একটি বাড়ির ফ্রিজ থেকে এক মহিলার পচন ধরা মৃতদেহ উদ্ধারের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রতি শেয়ার করে ভুয়ো সাম্প্রদায়িক দাবি (communal claim) করা হয়েছে ঘটনাটি মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) এবং ভুক্তভোগী একজন মুসলিম মহিলা (Muslim woman), যিনি ধর্ম পরিবর্তন করা স্বত্বেও তার হিন্দু স্বামী (Hindu husband) তাকে খুন করে।
বুম দেখে মধ্যপ্রদেশের এই ঘটনায় মহিলাকে হত্যা করেছিল তার লিভ-ইন পার্টনার। মধ্যপ্রদেশে পুলিশ ভাইরাল সাম্প্রদায়িক দাবিকে নস্যাৎ করে বুমকে নিশ্চিত করে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত উভয়ই হিন্দু সম্প্রদায়ের।
বুম ভিডিওটির স্পর্শকাতর বিষয়বস্তুর জন্য প্রতিবেদনে পোস্টটি অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ফেসবুকে এক ব্যবহারকারী ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে দাবি করেন, “ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের দেওয়াসে। হিন্দু সঞ্জয় পতিদার ও মুসলিম মেয়ে গুলনাজ পালিয়ে বিয়ে করেছিল, ঘরের দরজা ৪ দিন বন্ধ ছিল, লোকজন দরজা ভেঙ্গে দেখে গুলনাজের লাশ ফ্রিজে রেখেছিল। না মিলা দ্বীন না মিলা দুনিয়া ফি নারি জাহান্নাম হে আমার প্রিয় বোন কাফেরদের সাথে হারাম রিলেশন করবেন না জানেন শেষ পরিণতি কি হবে আপনার।”
তথ্য যাচাই
আমরা প্রথমে এক্সে কিওয়ার্ড সার্চ করে ওয়্যার এজেন্সি আইএএনএস-এর ২০২৫ সালের ১০ জানুয়ারির একটি পোস্ট পাই, যেখানে ভাইরাল ভিডিওর দৃশ্য দেখা যায়।
আইএএনএস-এর পোস্ট থেকে জানা যায় পুলিশ মধ্যপ্রদেশের দেওয়াসের বৃন্দাবন ধাম কলোনিতে একটি ফ্রিজ থেকে এক মহিলার মৃতদেহ পেয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত শুরু করছে।
পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন এবং আর্কাইভের জন্য এখানে ক্লিক করুন।
আমরা ১১ জানুয়ারী, ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত দ্য হিন্দুর একটি প্রতিবেদন পাই, যেখানে মৃতার নাম প্রতিভা প্রজাপতি হিসাবে জানানো হয়।প্রতিবেদন অনুসারে প্রতিভা তার লিভ-ইন পার্টনার, ৪৪ বছর বয়সী সঞ্জয় পতিদারের সাথে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত ওই বাড়িতে থাকতেন।
দ্য হিন্দুকে দেওয়া দেওয়াসের পুলিশ সুপার পুনীত গেহলটের বক্তব্য ভুক্তভোগীর নাম ও হিন্দু পরিচয় নিশ্চিত করে। প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, সঞ্জয় পতিদার বিবাহিত হওয়া স্বত্বেও ভুক্তভোগী প্রতিভার সাথে সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। সঞ্জয়ের বন্ধু বিনোদ দাভের বিরুদ্ধেও এই হত্যায় সহযোগিতা করার অভিযোগ রয়েছে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন জানায় ভুক্তভোগীর পরিবার তার দেহ গ্রহণ করতে অস্বীকার করার পরে তারই সম্প্রদায়ের এক সদস্য দুর্গাশঙ্কর প্রজাপত মহিলার মৃতদেহ দাবি করেন।
এরপর, আমরা গেহলটের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সাম্প্রদায়িক দাবিটিকে খণ্ডন করে নিশ্চিত করেন ভুক্তভোগী এবং অভিযুক্তরা সকলেই হিন্দু সম্প্রদায়ের।
গেহলট বুমকে বলেন, "দাবিটি সম্পূর্ণ ভুয়ো। তিনি একটি হিন্দু পরিবারের সদস্য ছিলেন এবং আমরা তার বাবা-মা ও পরিবার সম্পর্কে অবগত। তারা উজ্জয়িনীর স্থানীয় বাসিন্দা। এই ঘটনার কোনও সাম্প্রদায়িক দিক নেই।”