু বুট পরা।

তা ছাড়া, ছবির ক্যাপশনে ফিফা লিখেছে "অধিকাংশ" ভারতীয় খেলোয়াড়ের খালি পায়ে খেলার কথা, "সকলের" নয়।


ফিফার টুইটটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে

একই সঙ্গে আমরা সেই খেলার পরের দিন, অর্থাত্ ১৯৪৮ সালের ১ অগস্ট থেকে মিডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের আর্কাইভ খোঁজ করি সেখানে ভারতীয় ফুটবল দলের খালি পায়ে খেলা সম্পর্কে ঠিক কী লেখা হয়েছিল জানতে।

১ অগস্ট ১৯৪৮, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ফিফার বক্তব্য সমর্থন করে লেখে, ভারতীয় দলের একাংশই খালি পায়ে নেমেছিলl তাতে লেখা ছিল, "৮ জন ভারতীয় ফুটবলারের পায়ে জুতো ছিল না, কিন্তু তাতে তাদের বল মারতে কোনও সমস্যা হয়নি।"


১৯৪৮ সালের ৬ মে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত অন্য একটি প্রতিবেদনে লেখা হয়, ফুটবলারদের সকলের সঙ্গেই বুট ছিল। প্রতিযোগিতার আগের প্রস্তুতি ম্যাচ সম্পর্কে লিখতে গিয়ে সেখানে লেখা হয়, "আগে বৃষ্টি হয়ে মাঠ পিছল হয়ে যাওয়ায় সব ফুটবলারই অনুশীলনে বুট পরেই নেমেছিলেন।"


২০১৪ সালের দ্য হিন্দু গণমাধ্যমের স্পোর্টস স্টার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আরও আলোকপাত করা হয়। প্রতিবেদনটি শুরুই হয়েছিল এই ভাবে: "জুতো ছাড়াই খেলতে অভ্যস্ত ভারতীয় ফুটবলাররা স্বভাবতই খালি পায়ে খেলতে রীতিমত স্বচ্ছন্দ বোধ করতেন।"

ওই প্রতিবেদনে লন্ডন অলিম্পিকে ভারতীয় ফুটবল দলের প্রশিক্ষক বি ডি চ্যাটার্জিকেও উদ্ধৃত করে লেখা হয়—খেলোয়াড়দের সকলের সঙ্গেই বুট ছিল।

স্পোর্টসক্রিড়ার ক্রীড়া-উপদেষ্টা রঞ্জন থাম্বেহাল্লি ২০১৬ সালের ৭ অগস্ট ফুটবলারদের বুট না পরার মনোভাব সম্পর্কে আরও বিশদে বলেন। তিনি লেখেন— 

"বুট পরে খেলার সিদ্ধান্ত নিতে ভারতীয় ফুটবলাররা বাধ্য হতেন, যদি বৃষ্টি হয়ে মাঠ পিচ্ছিল হয়ে যেত। কিন্তু মাঠ শুকনো থাকলে অধিকাংশ ফুটবলারই খালি পায়ে খেলতে চাইতেন, শুধু পায়ে ব্যান্ডেজ জড়িয়ে নিয়ে, যাতে বেশি চোট না লাগে। জুতো পরার সামর্থ্যের কথা এ ক্ষেত্রে অবান্তর। আসলে কথা হল ফুটবলাররা কীসে স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন।"

অলিম্পিকের ওয়েবসাইটে তখনকার ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক তালিমেরেন আও বলেন—"দেখো, আমরা ভারতীয়রা ফুটবল খেলি, কিন্তু তোমরা খেলো বুটবল।"

বুম এই ভুয়ো দাবি সর্বপ্রথম ২০২২ সালের অগস্ট মাসে তথ্য-যাচাই করে। 

আরও পড়ুন: কেরলে এক ব্যক্তির নাবালিকাকে মাটিতে আছাড়ের ভিডিও ধর্মীয় দাবিতে ছড়াল

Related Stories