পাকিস্তানে (Pakistan) শুল্ক (Customs) বিভাগের আধিকারিকদের বাজেয়াপ্ত-করা সেলফোন (cellphone) ভেঙে (Destroying) ফেলতে দেখা যাচ্ছে। সেই ভিডিও, এই মিথ্যে দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে যে, ধর্মীয় কারণে আফগানিস্তানে (Afghanistan) সেল ফোনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
গত বছর অগস্ট মাসে, আফগানিস্তানে তালিবান ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে, সে দেশে অর্থনৈতিক সঙ্কট আরও ঘনীভূত হয়েছে। ভিডিওটি সেই পরিপ্রেক্ষিতেই শেয়ার করা হচ্ছে।
২২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে উর্দি-পরা আধিকারিকদের দেখা যাচ্ছে। তাঁদের কয়েক জনের কাছে বন্দুকও আছে। একটি খোলা জায়গায় ফেলে রাখা সেল ফোনগুলিকে তাঁরা মাড়িয়ে দিচ্ছেন কিম্বা সেগুলিকে লাথি মেরে সরিয়ে দিচ্ছেন।
ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, "আফগানিস্তানে এখন সেলফোন নিষিদ্ধ হয়েছে। সেগুলিকে শয়তানের চোখ মনে করা হয়।"
একই দাবি সমেত ভিডিওটি টুইটারেও শেয়ার করা হচ্ছে।
ভিডিওটির আর্কাইভ করা আছে এখানে।
আরও পড়ুন: পাহাড়ি খাদের কিনারাতে বিপজ্জনক গাড়ি ঘোরানোর ভিডিওটি বাস্তবিক কি?
তথ্য যাচাই
ভিডিওটি খুব খুঁটিয়ে দেখলে নজরে আসে যে, আধিকারিকদের উর্দিতে পাকিস্তানের ইসলামি রাষ্ট্রের পতাকা রয়েছে ও সেই সঙ্গে রয়েছে পাকিস্তানের শুল্ক বিভাগের চিহ্ন।
ভিডিওটির ১৪ সেকেন্ডের মাথায়, আমরা পাকিস্তানের পতাকাও দেখতে পাই তাঁদের উর্দিতে। ওই সূত্র ধরে আমরা নিশ্চিত হই যে ভিডিওটি পাকিস্তানের।
আমরা ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ আপলোড-করা একটি ভিডিও দেখতে পাই। সেটির ক্যাপশনে লেখা ছিল, "পাকিস্তানের শুল্ক বিভাগের ধ্বংস উৎসব। কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স।" ১:১৩ সময়চিহ্ন থেকে একই ধরনের আধিকারিকদের সেল ফোন ও মদের বোতল নষ্ট করে ফেলতে দেখা যায় তাতে।
ভাইরাল ভিডিওতে আমরা যে উর্দি দেখতে পাই, সেটির সঙ্গে অন্য একটি ভিডিওতে একজন আধিকারিকের উর্দি মিলিয়ে দেখি। উনি 'পাকিস্তান কাস্টমস ডেস্ট্রাকশন সেরিমনি' বা পাকিস্তান কাস্টমস-এর ভাঙ্গার উৎসবে ভাষণ দিচ্ছিলেন। 'ডেইলি সিটি নিউজ করাচি'-তে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ওই একই আধিকারিকদের দেখা যায়।
৩০ ডিসেম্বর ২০২১ , পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যম 'দ্য নিউজ' তাদের প্রতিবেদনে লেখে, করাচির কালেক্টরেট অফ কাস্টমস (এনফোর্সমেন্ট) ২৯ ডিসেম্বর, চোরাই পথে আনা বেআইনি সামগ্রী ভেঙ্গে ফেলার এক উৎসবের আয়োজন করেন। সেই সব জিনিসের মধ্যে ছিল কয়েক কোটি টাকার মাদক দ্রব্য, মদ, গুটকা, ওষুধ ও সুপারি।
শুল্ক দফতরের কালেক্টর ফিরোজ আলম জুনেজো জানান যে, করোনাভাইরাস অতিমারির কারণে, দু'বছর পর আবার চোরাই ও বেআইনি জিনিস ভাঙ্গার আয়োজন করে হয়। যদিও প্রতি ছ' মাস এই কাজ করার কথা। এ খবর প্রকাশ করে 'দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন'। ওই ঘটনার প্রতিবেদনটি দেখা যাবে এখানে। সেটির ১.৫০ সময় থেকে ফিরোজ আলম জুনেজোকে কথা বলতে দেখা যায়।
পাকিস্তানের শুল্ক বিভাগের ওই অনুষ্ঠান সম্পর্কে 'ভাইস' ও 'ভয়েস অফ আমেরিকা'-তে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বিভ্রান্তিকর দাবিতে ছড়াল মাস্ক পরিহিত রাহুল গাঁধীর ছবি