সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে এক যুবককে এক মহিলার স্কুটার (Scooter) মেরামত করার নাম করে চুরি (stealing) করে পালাতে দেখা যায়। ভিডিওটি শেয়ার করে ভুয়ো (communal claims) দাবি করা হয়েছে, স্কুটার-চোর মুসলিম (Muslim) ধর্মাবলম্বী।
বুম দেখে যাচাই করে দেখে এই দাবিটি ভুয়ো। ভিডিওতে যে বিষয়টি দেখানো হয়েছে, সেটি কোনও বাস্তব ঘটনাও নয়, বরং আগে থেকে তৈরি একটি চিত্রনাট্য অনুযায়ী অভিনয়।
সঞ্জনা গলরানি নামে জনৈকের ফেসবুক পেজ-এ ভিডিওটি আপলোড করা হয়েছে, যিনি এই ধরনের অনেক ভিডিওই পোস্ট করে সেগুলো 'শিক্ষামূলক ব্যবহারের জন্য' বলে দাবি করে থাকেনl তবে এই ধরনের দাবি সত্ত্বেও সঞ্জনার পোস্ট করা সচেতনতা বাড়ানোর ভিডিওগুলি অতীতেও সাম্প্রদায়িক রঙ চড়িয়ে ভাইরাল করা হয়েছে।
২ মিনিট ২০ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি এমন ভাবে তোলা হয়েছে, যেন এটি একটি সিসিটিভি দৃশ্য। দেখানো হয়েছে, এক যুবক এক মহিলার অন্যমনস্কতার সুযোগ নিয়ে তাঁর স্কুটারের ধোঁয়া পাইপ বন্ধ করে দেয়। পরে যখন মহিলা তাঁর স্কুটার চালু করতে অসুবিধার সম্মুখীন হয়, তখন সে মহিলাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। আর ওই মহিলা যখন ফোনে কারও সঙ্গে কথা বলতে ব্যস্ত, তখন সে ধোঁয়া পাইপের ছিদ্র উন্মুক্ত করে স্কুটারটি নিয়ে চম্পট দেয়।
ভিডিওটি টুইটারে পোস্ট করে হিন্দিতে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, "দেখুন কী ভাবে এক মহিলার অ্যাক্টিভা স্কুটার চুরি করে এক মুসলিম যুবক পালিয়ে যাচ্ছে!"
(মূল হিন্দিতে ক্যাপশন: देखिए मुल्ले का एक लड़का कैसे एक लड़की की एक्टिवा को उड़ा कर ले गया। CCTV कैमरे में हुआ कैद।)
অনেক টুইটার ব্যবহারকারী একই ভুয়ো ক্যাপশন সহ ভিডিওটি টুইট করেছে।
এরকম একটি টুইট আর্কাইভ করা আছে এখানে।
আরও পড়ুন: ষড়যন্ত্র তত্ত্ব: 'প্ল্যানডেমিক' নেপথ্যে ডাঃ অ্যান্থনি ফাউসি, মাস্ক বিরোধী ভিডিও
তথ্য যাচাই
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির মধ্যে থেকেই তথ্য যাচাইয়ের সূত্র খুঁজে পাওয়া যায়। ২ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের মাথায় ভিডিওটিতে জানানো হচ্ছে—"এটি দেখার জন্য ধন্যবাদ! অনুগ্রহ করে জানুন, এই ভিডিওগুলি কেবল, সচেতনতা বৃদ্ধি করার শিক্ষামূলক তাগিদ থেকে তৈরি করা কিংবা ব্যঙ্গাত্মক অনুকরণ হিসাবে।"
বুম দেখে এই ভিডিওটির ধরণ, তৈরি করার পদ্ধতি, এর আগে তৈরি হওয়া অনুরূপ ভিডিওগুলির মতোই। এরকম অনেক ভিডিও সঞ্জনা গলরানির ফেসবুক পেজ-এ পোস্ট হয়েছে। ভাইরাল হওয়া এই ধরনের দুটি ভুয়ো দাবির তথ্য-যাচাই আপনারা দেখে নিতে পারেন এখানে এবং এখানে।
গলরানির ফেসবুক পেজ-এ পোস্ট হওয়া ভিডিওগুলি ঘাঁটতে-ঘাঁটতেই আমরা এই ভাইরাল ভিডিওটি পোস্ট হতে দেখি ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর। ভিডিওটির ক্যাপশনে স্পষ্ট উল্লেখ ছিল যে এটি পরিকল্পিত চিত্রনাট্যের রূপায়ন। লেখা ছিল—"ভিডিওটি দেখার জন্য ধন্যবাদ! মনে রাখবেন, এটি কেবল শিক্ষামূলক একটি অনুশীলন কিংবা ব্যঙ্গাত্মক অনুকরণ, কোনও বাস্তব ঘটনার চলচ্ছবি নয়"l