বাঙালি সাহিত্যিক (Bengali author) এবং বাংলাদেশের শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবালের (Muhammed Zafar Iqbal) শিশু রহস্য সাহিত্য বিষয়ক বইয়ের (book cover) মালাটের ছবি সম্পাদনা করে সোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর (fake news) ছড়ানো হচ্ছে।
বুম যাচাই করে দেখে ভাইরাল ছবিটি মুহম্মদ জাফর ইকবালের “যেটুকু টুনটুনি সেটুকু ছোটাচ্চু” (Jetuku Tuntuni Setuku Chotacchu) বইয়ের মলাটে শিরোনাম বদলে ভিন্ন শব্দ বসানো হয়েছে।
সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায় ই-বাণিজ্য সংস্থা থেকে একটি বই কেনা হয়েছে। বইটির শিরোনাম, “যেটুকু টুনটুনি সেটুকু বাড়া” এবং সংশ্লিষ্ট বইয়ের লেখক হিসাবে নাম রয়েছে—সুবর্ন আইজ্যাক-এর।
ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, “আজই সংগ্রহ করুন আপনার কপি”।
সম্পাদনা করা বইয়ের ছবিটি ব্যাপকভাবে ফেসবুকে ছড়ানো হচ্ছে। একটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম বইটির শিরোনামের শেষ শব্দের হরফের ধরণ দেখে সন্দেহ প্রকাশ করে। শিরোনামের অন্যান্য শব্দের সঙ্গে অমিল রয়েছে ওই হরফের।
আসল বই: যেটুকু টুনটুনি সেটুকু ছোটাচ্চু
বুম গুগলে “যেটুকু টুনটুনি সেটুকু” কিওয়ার্ড সার্চ করতেই “যেটুকু টুনটুনি সেটুকু ছোটাচ্চু” আসল বইটির নাম খুঁজে পায়।
বুম দেখে “যেটুকু টুনটুনি সেটুকু ছোটাচ্চু” নামের আসল বইটির লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
অ্যামাজনের মালিকানাধীন বই তালিকাকরণ সোশাল মিডিয়া গুডরিডসে দেখুন মূল বইটি।
এছাড়াও বিভিন্ন ই-বাণিজ্য ওয়েবসাইট যেমন রকমারি ও অ্যামাজনে রয়েছে জাফরের বইটি।
বুম লক্ষ্য করে ‘তনভীর এইচ’ নামে এক ক্রেতা বইটি পাওয়ার পর ওই পণ্যের ছবি পোস্ট করেছেন 'দারাজ'-এ। চিনা সংস্থা আলিবাবার সহযোগী 'দারাজ' দক্ষিন এশিয়ার বিভিন্ন দেশের একটি ই-বাণিজ্য ওয়েবসাইট। বাংলাদেশেও রয়েছে ওই সংস্থার নিজস্ব ওয়েবসাইট।
বুম দেখে ‘তনভীর এইচ’-এর ওই মূল ছবিটি থেকেই ফোটোশপ করে তৈরি করা হয়েছে ভাইরাল ছবিটি। নিচে আসল ছবি ও ভুয়ো ছবির তুলনা দেওয়া হল।
জাফর বিদেশে ১৮ বছর গবেষক-বিজ্ঞানী জীবন কাটানোর পর দেশে ফিরে অধ্যাপক হিসাবে যোগ দেন শাহজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সেখান থেকে অবসর নেন ২০১৯ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার কীর্তি ছাত্র জাফরের জন্ম বাংলাদেশের সিলেটে।
সংবাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ৩ মার্চ কট্টরপন্থী আততায়ীর হাতে ছুরিকাহত হন জাফর। বাংলাদেশের মৌলবাদী রাজনীতি ও অসহিষ্ণুতা বৃদ্ধি নিয়ে অতীতে সমালোচনা করেছেন।
২০২৩ সালে জাফর ইকবাল সহ-সম্পাদিত সপ্তম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেলের ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি টুকে গুগল ট্রান্সলেটরের সাহায্যে অনুবাদের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের সত্যতা ও সম্পাদনা ত্রুটি স্বীকার করে নেন জাফর ইকবাল।
বিস্ময় বালক সুবর্ণ আইজ্যাক
বুম গুগলে সুবর্ণ আইজ্যাক নামে কিওয়ার্ড সার্চ করে আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশ বংশদ্ভূত সুবর্ণ আইজ্যাক বারী (Soborno Isaac Bari) নামে এক 'বিস্ময় বালক'-এর হদিস পায়। তবে সুবর্ণের বিস্ময় সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। পড়ুন যমুনা টিভি ও প্রথম আলোর রিপোর্ট।
আমরা 'সুবর্ন আইজ্যাক' নামের কোনও লেখকের আসল বইয়ের হদিস পাইনি।