Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available

Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available
ফ্যাক্ট চেক

টাটা মেমোরিয়ালের ১০০ টাকার ওষুধের ক্যান্সার নিরাময় করার দাবি ভুল

বুম ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে যে গবেষণাটি এখনও অবধি মানুষের উপর পরীক্ষা না হওয়ায় অসম্পূর্ণ।

By - Nidhi Jacob | 10 March 2024 6:08 PM IST

টাটা মেমোরিয়াল সেন্টারের (Tata Memorial Centre) ক্যান্সার গবেষকরা সম্প্রতি ১০০ টাকা মূল্যের একটি ক্যান্সারের ওষুধ আবিষ্কার করার ঘোষণা করেছে যা সম্ভবতঃ পুনরায় ক্যান্সার (Cancer) সংক্রমণ রোধ করতে পারবে। ফলে সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ওয়েবসাইট বিভ্রান্তিকর শিরোনাম দিয়ে দাবি করে যে টাটা মেমরিয়াল ১০০ টাকা মূল্যের ক্যান্সার নিরামক বড়ি আবিষ্কার করেছে। 

সংবাদমাধ্যম ওয়েবসাইটগুলির মধ্যে এনডিটিভি ও জি নিউজ প্রথম এই ঘোষণাটি করে।

বুম তার হেল্পলাইন নম্বরেও বাংলাতে একই দাবিসমেত বার্তাটি পায়।

সংবাদ প্রতিবেদনগুলি অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির গবেষক ও চিকিৎসাবিদেরা এক দশক ধরে এমন এক ওষুধ বানানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে যা রোগীদের মধ্যে পুনরায় ক্যান্সার সংক্রমণ রোধ করতে পারবে। এনডিটিভির সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে ডাঃ রাজেন্দ্র বাড়য়ে, টাটা মেমোরিয়াল সেন্টারের অধিকর্তা, জানান যে বড়িটি সম্ভবতঃ ভারতীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রকের থেকে এই বছর জুন ও জুলাই মাসের মধ্যেই অনুমোদন পেয়ে যাবে। এই ওষুধটির লক্ষ্য ক্যান্সার চিকিৎসার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কমানো। ডাক্তারবাবু জানান, অনুমোদন হয়ে যাওয়ার পর এই ওষুধটি বিভিন্ন ধরণের চিকিৎসার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কমাতে পারে যেমন কেমোথেরাপি ৫০% এবং ক্যান্সার পুনরায় হওয়ার সম্ভাবনা ৩০% কমাতে পারে।

যদিও এটি ক্যান্সার চিকিৎসার গবেষক ও জীবনযোদ্ধাদের জন্য এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ, তবে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা বুমকে সাবধান করে জানান বর্তমান গবেষণার থেকে নির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্তে আসা যায় না কারণ মানুষের মধ্যে পরীক্ষা এখনও অপর্যাপ্ত রয়েছে। 

বাংলা ক্যাপশন সহ এই একই দাবি ভাইরাল হয় ফেসবুকেও।


পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।  

কেন এই দাবিগুলি বিভ্রান্তিকর?

বুম ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে যে গবেষণাটি এখনও অসম্পূর্ণ রয়েছে কারণ মানুষের মধ্যে পরীক্ষা এখনও অপর্যাপ্ত। তারা জানায় কেবলমাত্র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে এবং চূড়ান্ত পেপারটি এখনও প্রকাশিত না হওয়ায় বর্তমান আবিষ্কারটি এখনও হাইপোথিসিস বলে গণ্য করা হচ্ছে।

“এখনই এটিকে ক্যান্সার নিরাময় অথবা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কমাতে কার্যকরী বলা যায় না, এর ঔষধিক গুণ এখনও বিতর্কের বিষয়। এটির ভূমিকা প্রমাণ করার জন্য মানুষের মধ্যে কোনও পরীক্ষাই হয়নি,” বুমকে বলেন ডাঃ জগদীশ্বর গজগওনি, সিনিয়র কনসালট্যান্ট, অ্যাপোলো ক্যান্সার সেন্টার সার্জিক্যাল অনকোলজি, হায়দরাবাদ।

উপরন্ত, দুটি গবেষণা করা হয়েছে — একটি ইঁদুর এবং একটি মানুষ নিয়ে। কিন্তু, অনেক সংবাদ প্রতিবেদনই কেবল প্রাণীবিষয়ক গবেষণাটির উপরই প্রাধান্য দিয়েছে।

“প্রতি ৪-৬ সপ্তাহ অন্তর, ক্যান্সার চিকিৎসা নিয়ে কোনও না কোনও চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে,” বুমকে বলেন ডাঃ বিনীত গোবিন্দ গুপ্ত, অনকোলজিস্ট, সিনিয়র কনসালট্যান্ট এবং ইউনিট হেড, ফরটিস হাসপাতাল, দিল্লি। তিনি বলেন, “ক্যান্সার চিকিৎসার কোনো আশাব্যাঞ্জক উন্নতির জন্য মরিয়া থাকায় ক্ষুদ্র কোন অগ্রগতিও সংবাদমাধ্যম দ্বারা গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করা হয়।”

উপরন্তু, গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি নিজেই একটি বিবৃতি প্রকাশ করে আরও বড়ো নমুনার মধ্যে মানুষের উপর অতিরিক্ত পরীক্ষা করার প্রয়োজনীয়তার গুরুত্ব জানায়। তারা জানায়, “ওষুধটির কার্যকারিতা এখনও প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। “মানুষের উপর আরও বড় নমুনার মধ্যে অতিরিক্ত পরীক্ষা জরুরী এবং এই গবেষণার আবিষ্কার মানুষের উপর কার্যকারী কিনা তা জানতে পরীক্ষা চলছে।”

তারা এও জানায় যে এই ওষুধটি “প্রমাণিত ক্যান্সার চিকিৎসা যেমন সার্জারি, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি এবং টার্গেটেড থেরাপি, যেগুলি থেকে প্রমাণিতভাবে অনেক রোগীদের মধ্যে উপকার এবং ফল পাওয়া গেছে, তার বিকল্প নয়।”

আবিষ্কারগুলি কি কি এবং কীভাবে বড়িগুলি কাজ করে?

টাটা ইনস্টিটিউটের গবেষকরা দুই ধরনের গবেষণা করেছেন। প্রথম গবেষণায় শুধুমাত্র ইঁদুর জড়িত ছিল। কেমোথেরাপি এবং ইমিউনোথেরাপির মতো চিকিৎসার কারণে যখন ক্যান্সার কোষগুলি কোনো রোগীর দেহের মধ্যে মারা যায়, তখন তারা ডিএনএর টুকরো মুক্ত করে, যা কোষ-মুক্ত ক্রোমাটিন কণা নামে পরিচিত, উভয় ডাক্তার ব্যাখ্যা করেছেন।

এগুলি মৃতপ্রায় ক্যান্সার কোষ থেকে নিঃসৃত ক্ষুদ্র কণা এবং রক্তের প্রবাহের মধ্য দিয়ে চলাচল করার ক্ষমতা রাখে এবং সম্ভবতঃ স্বাস্থ্যকর কোষগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার ক্ষমতা রাখে, যা থেকে সম্ভাব্যভাবে পুনরায় সংক্রমণের হতে পারে। গবেষকরা তদন্ত করে দেখেন যে এই ডিএনএ খণ্ডের মুক্তি কমানো যেতে পারে কিনা।

এটি সম্পন্ন করার জন্য, গবেষকরা দুটি রাসায়নিক ব্যবহার করেছেন: আঙ্গুরের রসের নির্যাস থেকে প্রাপ্ত রেসভেরাট্রল এবং তামা (R+Cu), যা ১০০ টাকা মূল্যের ওই ওষুধের প্রাথমিক উপাদান। যখন R এবং Cu নামক দুটি পদার্থের সংমিশ্রণ খাওয়া হয়, তখন তারা শরীরে অক্সিজেন র‍্যাডিকাল তৈরি করে। এই অক্সিজেন র‍্যাডিকালগুলি দেহের কোষ-মুক্ত ক্রোমাটিন কণাগুলিকে কমায়, সম্ভাব্যভাবে অন্যান্য অঙ্গে এর বিস্তার কমায়, ব্যাখ্যা করেন ডাঃ গজগওনি।

ডাঃ গুপ্তর মতে, দ্বিতীয় গবেষণাটি মানুষের উপর করা হয়েছিল কিন্তু ক্যান্সার প্রতিরোধে ওষুধটির ভূমিকা একেবারেই দেখা যায়নি। দ্বিতীয় গবেষণাটির উদ্দেশ্য ছিল ওষুধটি কেমোথেরাপির কারণে হওয়া পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাতে পারে কিনা পরীক্ষা করা। কেমোথেরাপি বা অস্থি-মজ্জা প্রতিস্থাপন করা রোগীদের মুখ ও গলায় ফোস্কা, এই দুই চিকিৎসার সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি মূল্যায়ন করতে রেসভেরাট্রল এবং তামার সংমিশ্রণ দেওয়া হয়েছিল। যদিও গবেষণায় মুখ এবং গলায় হওয়া ফোস্কা কমতে দেখা যায়, ডাঃ গুপ্ত চিকিৎসার কার্যকারিতা অনুমান করার আগে অতিরিক্ত মানব পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে সতর্ক করেছেন।

অপূর্ণতা

একটি ওষুধের কার্যকারিতা শুধুমাত্র ইঁদুরের উপর পরিচালিত গবেষণার উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা যায় না, কারণ ইঁদুর এবং মানুষের মধ্যে শারীরিক পার্থক্যগুলি উল্লেখযোগ্য। ইঁদুরের গবেষণাগুলি হাইপোথিসিস হিসাবে গণ্য করা হয়ছে এবং ফলাফলগুলি মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নাও হতে পারে। ডাঃ গুপ্ত ব্যাখ্যা করেছেন যে ইঁদুরের মধ্যে কার্যকারিতা দেখানো ১০০টি ওষুধের মধ্যে, কেবল একটি ভগ্নাংশ মাত্রই মানুষের মধ্যে কার্যকর প্রমাণিত হতে পারে।

তিনি আরও জানান, এই ওষুধটির প্রধান প্রক্রিয়া হল জারণ, যার অর্থ এটি সঞ্চালনশীল ক্রোমাটিনকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য প্রতিক্রিয়াশীল অক্সিজেন প্রজাতি তৈরি করে। এই ক্ষতি স্বাধীন র‍্যাডিকালগুলিকে আঘাত করে। আঘাতগুলি অন্যান্য অঙ্গের সম্ভাব্য ক্ষতি, অকাল বার্ধক্য এবং সেকেন্ডারি ক্যান্সারের কারণ হিসাবেও পরিচিত। তাই, এই ওষুধটি নিরাপদ কিনা তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, যেকোনও গবেষণা যা দীর্ঘমেয়াদি ক্যান্সারের বৃদ্ধি দাবি করে এমন যেকোনও গবেষণাকে অবশ্যই শক্তিশালী তথ্য দ্বারা সমর্থিত হওয়া প্রয়োজন এবং ২-৩ বছর ধরে ফলো-আপ করে নিশ্চিত করতে হবে যাতে পুনরায় সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়। "এই গবেষণাটি শুধুমাত্র প্রথম পর্যায়ের গবেষণার ফলাফল, এবং আরও পরীক্ষা প্রয়োজন। এই ওষুধটি নিরাপদে এবং কার্যকরভাবে বর্ধিত সময়ের মধ্যে মানুষের মধ্যে ক্যান্সারের পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধ করে কিনা তা মূল্যায়ন করার জন্য দীর্ঘমেয়াদী পর্যবেক্ষণ অপরিহার্য," সর্বশেষে জানান ডাঃ গুপ্তা ।

Tags:

Related Stories