গুজরাতের (Gujarat) ছোট উদয়পুরে (Chhotaudepur) এক স্কুল শিক্ষকের (school teacher) দেবী সরস্বতীর ছবিতে লাথি মারার ভিডিও ভুয়ো (fake claims) দাবিতে ছড়ানো হচ্ছে যে ওই ব্যক্তি ধর্ম পরিচয়ে মুসলমান (Muslim)।
বুম যাচাই করে দেখে যোগেশ রথওয়া (Yogesh Rathwa) নামের ওই ব্যক্তি হিন্দু ধর্মাবল্মী এবং ওই ওই স্কুলের পরিদর্শক শিক্ষক।
ওই ব্যক্তি কেন রেগে গেলেন, ৩৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিও থেকে তা বোঝা যায় না। ভিডিওটিতে কেবল ওই ব্যক্তিকে ছবিটিতে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দিতে দেখা যায়।
ভিডিওটি কন্নড় ভাষায় ফেসবুক ও টুইটারে শেয়ার করা হচ্ছে। সেটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, "এই জেহাদি, যে সরস্বতীকে লাথি মেরেছে, আমাদের ভগবান যেন তাকে রেহাই না দেন। যে সন্ত্রাস সৃষ্টিকারীরা তাদের ধর্মের দোহাই দিয়ে 'ধড় থেকে মাথা আলাদা করে দেওয়ার' হুমকি দেয়, ভগবান তাদের পা ধড় থেকে আলাদা করে দেবেন।"
টুইটটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে। আর্কাইভ করা আছে এখানে।
(মূল কন্নড় ভাষায় ক্যাপশন: "ನಮ್ಮ ದೇವರು ಸರಸ್ವತಿಯನ್ನು ಕಾಲಿನಿಂದ ಒದ್ದ ಈ ಜಿಹಾದಿಯನ್ನು ಸುಮ್ನೆ ಬಿಡಬಾರದು.. ತಮ್ಮ ಧರ್ಮದ ಬಗ್ಗೆ ಮಾತಾಡಿದರೆ "ಸರ್ ತನ್ ಸೇ ಜುದಾ" ಮಾಡುವ ಭಯಉತ್ಪಾದಕರು.. ಆ ದೇವರೇ ಇವನ ಕಾಲನ್ನು ತನ್ ಸೇ ಜುದಾ ಮಾಡುತ್ತಾರೆ..")
টুইটটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম যাচাই করে দেখে ভিডিওতে ব্যক্তি মুসলমান নন। এবং ভাইরাল দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যে।
আমরা ছোটাউদেপুরের এসপি ধর্মেন্দ্র শর্মার সঙ্গে কথা বলি। তিনি সাম্প্রদায়িক দাবিটি উড়িয়ে দেন। শর্মা বুমকে বলেন, "লোকটি মুসলমান নন। তাঁর নাম যোগেশ রথওয়া, ওই অঞ্চলে বসবাসকারি একজন হিন্দু আদিবাসী।"
তিনি আরও বলেন, "তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধের মামলাও রুজু করা হয়েছে।"
অভিযুক্ত ব্যক্তি ও যিনি ভিডিও তুলছেন, তাঁদের মধ্যে গুজরাতি ভাষায় কথোপকথনকে সূত্র ধরে আমরা
গুজরাতি কিওয়ার্ড দিয়ে ইউটিউবে সার্চ করি।
এর ফলে ঘটনার ওপর এবিপি অস্মিতা'র একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন দেখতে পাই আমরা।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ভিডিওর ওই ব্যক্তি হলেন যোগেশ রথওয়া। গুজরাতের ছোটো উদয়পুর জেলার নসভাডিতে গেলেসার প্রাইমারি স্কুলের পরিদর্শক শিক্ষক তিনি। ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ঘটনাটি ঘটে। সেই সময় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রথওয়া সরস্বতীর ছবিতে লাথি মারতে থাকেন। ওই ঘটনার ভিডিওটি কয়েক দিন পরে ভাইরাল হয়ে যায়। স্কুলের পরিচালন সমিতির একজন সদস্যের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁকে আটক করে।
জি ২৪ কলাক-এর প্রতিবেদনেও ওই ঘটনা সম্পর্কে খবর করা হয়। তাতেও অভিযুক্তকে যোগেশ রথওয়া বলেই শনাক্ত করা হয়েছে। রিপোর্টটির একটি অনুবাদ করা স্ক্রিনশট নীচে দেওয়া হল।
যেহেতু প্রতিবেদনগুলিতে অভিযুক্তকে যোগেশ রথওয়া নামে শনাক্ত করা হয়েছে, তাই আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পরেছি যে তিনি মুসলমান নন। এবং যে সাম্প্রদায়িক দাবিটি ছড়ানো হচ্ছে, সেটি মিথ্যে।
(অতিরিক্ত রিপোর্টিং মহম্মদ সালমান)