Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available

Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available
ফ্যাক্ট চেক

না, জয়শঙ্করের মন্তব্যের জেরে কানাডা অস্ট্রেলিয়া টুডের ফেসবুক পেজ নিষিদ্ধ করেনি

বুম দেখে অস্ট্রেলিয়া টুডের ফেসবুক পেজে পোস্টগুলি দৃশ্যমান নয় কারণ মেটা কানাডায় তার প্ল্যাটফর্মগুলিতে সমস্ত সংবাদ সংক্রান্ত বিষয়বস্তুর (স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক) উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

By -  Nivedita Niranjankumar |

10 Nov 2024 5:13 PM IST

বাংলা তথা সারা দেশের বিভিন্ন মূলধারার সংবাদমাধ্যম সম্প্রতি কানাডার (Canada) সরকার অস্ট্রেলিয়ার (Australia) এক সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক পেজের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বলে খবর প্রকাশ করে। ওই নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে দাবি করা হয় অস্ট্রেলিয়ার সেই সংবাদমাধ্যম ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (S Jaishankar) ও তার অস্ট্রেলিয়ান প্রতিপক্ষ পেনি ওয়াংয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে জয়শঙ্করের কানাডার বিরুদ্ধে করা কড়া মন্তব্য সম্প্রচারের কারণেই সংবাদমাধ্যমটির বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়। 

বুম দেখে দাবিটি ভুয়ো। কানাডা সরকারের কোনও নির্দিষ্ট আদেশের অধীনে অস্ট্রেলিয়া টুডের ওয়েবসাইট বা তার ফেসবুক পেজটি ব্লক করা হয়নি। অস্ট্রেলিয়া টুডের ফেসবুক পেজে পোস্টগুলি দৃশ্যমান নয় তার কারণ মেটা কানাডায় তার প্ল্যাটফর্মগুলিতে সমস্ত সংবাদ সংক্রান্ত বিষয়বস্তুর (স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক উভয়ের) উপরই  নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ফেসবুকের অধিকর্তা মেটা কানাডার অনলাইন নিউজ অ্যাক্ট ২০২৩ নিয়ে কানাডা সরকারের সঙ্গে অচলাবস্থায় রয়েছে। উক্ত আইনে মেটা ও গুগলের মতো প্রভাবশালী প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্মের থেকে সংবাদ সংক্রান্ত বিষয়বস্তু পোস্ট করার জন্য অর্থ দাবি করা হয়।

দ্য অস্ট্রেলিয়া টুডে সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক ভুয়ো এই দাবি করলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সেই দাবি ব্যাপকভাবে সম্প্রচার করে।

জয়সওয়াল একটি সংবাদ সম্মেলনে দ্য অস্ট্রেলিয়া টুডেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবাসী আউটলেট হিসাবে দাবি করে বলেন এই নিষেধাজ্ঞা, "... আরও একবার বাকস্বাধীনতার প্রতি কানাডার কপটতাকে তুলে ধরেছে।"

বর্তমানে ভারত ও কানাডার মধ্যে থাকা সর্বনিম্ন পর্যায়ের কূটনৈতিক সম্পর্কের আবহে ভাইরাল হয় এই দাবি। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সেদেশে খলিস্তানপন্থী চরমপন্থী এবং কানাডার নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যার সাথে ভারতীয় সরকারী এজেন্টদের জড়িত থাকার অভিযোগ করার পর থেকেই দুই দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সাম্প্রতিক এই পরিস্থিতিতে উভয় দেশই তাদের শীর্ষ কূটনীতিকদের বহিষ্কার করার এবং কনস্যুলার অফিসারদের সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কানাডার মন্দিরগুলিতে ভারত-বিরোধী গ্রাফিতি এবং আরও সম্প্রতি, ব্রাম্পটনে হিন্দু সভা মন্দিরে ভক্তদের উপর কথিত খলিস্তানপন্থী সদস্যদের দ্বারা হামলার অভিযোগ উঠেছে।

গত ৬ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় সেদেশের বিদেশ মন্ত্রীর সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে জয়শঙ্কর এই হামলার নিন্দা করেন এবং কানাডার বিরুদ্ধে আরও কঠোর মন্তব্য করে বলেন হিংসার জন্য সেদেশে "চরমপন্থী শক্তিগুলিকে রাজনৈতিক স্থান দেওয়া হয়েছে।"

আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন, সংবাদ প্রতিদিন, হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা, উত্তরবঙ্গ সংবাদ, এইসময় অনলাইনের মতো সংবাদমাধ্যমগুলি অস্ট্রেলিয়া টুডের উপর নিষেধাজ্ঞার অভিযোগ করে ভুয়ো দাবিসহ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এছাড়াও, এই তালিকায় রয়েছে খবর অনলাইন এবং ওয়ানইন্ডিয়া বাংলাও।


ভুয়ো এই দাবিসহ প্রতিবেদন প্রকাশ করে মূলধারার অন্যান্য সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, টাইমস অফ ইন্ডিয়া, এনডিটিভি, ডেকান হেরাল্ড, হিন্দুস্তান টাইমস, মানি কন্ট্রোলও।

সংবাদমাধ্যমগুলি এক সংবাদ সম্মেলনে জয়সওয়ালের বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই খবর প্রকাশের সেই তালিকায় রয়েছে রিপাবলিক টিভি এবং টাইমস নাওদ্য হিন্দু এবং দ্য প্রিন্টের মতো আউটলেটগুলি পিটিআই ও এএনআইয়ের মতো সংবাদসংস্থার সিন্ডিকেটেড প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

ডানপন্থী ওয়েবসাইট অপইণ্ডিয়াও ভুয়ো এই দাবি করে।


মেলবোর্নের সংবাদ ওয়েবসাইট অস্ট্রেলিয়া টুডের সম্পাদক জিতার্থ জয় ভরদ্বাজ নিউজ ১৮ ও এএনআইয়ের মতো ভারতীয় সংবাদ সংস্থাগুলিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভুয়ো দাবিতে তাদের "লক্ষ্য" করা হচ্ছে বলে নিষেধাজ্ঞাটি "কানাডিয়ান সরকারের আদেশে" হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এই একই অভিযোগ তাদের এক্সে প্রকাশিত বিবৃতিতেও রয়েছে।

বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মীও কানাডা সরকারকে নিয়ে ভুয়ো দাবিটি শেয়ার করেছেন।

তথ্য যাচাই

বুম দেখে কানাডা সরকার দ্য অস্ট্রেলিয়া টুডের ওয়েবসাইট ও তাদের সোশ্যাল মিডিয়া পেজগুলি নিষিদ্ধ করেছে বলে যে দাবি করা হয়েছে - তা ভুয়ো।

কানাডা সরকারের অনলাইন নিউজ অ্যাক্ট ২০২৩ অনুসারে প্রভাবশালী প্ল্যাটফর্মগুলিকে খবর প্রকাশ করার জন্য সংবাদ প্রচারকারীদের  অর্থ প্রদান করতে হবে। এই অ্যাক্টের জন্য মেটা ও কানাডিয়ান সরকারের মধ্যে এক অচলাবস্থা তৈরি হয় যার ফলে মেটা কানাডায় তাদের প্ল্যাটফর্মগুলিতে সমস্ত স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলতঃ এরই কারণে অস্ট্রেলিয়া টুডে ফেসবুক পেজের পোস্টগুলি দৃশ্যমান নয়।

২০২৩ সালে পাস হওয়া কানাডার আইনটি মেটা, গুগলের মতো বড় তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থাগুলি তাদের প্ল্যাটফর্মে সংবাদ প্রকাশের জন্য সংবাদ প্রচারকারীদের অর্থ প্রদান করবে বলে নির্দিষ্ট করে। মেটা এই আইনের বিরোধিতা করে "কানাডিয়ানদের জন্য ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে সংবাদ পড়া নিষিদ্ধ করেছে"।

মেটার এই সিদ্ধান্তের অর্থ কানাডা বা বিশ্বের যে কোনও অংশের সংবাদ বর্তমানে কানাডার ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কাছে উপলব্ধ নয়।

আমরা প্রথমে এক্সে দ্য অস্ট্রেলিয়া টুডের বিবৃতিতে সংবাদমাধ্যমটির ম্যানেজিং এডিটর জিতার্থ জয় ভরদ্বাজের পোস্ট করা স্ক্রিনশটে লক্ষ্য করি সেটি কানাডায় দৃশ্যমান সংবাদ মাধ্যমটির ফেসবুক পেজের। স্ক্রিনশটের নীচে একটি আংশিক লাইন পড়া যায়-"কানাডার লোকেরা এই কন্টেন্ট দেখতে পারে না...”।

বুম দেখে ভরদ্বাজের শেয়ার করা এই স্ক্রিনশটে সম্পূর্ণ বাক্যটি ক্রপ করে কেবল প্রথম লাইনটি দেখানো হয়েছে ভুয়ো দাবিটি করার জন্য।

আমরা কানাডার এক বাসিন্দাকেও ওই ফেসবুক পেজ দেখতে বলি এবং লক্ষ্য করি সম্পূর্ণ নোটিশটিতে লেখা, "কানাডার লোকেরা এই বিষয়বস্তু দেখতে পারে না। কানাডিয়ান সরকারের আইনের প্রতিক্রিয়ায়, কানাডায় সংবাদ সংক্রান্ত বিষয়বস্তু দেখা যাবে না।"

নিচে দুটি স্ক্রিনশটের তুলনা দেখা যাবে যেখানে বাদ দেওয়া অংশ আলাদা করে তুলে ধরা হয়েছে।


আমরা এক কানাডিয়ান ফেসবুক ব্যবহারকারীর কাছে দৃশ্যমান “আরও জানুন” পেজে দেখি সেখানে কারণ হিসাবে জানানো হয়েছে, "কানাডার অনলাইন নিউজ অ্যাক্টের প্রতিক্রিয়ায়, কোনও নিউজ আউটলেটের সাথে সংযুক্ত পেজগুলির সংবাদ আর কানাডায় দেখা বা শেয়ার করা যাবে না।" দ্বিতীয় উপ-শিরোনামে— "আপনি যদি কানাডায় থাকেন তবে এর অর্থ"— বিশদভাবে বলা হয়েছে, "আপনি ফেসবুকে কোনও সংবাদ সংক্রান্ত লিংক বা বিষয়বস্তু শেয়ার করতে বা দেখতে পারবেন না, যার মধ্যে সংবাদ প্রতিবেদন এবং সংবাদ মাধ্যম দ্বারা পোস্ট করা অডিও-ভিডিও বিষয়বস্তু অন্তরভুক্ত। আপনি আর কোনও নিউজ আউটলেটের পেজ থেকে লিংক বা বিষয়বস্তু দেখতে পাবেন না, সেগুলি অনুসন্ধান বা অনুসরণ করা সত্ত্বেও।"


ক্রপ করা স্ক্রিনশটে বিজ্ঞপ্তির যে লাইনটি কানাডায় স্থানীয় আইনের প্রতিক্রিয়ায় ফেসবুকে নিউজ আউটলেটের পোস্টগুলি দৃশ্যমান না হওয়ার কারণের বিষয়ে মেটার নীতি পরিবর্তনটি ব্যাখ্যা করে - সেটি বাদ দেওয়া হয়েছে। উক্ত কারণ বিশদভাবে বর্ণনা করতে 'আরও জানুন' হাইপারলিংকটিও স্ক্রিনশটে ক্রপ করা হয়েছিল।

কানাডিয়ান অনলাইন নিউজ অ্যাক্টের অধীনে, কোনও সংবাদমাধ্যমের পোস্টই যে ফেসবুকে দেখা যাচ্ছে না তা নিশ্চিত করার জন্য, আমরা কানাডার এক বাসিন্দাকে স্থানীয় কানাডিয়ান সংবাদ পোর্টালের পেজগুলি দেখতে বলি। আমরা দেখি স্থানীয় কানাডিয়ান সংবাদমাধ্যমগুলির ফেসবুক পেজের পোস্ট লক্ষ্য করা যায় না এবং তাদের ক্ষেত্রেও উপরের মতো একই বিজ্ঞপ্তি রয়েছে।

টরন্টো সান, সিবিসি এবং টরন্টো স্টারের ফেসবুক পেজগুলির স্ক্রিনশট নীচে দেওয়া হল।


আমরা ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া এবং এনডিটিভির ফেসবুক পেজও অনুসন্ধান করে দেখি তাদেরও কোনও পোস্ট দৃশ্যমান নয়।

বুম একাধিক কানাডিয়ান ফেসবুক ব্যবহারকারীকে এই প্রতিবেদনটির জন্য অস্ট্রেলিয়া টুডের পেজ এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের পেজগুলি দেখতে অনুরোধ করে। তারা সকলেই নিশ্চিত করেন কোনও পেজের পোস্টই দৃশ্যমান নয়। কানাডার বাসিন্দারা আমাদের নিশ্চিত করেন অস্ট্রেলিয়া টুডের ওয়েবসাইটটি লোড হচ্ছে এবং সাইটের সমস্ত প্রতিবেদনও উপলব্ধ।

তারা বুমকে আরও জানায় দেশে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অনলাইন নিউজ অ্যাক্ট পাস হওয়ার পর থেকে সংবাদমাধ্যমের সোশ্যাল মিডিয়া পেজগুলির পোস্ট দেখা যায় না।

এছাড়াও, আমরা তাদের কানাডায় দৃশ্যমান বুমের ফেসবুক পেজের একটি স্ক্রিনশট পাঠাতে বলি এবং সেখানেও কোনও পোস্ট দৃশ্যমান নয় বলেই লক্ষ্য করা যায়।


বুম অস্ট্রেলিয়া টুডের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ভরদ্বাজের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি পুনরায় বলেন জয়শঙ্করের সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে পোস্ট করার পরই তাদের কানাডায় নিষিদ্ধ করা হয়।

“সব সরকারই কোনো না কোনও আইনের আওতায় ব্লক করে, আমাদের পেজের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। সরকার খবর দিয়ে লভ্যতা বন্ধ করে দেয় না... পাশ্চাত্য জগতে, আমি বোঝাতে চাইছি।" তিনি আরও বলেন কয়েকদিন আগেও পেজটি দৃশ্যমান ছিল এবং পোস্ট না দেখতে পাওয়ার বিষয়টি সাম্প্রতিক। "আমি অতীতে ফিরে গিয়ে আপনাকে সেই স্ক্রিনশট দেখাতে পারি না যেখানে আমাদের পেজের পোস্টগুলি কানাডায় দৃশ্যমান ছিল বলে দেখা যাবে।"


Tags:

Related Stories