সোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো দাবি নিয়ে একটি ভিডিও ঘুরছে, যাতে এক ব্যক্তিকে তার জন্মদিন উদযাপনের সময় মজা করে বন্ধুদের ঘুষি-লাথি খাওয়ার সময়েই পড়ে যেতে দেখা যাচ্ছে, সেটি আসলে ফেসবুক পেজ-এ তৈরি একটি সাজানো দৃশ্য, যেটিকে সত্যিকারের সিসিটিভি দৃশ্য (CCTV Footage) বলে চালানো হচ্ছে।
বুম দেখে ভিডিওটি এমন ভাবে সম্পাদনা করা হয়েছে, যাতে ঘটনাটিকে বাস্তবের দৃশ্য বলে বিভ্রম হয়।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এক দল যুবক রাস্তায় হুল্লোড় করে একজনের জন্মদিনের উত্সব করছে। এক যুবককে দেখা যচ্ছে, জন্মদিনের কেক কাটার পরেই বন্ধুরা যেন মজা করেই তাকে চড়-ঘুষি-লাথি কষাচ্ছে, যার কিছু ক্ষণের মধ্যেই সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে। ৩ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে, "আজকের যুগে জন্মদিন পালনের এই রীতি ও পদ্ধতি প্রিয় বন্ধুর জীবন হানির আশঙ্কাকেই ডেকে আনছে। আনন্দের অবকাশ আনন্দের সঙ্গেই উদযাপিত হওয়া উচিত।"
ওই একই ভিডিও মারাঠি টিভি ৯ চ্যানেলে দেখিয়ে বলা হয়েছে, এটি ক্রমশ ভাইরাল হচ্ছে। কিন্তু এটি যে একটি সাজানো দৃশ্যের নাট্যরূপ, সে কথা জানানো হয়নি। মারাঠি থেকে প্রতিবেদনটির শিরোনামের অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, "ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, ভিডিওটি যেন ভুয়ো হয়! জন্মদিনের উৎসব পালন করতে গিয়ে বেচারা মরে গেল!"
প্রতিবেদনটির আর্কাইভ করা আছে এখানে।
ফেসবুকেও ভাইরাল
এই একই ভিডিও ফেসবুকেও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।
বুম তার হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইন নম্বরেও (+৯১৭৭০০৯০৬১১১) সত্যতা যাচাইয়ের অনুরোধ সহ ভিডিওটি পেয়েছে।
তথ্য যাচাই
ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলির মধ্যে কোনও একটিতে ইঙ্গিত ছিল, মূল ভিডিওটি হামসা নন্দিনি (Hamsa Nandini) নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারীর যাচাই-করা ফেসবুক পেজে দেখতে পাওয়া গেছে।
হামসা নন্দিনি-র পেজটির ২৯ লক্ষ অনুসরণকারী রয়েছে এবং অতীতেও বেশ কয়েকটি সিসিটিভি দৃশ্যের মতো করে সাজানো তৈরি ভিডিও সেখান থেকে ছাড়া হয়েছে।
মূল ভিডিওটি ২০২০ সালের ২ মার্চ আপলোড করে লেখা হয়েছিল— "এ ভাবে আনন্দ উদযাপন কোরো না। ভিডিওটি দেখার জন্য ধন্যবাদ। মনে রাখবে, এই পেজটিতে ঘটনার নাট্যরূপ ছবি তুলে দেখানো হয়, যার উদ্দেশ্য মানুষের চেতনা বৃদ্ধি করা।"
পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
ভিডিওটির শেষে একটি বার্তাও আমাদের নজরে পড়েছে, "কাউকে অন্ধভাবে বিশ্বাস কোরো না। ছবিটি দেখার জন্য ধন্যবাদ! মনে রেখো, এই পেজটিতে কেবল ঘটনার নাট্যায়িত রূপ দেখানো হয়, অনক সময় কৌতুকও। এগুলি তৈরির উদ্দেশ্য মানুষকে সচেতন করা।"
৩ মিনিট ১২ সেকেন্ডের মাথায় বার্তাটি ভেসে ওঠে।
তবে ভিডিওটি এই পেজ থেকেই তৈরি করা হয়েছিল কিনা, সেটা স্পষ্ট নয়।
অবশ্য এই ফেসবুক পেজটি এর আগেও বেশ কিছু নাট্যায়িত ভিডিও সিসিটিভি ফুটেজের মতো বাস্তব ঘটনার বিবরণ বলে তৈরি করে ছড়িয়েছে, যার কিছু-কিছু বুম ইতিপূর্বে পর্দাফাঁসও করেছে।
আরও পড়ুন: এক মহিলার অপহৃত হওয়ার নাটকীয় দৃশ্যের ভিডিও সত্য ঘটনা বলে প্রচার