সমুদ্র কলম বা সি পেনের (Sea Pen) পুরনো ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো দাবি সহ হিমাচল প্রদেশে প্রস্ফুটিত নাগপুস্প (Nagpuspa) ফুলের ছবি। সঙ্গে দাবি করা হচ্ছে এই ফুল নাকি ৩৬ বছরে একবার ফোটে বলে দাবি করা হচ্ছে।
ফেসবুক পোস্টে ভাইরাল হওয়া ছবিটিতে দেখা যায় সাপের ফনার মতো এক বাহারি বস্তু।
ফেসবুকে ছবিটি পোস্ট করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, 'এটি হিমাচল প্রদেশের নাগা পুশ ফুল যা 36 বছরে একবার ফুল ফোটে।'
ফেসবুক পোস্টটি দেখুন এখানে।
ফেসবুকে ইংরেজি ক্যাপশন সহ একই দাবিতে ছবিটি পোস্ট করা হয়েছে। (মূল ইংরেজিতে ক্যাপশন: This is naga push flower in Himachal Pradesh that flowers once in 36 years)
এরকম দুটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে ও এখানে।
২০১৭ সালের মে মাসে মধু পূর্ণিমা কিশওয়ার একই দাবি সহ হোয়াটসঅ্যাপে পাওয়া ছবি বলে টুইট করে জানতে চান ছবিটি ফোটোশপ করা নাকি সত্যি।
টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের মধু সংগ্রাহকের ভিডিও ভারতে মিথ্যে দাবি সহ ভাইরাল হল
তথ্য যাচাই
বুম ছবিটি রিভার্স সার্চ করে দেখে ভাইরাল ছবিটি হিমালয়ের কোনও ফুল নাগপুষ্প নয়। ছবিটি আসলে একটি অমেরুদন্ডী প্রাণী সি পেন বা সমুদ্র কলমের।
মার্কিন তথ্য-যাচাই সংস্থা স্ন্যপস একই ছবি ২০১৬ সালে তথ্য-যাচাই করেছিল। ২০১৩ সালে ছবিটি তোলেন গর্ডন জে. বউব্রিক (Gordon J. Bowbrick )। ফোটোনেট ওয়েবাসাইটে মূল ছবিটি সি ফেদার নামেই রয়েছে। পুরনো দিনের পালক কলমের মত দেখতে বলে এর আরেক নাম 'ফেদারি সি পেন'। ফোটোনেট ওয়েবসাইটে আর্কাইভ করা ছবিটি দেখুন এখানে।
ব্রিটানিকার তথ্য অনুযায়ী সি পেন আসলে পেনুলাটাসিয়া (Pennatulacea) বর্গের সামুদ্রিক অমেরুদন্ডী প্রাণী। সমুদ্র কলমের প্রায় ৩০০ রকমের প্রজাতি রয়েছে। সব সমুদ্র কলম অবশ্য দেখতে পালক কলমের মত আদৌ নয়।
নিচে দেখুন সমুদ্র কলম সম্পর্কে বিবিসি আর্থের ২০১০ সালের ভিডিও।
নাগকেশর ফুল কি?
নাগপুষ্প (বাংলায় নাগকেশর) গাছের বৈজ্ঞানিক নাম মেসুয়া ফেরিরা (Mesua ferrea)। নাগকেশরের ফুল ফোটে ৩৬ বছরে একবার এই দাবি সত্যি নয়। ভারত সরকারের গাছ ও দূষণ সংক্রান্ত পরিবেশ তথ্য ব্যবস্থাপনার ওয়েবসাইট অনুযায়ী, বর্ষাকালে উভলিঙ্গ ফুল ফুটতে শুরু করে নাগকেশরের। একদিনের জন্য ফুল ফোটে। ভোর ৩-৪ টের সময় ফুল ফোটে আর সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে নেতিয়ে যায়।
নাগকেশর ফুলের ছবি দেখুন এখানে।
আরও পড়ুন: ইডির নয়া সমনে সোনিয়া গাঁধীর প্রতিক্রিয়া দাবিতে ছড়াল ২০১৫ সালের ভিডিও