প্লাস্টিক আবর্জনায় (plastic garbage) বুজে গিয়ে গতি হারানো একটি নদীর ছবি সোশাল মিডিয়ায় এই বলে ভাইরাল হয়েছে যে, এটি মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) মিঠি নদীর (Mithi River) বর্তমান দুর্দশার চিত্র।
বুম দেখে প্লাস্টিক জঞ্জালে বুজে যাওয়া নদীর ছবিটি ফিলিপিন্সের (Philippines) মানিলার, সোশাল মিডিয়ায় ভুল করে মহারাষ্ট্রের বলে দাবি করা হয়েছে।
মুম্বই মিরর পত্রিকা জানাচ্ছে, বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন গত ২০২০ সালের ডিসেম্বরে মিঠি নদীর পূর্ব-পশ্চিম তীরের সংযোগকারী একটি সেতু বানিয়ে যাতায়াতের জন্য খুলে দিয়েছে, আগেকার সেতুটি ভেঙে ফেলে।
এদিকে ভাইরাল পোস্টটিতে একসঙ্গে দুটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে, যার একটি আহমেদাবাদের সাবরমতী নদীর, অন্যটি জঞ্জালে বুজে যাওয়া মিঠি নদীর।
ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্য প্রীতি গাঁধী (Priti Gandhi) এই ছবি দুটি পোস্ট করে ক্যাপশন দিয়েছেন: "চিত্র ১, যেখানে গুজরাটের আহমেদাবাদে ১৪০০ কোটি টাকার তহবিল খরচ করে সবরমতী নদীর সংস্কার করা হয়েছে । চিত্র ২, যেখানে মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে বিএমসি এবং এমএমআরডি-র ১০০০ কোটি টাকারও বেশি তহবিল ব্যয় করে মিঠি নদীর এই দুর্গতি বহাল রাখা হয়েছেl দুটি শহরের গল্প—মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায় l"
টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
একই ভুয়ো দাবি সহ একই দুটি ছবি ফেসবুকেও শেয়ার করা হচ্ছে। পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম ছবিগুলি যাচাই করতে গিয়ে দেখেছে, নরওয়ের কূটনীতিক এরিক সোলহেইম ২০১৯ সালে তাঁর একটি টুইটে আবর্জনায় বুজে যাওয়া নদীর ছবিদুটি ব্যবহার করেছিলেন বিবিসি-র একটি প্রতিবেদন শেয়ার করার সময়।
পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখতে নতুন ডিজিটাল পেমেন্ট কীভাবে সাহায্য করে, তা শেয়ার করতে গিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনটিতে ওই ছবিই ব্যবহার করে লেখা হয়, বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীগুলিই প্লাস্টিক জঞ্জালের দূষণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ছবির কৃতিত্ব দেওয়া হয় গেট্টি ইমেজেস-কে।
লোনলি প্ল্যানেট পত্রিকাতেও আমরা এই ছবিটি দেখতে পাই, যেখানে একটি প্রতিবেদনের সঙ্গে চালু আলোকচিত্র হিসাবে এটি প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেও ছবির ক্যাপশনে স্পষ্ট লেখা রয়েছে: "ফিলিপিন্সের একটি বুজে যাওয়া নদীর উপর গজিয়ে ওঠা বস্তি।"
খোঁজখবর করে আমরা চালু ছবির ওয়েবসাইট শাটারস্টক-এ এরকমই একটি ছবির দেখা পাই। তার ক্যাপশনে লেখা, "২০০৮ সালের ৬ জানুয়ারি ফিলিপিন্সের রাজধানী ম্যানিলায় জঞ্জালে বুজে যাওয়া নদীর জলস্রোত। দারিদ্র এবং জঞ্জাল অপসারণ ফিলিপিন্সের একটা গুরুতর সমস্যা।"